Saturday 30 September 2017

ধর্ম যার যার অপচয় সবার

(পুরনো পোস্ট)
শারদীয় দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে প্রতিমা বানানোর কাজ শুরু হয় প্রায় ২ মাস আগে থেকে। এবছর সেপ্টেম্বরের ২৬ তারিখ থেকে শুরু হবে দুর্গাপূজার ষষ্ঠী এবং সপ্তমী-অষ্টমী এভাবে করে চলবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এবছরের দুর্গাপূজার জন্য প্রতিমা বানানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে ইতোমধ্যেই।
.
এলাকার নামজাদা প্রতিমা-শিল্পীদের কাছে দূরদূরান্ত থেকে বড় বড় সব মন্ডপের প্রতিমা বানানোর বায়না আসে। পুরান ঢাকা, চট্টগ্রাম আর কক্সবাজারের কিছু মন্ডপ তাদের বিশাল আয়োজন আর চমক লাগানো প্রতিমা সেট দিয়ে খবরে আসে প্রায় প্রতিবার।
.
গতবছরও সারা দেশে প্রায় ২৮ হাজার ৫শটি স্থায়ী মন্দির ও অস্থায়ী মণ্ডপে পূজা হয়েছিল। খরচ কত হয় তাতে? একেকটি মন্ডপে প্রায় ৮ থেকে ১২ লাখ টাকা খরচ হয়ে থাকে। শুধুমাত্র প্রতিমা সেট বানাতেই কক্সবাজার এলাকার শিল্পীরা নাকি গতবছরও ২-৩ লাখ টাকা করে নিয়েছে। বলাই বাহুল্য, এবছর খরচ আরও বাড়বে। [১]

পূজা উপলক্ষে সরকারিভাবে বরাদ্দ রাখা হয়। মণ্ডপ প্রতি সরকারি বরাদ্দ হচ্ছে ৫০০ কেজি চাল। এভাবে সারা দেশে ২৮,৫০০ মণ্ডপে সরকারি বরাদ্দ দেয়া হয়। এছাড়া ম্যাজিট্রেট, ডিসি, এসপি, এমপি, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে আলাদা অনুদান তো আছেই। প্রতি কেজি চালের মূল্য ৫০ টাকা ধরলেও ২৮,৫০০ মণ্ডপে সরকারী বরাদ্দ দেয়া হয় মোট ৭১ কোটি ২৫ লাখ টাকার চাল। আর প্রতিবছরই বাড়ানো হচ্ছে এই বরাদ্দ। এই টাকা ৮৮% মুসলিমদের দেওয়া ট্যাক্সের আর ভ্যাটের টাকা থেকেও যে আসে, তা নাহয় নাই বললাম।
.
তাছাড়াও প্রতি মন্ডপে গড়ে মাত্র ১ লাখ টাকা খরচ হলেও ২৮,৫০০ মন্ডপে মোট খরচ প্রায় ২৮৫ কোটি টাকা। এটা একটা ন্যুনতম রাফ এস্টিমেশান। পুরান ঢাকা, চট্টগ্রামসহ কিছু মন্ডপে প্রতিবার ১৫ লক্ষ টাকারও বেশি খরচ হয়ে থাকে। কয়েকবছর হল, পূজা কমিটি থেকে শহরের সেরা মন্ডপকে লাখখানেক টাকা পুরষ্কার দেওয়ারও চল শুরু হয়েছে।
.
নবমীতে ওরা যে দুর্গা বলিদান করে, তার ন্যক্কারজনক ইতিহাস হয়তো সবারই জানা। আর দশমীতে? সমস্ত প্রতিমা সেট নিয়ে ডুবিয়ে দেওয়া হয় পানিতে। এর নাম প্রতিমা বিসর্জন। শুধুমাত্র কক্সবাজারেই প্রতিবছরই মাত্র ১৫ মিনিটে প্রায় ৪০০ প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। [২] গিনেস রেকর্ড খুঁজলেও এত কম সময়ে এতটাকা আক্ষরিকভাবেই পানিতে ফেলে দেওয়ার রেকর্ড বোধ হয় আর পাওয়া যাবে না।

কুরবানির গোশতের কমপক্ষে তিনভাগের এক ভাগ হল গরীবদের হক। কেউ চাইলে নিজের অংশ থেকে আরও বেশিও সাদকাহ করতে পারে, বা রেঁধে গরীবদের খাওয়াতে পারে। তবুও কুরবানি নিয়ে সুশীলরা বাণী দিয়ে দিয়ে নিজেদের মোটামাথার পরিচয় ভালই দেয়। কিন্তু একইসাথে যে আসন্ন দুর্গাপূজার প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে, প্রতিবছরের মত কোটি কোটি টাকা পানিতে ঢালার আয়োজন করা হচ্ছে সেবিষয়ে কথা নেই যে? এত দফারফা করে শেষমেশ দেবদেবীর চৌদ্দগোষ্ঠী পানিতে ফেলে দেওয়ার মত অপচয় নিয়ে তেমন সাড়াশব্দ তো পাওয়া যায়ই না, বরং আরো সার্বজনীনের ট্যাবলেট গেলানো হয়। মুসলিমদের পকেটের টাকা থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয় বলেই কি ‘সার্বজনীন উৎসব’ আর ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’ বলা হচ্ছে কিনা তাও কিন্তু অব্যক্তই রয়ে যায়।
Courtesy: Tanvir Ahmed
.
ধর্ম যার যার
অপচয় সবার

Thursday 28 September 2017

ছবিটিতে পা তুলে মাঝখানে বসা রোহিঙ্গা মুসলিম মানুষটির নাম, আব্দুর রশিদ।

ছবিটি ১৯৩৬ সালে তোলা। স্থান রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গন, বার্মা।
ছবিটিতে পা তুলে মাঝখানে বসা রোহিঙ্গা মুসলিম মানুষটির নাম, আব্দুর রশিদ। ছিলেন অল বার্মা স্টুডেন্ট ইউনিয়ন এর সভাপতি। তার ডান পাশে বসা লোকটির নাম অং সান (অং সান সুচির বাবা) ছিলেন ঐ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক। বাম পাশে বসা লোকটির নাম আব্দুল রাজ্জাক। ছিলেন বার্মা মুসলিম লীগ এর সভাপতি। আর এদের হাত ধরেই এসেছিল বার্মার স্বাধীনতা। ঐ রোহিঙ্গা সভাপতি আব্দুর রশিদ ছিলেন আজকের মিয়ানমারের সংবিধানের খসড়া প্রণয়নকারী।
কাজেই রোহিঙ্গা মুসলমানরা বার্মার কেউ না এটা বলা ইতিহাসে চরম মিথ্যাচার ই না অমার্জনীয় ধৃষ্টতা।

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো