আমজনতার মঞ্চ
১
ফাঁসি নিশ্চিত করতেই সফল বাতিল? যে ব্যক্তি নাকি হাগতে-মুততে বিদেশ যাবার সুযোগে খুঁজে, আর যাই হোক, কারণ ছাড়া ফ্রান্স সফর বাতিল করেছে বিশ্বাস করি না। করতেও চাই না। চারিদিকেই রাবণের চিতা, কবর, ফাঁসির শ্লোগান, ফাঁসির দড়ি, ফাঁসির মঞ্চ, মেইড ইন ভারত জাহাজ, সচিবালয়ে ভারতের রাষ্ট্রদূত... বছর জুড়ে ঠান্ডা মাথায় খুনের উৎসব দেখতে চাইলে বাংলাদেশে আসুন। এখানে লেগে থাকে পাইকারি খুনের উৎসব, আসবেন, দেখবেন, ফাঁসির মাংসের কাবাব খাবেন, আনন্দ করবেন।
মৃত্যুদন্ডের প্রতি আওয়ামী নেত্রীর তীব্র উম্মাদনাকে একমাত্র ঐশীদের ড্রাগ উম্মাদনার সঙ্গে তুলনা করা যায়। ড্রাগে উত্তেজিত ঐশী যেমন, বাবা-মায়ের রক্ত নিজের হাতে মাখতে গর্ভধারিণীর বুকে চাকু চালিয়েছিলো, মাথায় সমান উত্তেজনাসহ আওয়ামী নেত্রীও গোটা দেশটাকে করে ফেলেছে মৃত্যু কারাগার। সকালে বিকালে মৃত্যু ছাড়া কথা নেই। র্যা বের হাতে মৃত্যু। পুলিশের হাতে বিরোধীদলের নেতাকর্মী খুন। কারাগারে আসামীর মৃত্যু। রাস্তায় পড়ে থাকা লাশ এবং বিরোধীদল হলেই বিচাপতিদের ফাঁসির রায় অবশ্যই নিময়। ফাঁসি, ফাঁসি আর ফাঁসির জাতি এখন ফাঁসির নদীতে ডুবে মরছে। ফাঁসির আতশবাজিতে বিষাক্ত বাংলার আকাশ-বাতাস এখন কালো।
পাগলা গারদ ভেঙ্গে পালিয়ে যাওয়া রোগিদের মতো রাস্তায় ছুটছে আওয়ামী চেতনাবাদিরা। আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সকলেরই একহাতে হাসিনা পতাকা, অন্য হাতে ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই। এ যেন প্রাগৈতিহাসিক কোন দেশ যেখানে প্রতিটি ইঞ্চিতেই অন্ধকার আর অন্ধকার। এখানে এখন আর কোন আলো নেই, বাতাস নেই, বোধ-বিবেক শূন্য এবং অমনুষ্যত্বের মহামারিতে আক্রান্ত এক অদ্ভুত প্রাগৈতিহাসিক বন্য প্রাণী। এই জাতি তিনবেলাই পানির বদলে রক্তপানে অভ্যস্ত ড্রাকুলা। ভাতের সঙ্গে গরুর বদলে মানুষের মাংসের প্রতি তীব্র আসক্তি। রক্ত না খেলে মাথা বিগড়ে যায়। রক্ত খাওয়ার জন্য পাগল হয়ে গেছে মন্ত্রীরা। কেউ বলছে ৭ দিনের আগেই ফাঁসি, কেউ চাইছে শনিবারের পরেই, কারো বক্তব্য পূর্ণাঙ্গ রায়ের প্রয়োজন নেই, যেন এই মুহূর্তেই ফাঁসি দিলে, কারো গর্ভের সন্তান অকালেই ভূমিষ্ঠ হয়ে যাবে। যেন কারো মাথা বিস্ফোরণ হয়ে মারা যাবে। যেন কারো বীর্যপাত আটকে যাবে।
আমার কথা, যে দেশে বাকশালী স্টেট আছে সেই দেশে ইসলামিক স্টেট প্রয়োজন আছে? এই স্টেন ইসলামিক স্টেটের চেয়েও ভয়ংকর। ইসলামিক স্টেট লুকিয়ে মানুষ খুন করে, আওয়ামী লীগ বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানুষ খুন করে। ইসলামিক স্টেট পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, আওয়ামী লীগ যুদ্ধ ঘোষণা করেছে তাদের বিরুদ্ধে যারা ভারতের উপনিবেশ হতে চায় না। যারা সিকিম কিংবা ভূটান হতে চায় না।
হাসিনাকে সৃষ্টি করেছে দিল্লি, হাসিনাকে লালন্তপালন করছে দিল্লি। এই দেশের জল, নৌপথ এবং সেনাবাহিনীসহ প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ভারতীয়দের রাজত্ব। প্রেক্ষাগৃহগুলো দখলের চুক্তি প্রায় শেষ। এই দেশের বাজার জুড়ে মেইড ইন ভারত। হাসিনাকে সৃষ্টি করেছে, ১৫০ বছর আয়ু দেবে দিল্লি।
সুতরাং আইএস্তকে যারা ভয় পায়, পশ্চিমাদের উচিত আওয়ামী লীগের দিকে তাকানো। আওয়ামী নেত্রী যেভাবে বিরোধীদল খুনের এজেন্ডায় লিপ্ত, ইসলামিক স্টেট কখনোই ওই পর্যায়ে নয়। পশ্চিমাদের এখন উচিত, হাসিনার মুখ থেকে গণতন্ত্রের মুখোশটি খুলে ফেলে, বাকশালী স্টেটকে পৃথিবীর সামনে উম্মোচন করে দেয়া। এই বাকশালী স্টেট এবং দিল্লি মিলে ৫ জানুয়ারিতে হিন্দু জিহাদের মাধ্যমে এই দেশ থেকে গণতন্ত্রকে তুলে নিয়ে ফাঁসিকাষ্ঠে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করেছে। হাসিনাকে জন্ম দিয়েছে দিল্লি, দুধ খাওয়াচ্ছে দিল্লি, হিন্দু জিহাদে এরশাদ-হাসিনাকে কাজে লাগিয়েছে দিল্লি।
এক সপ্তাহে ৮ হাজার গ্রেফতার? দেখামাত্রই খুনের নির্দেশ? ইসলামিক স্টেট আমি ঘৃণা করি, ঘৃণা করি তাদের সন্ত্রাসী রূপ। আমি তার চেয়ে অধিক ঘৃণা করি বাকশালী স্টেট, যারা গণতন্ত্রের মুখোশ পড়ে ইসলামিক স্টেটের চেয়ে ভয়ংকর এজেন্ডার পতাকা হাতে নির্বিচারে মানুষ খুন করছে। এই দেশ থেকে বিরোধীদলের সংস্কৃতিকে হত্যা করেছে আলবাগদাদি নেত্রী। পশ্চিমাদেরকে বলছি, যারাই ইরাকে আলবাগদাদিকে খুঁজছে, আমরা তোমাদেরকে ধরিয়ে দিচ্ছি বাংলাদেশি আলবাগদাদি, যে নাকি নির্বিচারে মানুষ খুন করছে, যে নাকি গোটা বাংলাদেশকে কারাগার বানিয়ে ফেলেছে...। কিন্তু পুঁজিবাদের স্বার্থে তোমারা বাংলা আলবাগদাদিকে চেনো কিন্তু ধরছো না। মানবসম্পদ আমাদের অভিশাপ, তোমাদের আশির্বাদ। তোমরাই তাজরিন পুড়িয়ে কাবাব খেয়েছো, রানাপ্লাজায় লাশের ব্যবসা করেছো, এখন তার লভ্যাংশ দিয়ে পুঁজিবাজারের আকার আরো বাড়িয়ে দিয়েছো। তোমাদের উচিত ছিলো ব্যবসার বদলে জনসংখ্যা রোধে জাহাজ ভরে মায়াবাড়ি আর রাজা কনডম পাঠানো। মানবসম্পদের অভিশাপে অভিশপ্ত আমরা, পুঁজিবাদের পদপিষ্ঠে চাপা পড়ে মরছি।
২
বাকি, দেশটাকে জেলখানা ঘোষণা করা। এমনই বিভীষিকা করেছিলো ঐতিহাসিক মাও, স্টালিন, লেলিন। বলেছিলো গণতন্ত্রের কথা, আনলো রেডিক্যাল কম্যুনিজম। চেয়ারম্যান মুজিবের হাতে গণতন্ত্র হত্যার ইতিহাস অস্বীকার করবে এমন সাহস কার? বিশ্বাস না হলে ইন্টারনেট ঘেটে দেখতে পারেন। বাংলাদেশিদের উচিত, ইন্টারনেটে ঢুকে বাংলাদেশের কম্যুনিজম গবেষণা করা। মুজিবকে জন্ম দিয়েছিলো দিল্লি, মুজিবকে হত্যা করেছে দিল্লি। পরবর্তীতে হাসিনাকে কিছুদিন লালন্তপালনের পর যুবতী বানিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিলো আলবাগদাদির রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করতে। এরাই হত্যা করেছিলো জিয়াউর রহমানকে। ১ম বাকশালের বলি প্রায় ৪০ হাজার বাংলাদেশি। এই বাকশালের বলি লক্ষ লক্ষ। বয়স প্রায় ৭০, নিজেও গর্ভধারিণি, এক পা কবরে, তার উপর শস্য-শ্যামল বাংলার নারী। বুড়া বয়সে নারীর পেটে এতো রক্তক্ষুধা কি ড্রাকুলার সঙ্গে তুলনা করবো? মনে তো হচ্ছে সেটাই। ঘুম থেকে উঠেই রোগ, রক্ত চাই, রক্ত চাই। এতো রক্ত খেয়েও পেট ভরছে না ড্রাকুলা নারীর। বড়ই ভাগ্যবান ড. ওয়াজেদ মিয়া। স্বামীর দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দুইটা অজগর পয়দা করে, দেশটাকে অজগরের হাতে তুলে দিয়ে নিজে শান্তিতে ঘুমাচ্ছেন কবরে।
৩
কোথায় নিয়ে গেলো দেশটাকে! সারা বাংলাদেশে আগুন জ্বালিয়ে, ওই আগুনে আলুভর্তা খাচ্ছে আওয়ামী লীগ। দাউ দাউ করে জ্বলছে বাংলাদেশ কিন্তু আলুর চপ তাদের লাগবেই। গুন্ডা শামীম ওসমানকে যারা তৈরি করেছে, তারাই বাংলা আলবাগদাদি। তাদেরকে না ধরে হাজার হাজার শামীম ওসমানদেরকে ফাঁসি দিলেও কিছুই হবে না। এই দেশে অজগর ওসমানদের ফ্যাক্টরি খুলেছে বাংলা বাগদাদি। ঘর পুড়িয়ে আলুর চপ খাওয়াচ্ছে দেশি-বিদেশি অতিথিদেরকে। জন্মদিনের কেক কাটার মতো, আলুর চপ খাও আর ফাঁসি দাও। ফাঁসি দিতেই হবে, তা না হলে আকাম কুকামের জন্য যে পরিণতি সামনে অপেক্ষা করছে, দিল্লির চেষ্টাতেও রক্ষা হবে না। বিদায়ের আগে সবকটাকেই ফাঁসি দিতে হবে কারণ এর নাম ১৫ আগষ্টের প্রতিশোধ এবং হাতে সময় খুব কম। তাই যত দ্রুত সম্ভব, ফাঁসি, ফাঁসি, ফাঁসি। গণেশ উল্টে গেলেও যেন দেশ চালানোর মতো কাউকে খুঁজে পাওয়া না যায়।
বিচারপতিদের বিচারহীনতা কতো বলবো? এরা সব হাতের পুতুল। ন্যায়-নীতি, বিচার-বিবেক বহু আগেই আলুর চপ বানিয়ে খেয়ে ফেলেছে এবং চপ খাওয়া বিচারকেরাই নিয়োগ পেয়েছে। এখন এটর্নী জেনারেল যা বলে পরদিনই দেখা যায় রায় হিসেবে প্রতিফলিত হচ্ছে। উপরতলার নির্দেশে দেশের বিবেক আজ মীরজাফরের দাস। মীরজাফরেরা যা চায়, আদালত সেটাই করছে। এরাই কিন্তু দেশটাকে ব্রিটিশের হাতে তুলে দিয়েছিলো। বিচাপতিদের প্রতি আস্থা? ভিকটমদেরকে বলবো, আপনারা পাগলদের প্রতি অধিক আস্থা রাখুন। পাগলদের বিবেক নেই, তাই তাদেরকে দোষ দেয়া যায় না।
৪
মানবতাবিরোধীদের বিচার করে কলঙ্কমুক্ত হচ্ছি নাকি সারা শরীরেই কলঙ্কের কালি? একটা গান আছে, আমি কূলহারা কলঙ্কিনী। বাংলাদেশ এখন সবকূলহারা কলঙ্কিনী। বিচারের নামে বাংলাদেশের পতাকা এখন আলকাতরার মতো কালো। যাদের হাতে মুক্তিযুদ্ধের রক্ত তারা কি করে কলঙ্কমুক্ত করবে? মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস ১০ দিন যারা দেশে-বিদেশে পাকিস্তানীদের জরায়ুতে, তারা কি করে কলঙ্কমুক্ত করবে? ৯ মাস ১০ দিন শেষ হলে, যারা গিয়ে আশ্রয় নিলো ভারত মাতার জরায়ুতে, তারা কোন যোগ্যতায় মানবাতাবিরোধীদের বিচার করবে? তাদের কি সেই ক্ষমতা, সেই যোগ্যতা আছে? মুক্তিযুদ্ধের সময় তারাই তো ১৮০০ মাইল দূরত্বে থেকে পাকিস্তানীদের সঙ্গে আঁতাত করেছিলো। করেনি? না হলে, ২৫শে মার্চ তারিখে পাকিস্তানের পথে ভূট্টোর সঙ্গী হলো কে? ভূট্টো কি কাউকে জোর করে নিয়ে গিয়েছিলো? তাজউদ্দিনের কন্যার বইটি কি সেই কথা বলে? বরং বলে, স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে চায়নি মুজিবকাকু। এইসকল ঘটনা এখন আর ঐতিহাসিক বিতর্ক নয় বরং প্রমাণিত। পাকিস্তানের জেলে ফুরফুরা মুজিব যখন বের হয়ে এলেন, কেউ কি বলবে, ভূট্টো তাকে নির্যাতন করেছিলো? নাকি সায়ত্বশাসনের দাবিতে মুজিব নিজেই ড্রাইভারের সিটে বসে দেনদরবার করেছিলো। ওই ৯ মাস ১০ দিন, রাও ফরমান আলীর সরাসরি হেফাজতে মুজিব পরিবার। যখন সার্চলাইটে হাজার হাজার মানুষ খুন হলো, মুজিব পরিবার তখন ৩২ নম্বরে। তাদের শরীরে কাটার আচড়টিও লাগেনি। কিন্তু তাহলে ২৬শে মার্চের হত্যাকান্ড হলো কাদের নির্দেশে এবং কোত্থেকে? জাতির এই মহাবিপদের দিনে, মুজিব কেন ১৮০০ মাইল দূরে এবং তার পরিবার কেন রাও ফরমান আলীর আতিথ্যে বহালতবিয়তে? কেন গর্ভবতী হাসিনাকে পুত্রের মুখ দেখাতে, রাও ফরমান আলীর মহব্বতে এতোটুকুও কমতি ছিলো না। বরং জীপে করে পাকিস্তানীদের নিরাপত্তায় হাসপাতালে নিয়ে সজীবের আগমন ঘটালো। এই দৃষ্টান্ত কি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের নাকি বিপক্ষের শক্তির?
যখন মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তির অপবাদে একটি চিিহ্নত জনগোষ্ঠিকে নির্মূল করছে বাংলা বাগদাদি, তখন ইতিহাস সাপেক্ষে প্রশ্ন তুলতেই হবে, আসলেই কারা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি! আমি কোন দল করি না কিন্তু জানি, জিয়াউর রহমান ছিলেন সেক্টর কমান্ডার কিন্তু মুজিব পরিবার কোথায় ছিলো? তাদের পরিবার ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩২ নম্বরে এবং বের হয়েই ভারতের জরায়ুতে। এখন বলেন মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি কে? যাদের হাতে মুক্তিযুদ্ধের রক্ত, তাদের কোন অধিকার নেই মানবতাবিরোধিদের বিচার করার। কোন অধিকার নেই বাংলাদেশকে কলঙ্কমুক্তর নামে আরো কলঙ্কিত করা। ট্রাইবুন্যাল নিয়ে বিশ্বজুড়ে ছিঃ ছিঃ। যারাই মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস ১০ দিন পাকিস্তানের জরায়ুতে, এই দেশের মানুষের যদি বিবেক বলে কিছু অবশিষ্ট থাকে, উচিত শান্তিপূর্ণ বাংলা বসন্ত এনে, বাংলা বাগদাদিকে বাংলা থেকে দিল্লিতে পাঠিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বানাও।
৫
এরপর কি বলবে তারানা? বলবে, সেক্স করা বন্ধ রাখতে হবে? যতোসব ফাজিলের কারবার। এইগুলা তেলাপোকারও যোগ্য না। ফেইসকুক, টেঙ্গো, ভাইবার... সব বন্ধ করে দিয়েছে। অন্ধকারে চাপা পড়ে গেছে বাংলাদেশ। সর্বত্রই অন্ধকারের ধোঁয়া। যেদিকেই তাকাই, আকাশ অন্ধকার, বাতাস অন্ধকার, কান অন্ধকার, কণ্ঠ অন্ধকার, মন অন্ধকার, জিহ্বা অন্ধকার, দুই চোখ অন্ধকার...। অন্ধকার ঘিরে ফেলেছে সকলের আত্মা-প্রেতাত্মা, লৌকিক-পারলৌকিক যা কিছু। মনে হচ্ছে আকাশ ভেঙ্গে অন্ধকারের বৃষ্টি হচ্ছে আর সেই বৃষ্টিতে নূহের প্লাবনের মতো আমরাও ডুবে যাচ্ছি। আমাদের উদ্ধারের জন্য নেই কোন তিমিমাছ, নেই নূহের নৌকা। আমরা সবাই অন্ধকারের কালো প্লাবনে তলিয়ে যাচ্ছি আর ওপার থেকে ফেরাউন তার দলবল নিয়ে ক্রমাগত গুলি করছে। আমরা ফিরে গেছি ৪ হাজার বছর আগের মিশরে, যেখানে শাসনের নামে অন্ধকারের অত্যাচার চালিয়েছিলো ফেরাউন।
শিশু জন্মালে একদিন সে যুবক হয়। আওয়ামী লীগের সদস্য হলে যৌবনে সে ফেরাউন হয়। দেশজুড়ে আজ ফেরাউনদের রাজত্ব। ঘরে ঘরে ফেরাউন বানানোর কারখানায় উৎপাদন হচ্ছে শামীম ওসমান, বদি, রানা, মিজান, লতিফ সিদ্দিকী, তারানা হালিম, হানিফ, হাসান মাহমুদ, খাদ্যমন্ত্রী, ত্রাণমন্ত্রী... ফেরাউনের বাচ্চারা। এই দেশের র্যা ব ৭ মার্ডারের সঙ্গে সম্পৃক্ত যার শ্বশুর একজন ত্রাণমন্ত্রী, এখনো যে ক্ষমতায়। অথচ কারাগার ভরে ফেলেছে মির্জা ফকরুলদের মতো নিরীহ নির্দোষদের দিয়ে। আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে, আর সেই সঙ্গে নেমে আসছে প্রেতাত্মা ফেরাউনরা। এরাই আমাদের ভাইবার, ফেইসবুক, ট্যাংগো বন্ধ করে দিয়েছে। যারা আমাদের স্যোসাল মিডিয়ার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। যারা দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছে। যারা ইন্টারনেটে ঢুকে সকলের মুক্তচিন্তার জগতে ফেরাউনের মতো হানা দিয়ে, চিন্তা এবং বেঁচে থাকার অধিকার হরণ করেছে।
এই তারানা হালিম যে নাকি নাটকের দুশ্চরিত্র এবং পরবর্তীতে খুনি স্বৈরাচারের শয্যাসঙ্গী, খালেদাকে গালিগালাজের প্রতিযোগিতায় ১ম হয়ে বাংলা বাগদাদির মন্ত্রীসভায় প্রতিমন্ত্রী। এই তারানা হালিম, যার নাকি ইফতারের হালিম হওয়ার যোগ্যতাও নেই, সেই হালিম এখন সানি লিওনের মতো তারকা। এখন সে বাকশালী স্টেটের সদস্য হয়ে, হনুমানের হাতে খন্তা অর্জন করেছে। আর সেই খন্তা দিয়ে লন্ডভন্ড করছে সোস্যাল মিডিয়ার মতো অধিকারের অধিকার। কেড়ে নিচ্ছে ফোনের সিম, ভেঙ্গে ফেলছে এ্যাপস্, উৎপাটন করছে গুগলের ওয়েব।
জোক যখন রক্ত খেতে শুরু করে, পেট না ভরা পর্যন্ত থামে না। এর অর্থ হলো, পেট ভরে গেলে জোকও ঘুমিয়ে পড়ে। কিন্তু যারাই তারানা হালিমের মতো জোকের উদারহণ, অলৌকিক কিছু না ঘটা পর্যন্ত তারা যে থামছে না, সেটা পরিষ্কার।
৬
খালেদা জিয়া বড় বেশি গান্ধিবাদি হওয়ায় আমাদের কপাল পুড়লো। তবে ইসলামিক স্টেটের শিক্ষাগুরু কে, সেটাই প্রশ্ন। আমি বাকশালী স্টেট দেখা মানুষ, আমার ধারণা ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে পার্থক্য একটাই, ইসলামিক স্টেট গোপন হামলা করে। বাকশালী স্টেট সংসদ এবং আদালত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বেঁচে থাকার অধিকারে হামলা করে। আদালতকে ব্যবহার করে ফাঁসির সংস্কৃতি চালু রেখেছে বাংলা বাগদাদি স্টেট। বিশ্বে ভয়ংকর যা কিছু, অন্যতম গণতন্ত্র। যারাই এর মুখোশ পড়ে, ইসলামিক স্টেটের মতো তাদেরকে ধরা যায় না। তাদেরকে শাস্তি দেওয়াও যায় না। তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধও ঘোষণা করা যায় না। বরং তারাই একটি সুস্থ জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে যা কায়েম করে, উদাহরণ বাকশালী স্টেট বাগদাদির বাংলাদেশ।
খালেদার গান্ধিবাদ, বাংলাদেশের মরণফাঁদ।
৭
সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে বয়সে বাড়ে। ড. আনিসুজ্জামানের মতো শিক্ষকেরা বয়সে বাড়লে মাস্তানের আকার ধারণ করে। এরা হচ্ছে সেইসব ভদ্রবেশি, ছদ্মবেশি, শিক্ষকেরও শিক্ষক, যারা বড় হয়েছে আর নিজেদেরকে পর্যায়ক্রমে ময়লা করেছে। আর সেই ময়লা ছড়িয়ে দিয়েছে ছাত্রদের মাঝে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সেইসব ছাত্ররা ড. আনিসুজ্জামানের মতো শিক্ষকদের কাছে শিক্ষিত হয়ে বাস্তব জীবনে হয়েছে একেকটা আলবাগদাদি। মনে আছে একটার পর একটা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনা? মনে আছে, ছাত্রলীগ, যুবলীগের ঘরে ঘরে রামদা, চাপাতি, ফেনসিডিল আর পেট্রোলবোমা আবিষ্কার? কারা দোষ দেয় জামায়েত-শিবিরকে? কারা সাহস জামায়েত-শিবিরকে সন্ত্রাসী? আমি তো দেশজুড়েই দেখছি ড. আনিসুজ্জামানের মতো চাপাতি শিক্ষকরা, চাপাতি বানায়। চাপাতি ছাত্ররা চাপাতি আর পেট্রোলবোমা দিয়ে মানুষ হত্যা করে। তাদের হাতে বই নেই, মনে আলো নেই, মুখে কবিতা নেই, হৃদয়ে সংগীত নেই, বরং তাদের হাতে পেট্রোলবোমা, মনে ফেরাউনের অন্ধকার, মুখে ইমরান সরকারের ফাঁসির শ্লোগান।
দিনের আলোয় বকশিবাজারে হাজার হাজার জগন্নাথ কলেজের ছাত্রলীগ, যুবলীগ এসে ঝাপিয়ে পড়েছিলো বিশ্বজিতের উপর। জনে জনে চাপাতি হাতে কসাইখানার গরুর মতো জ্যান্ত যুবক বিশ্বজিতের গায়ে একটার পর একটা কোপ মেরে যেভাবে রক্ত ঝরিয়েছিলো, এরপর শিক্ষক আনিসুজ্জামানদেরকে কোলে বসিয়ে চুমা খাবো না? এইসকল ভন্ডপীর, ভন্ডশিক্ষক, ভন্ডচেতনাবাদি আছে বলেই তো বাংলাদেশের ঘরে ঘরে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে, পক্ষের শক্তিরা আলুরচপ খাচ্ছে।
ড. আনিসুজ্জামানের খুব মনোকষ্ট হয়েছে। এই ভন্ডপীর বললেন, “ভাবিনি এই বয়সে চেতনার জন্য বক্তব্য দিতে হবে।” ভারতের দালাল এইসব প্রতারকদের কাছে প্রশ্ন, চেতনার অর্থ কী? কার কাছে চেতনা? চেতনার ওজন কতো? আকৃতি কেমন? চেতনা লম্বায় কয় ফুট এবং দৈর্ঘ্য-প্রসে' কয় গজ? চেতনার কাথা পুড়িয়ে আমি আলূভর্তা খাই। এইসকল চেতনাবাদি দালালদের জন্যই একটি সুস্থ সবল বাংলাদেশ এখন প্রায় মৃত শিশু। শিশুটির শরীর জুড়ে ক্যান্সার। প্রায় সব মাংসই পচে গেছে। আর ভারতের দালাল চেতনাবাদিরা, রাস্তায় দাড়িয়ে ধান ভানতে শিবের গীত।
ভ্রষ্ট শিক্ষক আনিসুজ্জামান, দুই দেশেরই দালাল, স্বাধীনতার সর্বনাশ করতে উঠেপড়ে লেগেছে। ভ্রষ্ট শিক্ষককে প্রশ্ন, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে যে দলটি দেশে-বিদেশে পাকিস্তান এবং ভারতের জরায়ুতে বড় হয়েছে, তারা কি করে কলঙ্কমুক্ত বাংলাদেশ আনবে? যাদের হাতে মুক্তিযোদ্ধাদের রক্ত, তারা কি করে মানবাতাবিরোধীদের বিচার করবে? ড. আনিসুজ্জামানের কি মনে নেই মুজিববাহিনী, রক্ষিবাহিনীর কথা? তিনি কি মন্ত্রীসভায় অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর বেয়াই রাজাকার মন্ত্রীকে চোখে দেখেন না? ওই লোক তো বাপের সঙ্গে বহু মুক্তিযোদ্ধা খুন করেছে। আজ তিনি চেতনার জন্য দুঃখ করেন কিন্তু মুজিববাহিনী আর রক্ষিবাহিনী এই দেশের মানুষের যতো রক্ত খেয়েছিলো, সেটার জবাব কি এই ভারতীয় দালাল দেবেন?
এইসকল সুবিধাবাদি পীরদেরকে যতোদিন চিহ্নিত না করবে যুবক-যুবতীরা, ততোদিন বকশিবাজারের ছাত্র-ছাত্রী হয়ে থাকবে। এই সকল ভন্ডপীরদের কাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ঢুকে রাজনৈতিক দলের টাকায় ছাত্রদের মস্তিষ্ক নষ্ট করা। যেন বের হয়েই বকশিবাজারের উ
দাহরণ হয়ে যায়। শিক্ষকের হাতে চাপাতি? দেখা মাত্র পুলিশে দিন। জয়বাংলা।
No comments:
Post a Comment