Saturday, 22 June 2024

আমাদের ছোটবেলা

আমাদের ছোটবেলায় প্রায় প্রতিটি পরিবারেই অভাব অভাব আর অভাবে পরিপূর্ণ ছিলো। প্রায় প্রতিটি পরিবারে ভরা ছিলো ছেলেমেয়ে। আমার বাবা মায়ের আমরা মাত্র ৯ জন।। আমার চাচাতো ভাইয়েরা ছিলো ৮ ভাই বোন। পাশেই এক খালার ১৩ জন ছেলে মেয়ে। আর এক পরিবারে ১০ ছেলে মেয়ে। এই সব পরিবারে রোজগারের মানুষ শুধুই বাবা আর সবাই শুধুই খায়। আমাদের সব পরিবারেই জমিতে যা হতো তাই দিয়েই মাছ গোশ, তরিতরকারি কেনা, জামা কাপড় কেনা, প্রতিদিনের কেরোসিন তেল, তিলের তেল বা সরিষার তেল কিনতে হতো। এতে নুন আনতে পান্তা ফুরিয়ে যেতো। শীত কালে গরম জামা তখন ছিলো না। বাবারা হাট থেকে রঙ্গিন সুতির চাদর কিনে আনতেন ৫ জনের জন্যে একটা। তাই মায়ের শিলাই করা কাঁথা জড়িয়েই শীত পার করে দিতে হতো। মাঝে মাঝে লুঙ্গি ও গাঁয়ে দিতাম। শীতের রাতে কোন রকম ৪ /৫ জনে একটা লেপ ছিলো। একদিকে টান দিলে অন্য পাশের জনের গায়ে লেপ থাকতো না। মাটির বাসনে খাওয়া, খোরায় করে ঝোল রাখা। নারকেলের চামচ দিয়ে মা ঝোল তুলতেন। নারকেলের ওড়ম দিয়ে ডাল উঠাতেন। আমাদের ঘরে মাটির ছোট পাত্রে মা ঝোল দিতেন। ঘরের মেঝেতে পাটি বিছিয়ে লাইন দিয়ে খাবার বসে যেতাম ১০/১১ জনে। মনে পড়ে মা কাউকে দুইবার তরকারি দিতেন আবার কাউকে একবার ও দিতে মা ভুলে যেতেন। খাবার সময় দেখা যেতো খাবার শেষে হাড়িতে ভাত নেই তখন মা মাচায় ঊঠে উড়ুম নিয়ে আসতেন। আর কম ভাতের মধ্যে মা বোনেরা উড়ুম দিয়ে খেয়ে উঠতেন আনন্দের সাথে। কাউকে বলতেন না। আমি অনুভব করতাম। এখনো সে সব স্মৃতি মনে পড়ে আর সেই মা বাবার ঘরে মনে মনে ঢুকে যাই। মা সকালে প্রতিদিন পান্তা দিতেন আর পান্তা না থাকলে বেশি পানি দিয়ে সাদা জাউ ( ক্ষীর) রান্না করে আমাদের দিতেন। তাই আমরা শাক রান্না বা মরিচ দিয়ে বা শুধুই লবন দিয়ে খেয়ে নিতাম। দুপুরে আমাদের কোন মা তাড়াতাড়ি ভাত রান্না করতেন না। আমাদের সকল সংসারের মায়েরা ৩/৪ টার আগে কোন দিন দুপুরের খাবার দিতে পারেন নাই। প্রায়ই এই দুই ওয়াক্ত খাবার পাইতাম। রাতে খুব কমই খেতাম। আমরা কোথাও বেড়াতে গেলে এর প্যান্ট, ওর জুতা, অন্যজনের মুজা ধার করে নিয়ে যেতাম। নাহ লজ্জা আমাদের করে নি। নিজের না থাকলে কিসের লজ্জা! আমরা লজ্জা বুঝতাম না। ভাবতাম যাদের নাই তাদের এভাবেই অন্যের জিনিস চেয়ে এনে পরতে হয়। গোস যে কবে খেতাম তা বছরে এক দুইবার গরুর গোশ৷ আর মেহমান এলে কখনো সখোনো মুরগীর গোশ খেতাম। সবাই মিলে জাল দুই ঘরের মাঝে টানিয়ে রাখলে মুরগী বা মোরগ জালে গেলেই তবে জবাই হবে। কি যে খুশী হতাম। মা আজ গোস রান্না করবে! খাবার সময় মা সতর্কের সাথে কোন রকম এক পিচ গোশ আর তিন পিচ বড় আলু বা কচু এবং ঝোল দিতেন বেশি। সেই ঝোলের মায়ায় পড়ে দুই প্লেট ভাত খেয়ে নিতাম। আর আজিও সেই দে্শী মুরগীর ঘ্রান নাসারন্ধ্রে এসে লাগছে। আজ বসে বসে মা বাবাকে ভাবছি। মা বাবা এতো পোলাপান কিভাবে খাওয়ায়ে মানুষ করেছে।আমরা ২/৩ জন লালন পালনে অক্ষম হয়ে পড়ি। আর তারা ১০/১১ জন কিভাবে খাবার জোগাড় করতেন। তাই আজ আমাদের আমলের মা বাবাকে শ্রদ্ধা জানাই। তোমরা ভালো থেকো। আপনার মনে থাকলে কিছু লিখে প্রকাশ করতে পারেন। ও হ্যা আপনারা তো লজ্জা পান লিখতে। যারা আমার মতো লজ্জা পান না তারা শেয়ার করলেও করতে পারেন। লেখাঃ Golam Mostafa (Collected)

Sunday, 16 June 2024

কোকাকোলা বয়কট, আইনস্টাইনকে হিংসা না করে নিজের সন্তানকে জ্ঞান অর্জন করার শিক্ষা দিন।

মাত্র দেড় কোটি জনসংখ্যার একটি গোষ্ঠীর কাছে পৃথিবীর ৫৬ টি দেশ ও ১৯০ কোটির উপরে মানুষ বিদ্রোহ করেও টিকতে পারছেনা শুধু জ্ঞানের কারণে। দ্বীপ রাষ্ট্র নাউরুর ও সম্পদ ছিল, পৃথিবীর ২য় ধনী রাষ্ট্র ও হইছিলো কিন্তু এখন আর নাই।আরব বিশ্বের সম্পদও চিরকাল থাকবেনা। কিন্তু ওই দেড় কোটি মানুষের জ্ঞানের ধারা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম রক্তের মাধ্যমে বইতে থাকবে। কোকাকোলা বয়কট করেন তাতে কোন আপত্তি নাই। কিন্তু লিস্ট শুধু কোক না লিস্টটা অনেক লম্বা।পড়তে পড়তে আপনার দাঁত ভেঙ্গে যেতে পারে।শুরুটা ইনটেল , মাইক্রোসফট , উইকিপিডিয়া , গুগল ও ফেসবুক দিয়ে শুরু করা যাক।আপনি যে কম্পিউটার ব্যবহার করছেন তার প্রসেসরটা ইহুদীদের তৈরী।একটা ১৪ ইনটেল প্রসেসরের দাম প্রায় ৬৯০০০ টাকা।ওটা নিশ্চয়ই আপনার দুই লিটার কোকের দাম নয় যে চাইলেই ফেলে দিবেন।এতবড় আত্মা এখনো এই দেশে কম্পিউটার ব্যাবহারকারী লক্ষ লক্ষ মানুষের হয় নাই।ডেল, লেনোবা যাই ব্যাবহার করুন ওদের কাছে আপনি না চাইলেও খত দিতে হবে।সবার ঘরে ঘরে তো আর কম্পিউটার নাই!! আপনার হাতের যে মোবাইলটা তার বিভিন্ন সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার এই ইহুদিদের তৈরী। ফেসবুক , গুগল , ইউটিউব এসব ব্যাবহার করতে করতে যারা হাতের আঙ্গুল ব্যাথা করে ফেলছেন তারা বড়জোর নির্লজ্জের মত ফেসবুক ভিউ পেতে পোস্ট করেই শেষ। আমাদের দেশের বিভিন্ন বুলডোজার ইহুদিদের তৈরি। ওদের তৈরি Dell, GE , HP এগুলো আপনারা ছাড়বেন না তাতো বহু আগে থেকেই জানা। আরব বিশ্বে ইহুদীদের ম্যাকডোনাল্ড এর সংখ্যা কেন দিন দিন বাড়তেছে সেই প্রশ্ন কখনো নিজেকে করছেন? ম্যাকডোনাল্ড, কেএফসি এসব দেখলেই যাদের জিহ্বা লিকলিক করে তারা শুধু ফেসবুকে বয়কট লিখেই জিহ্বা চাটতে চাটতে বাসায় ফিরে যাচ্ছেন সেটাও আমি জানি।যে নোকিয়া মোবাইল দিয়ে আপনার মোবাইল ব্যাবহার শুরু করেছিলেন সেটাও তাদের প্রতিনিধিত্ব করে। বিশ্ববিখ্যাত মোটোরোলাও তাদের। আপনি হয়তো ভাবছেন আজ থেকে পাকিস্তানি মোবাইল ব্যাবহার শুরু করবেন কিন্তু সেই মোবাইলের ভেতরের যন্ত্রাংশ ও তাদের। আপনাদের শুধু আছে মুখ আর মুখোশ। মাত্র ৬০ লক্ষ জনসংখ্যার একটি দেশ আপনাদের পুতুলের মত নাচাচ্ছে আর আপনারা নেচে নেচে তাদেরই ফেসবুকে এসে পোস্ট দিচ্ছেন ' বয়কট!! আপনার এই পোস্টেও লাভ তাদেরই হচ্ছে । ইসরাইলের পণ্য জানার জন্য গুগলে সার্চ করছেন এতেও লাভ তাদের হচ্ছে।আপনারা যত বেশি নাচানাচি করবেন তাদের লাভ ততবেশি।। আপনি খাইলেও তাদের লাভ।না খেয়ে সিএনএন, বিবিসি,ডিজনি ও খেলার চ্যানেল সহ ডিসকভারি দেখলেও তাদের লাভ।ভলবো বাসে করে আপনি ঘুরতে গেলেও তাদেরই লাভ। ব্রান্ড স্টার কফিতে চুমুক দিয়ে উদাসী হবেন এতেও তাদের লাভ।বিশ্বকে জানতে নামিদামি পত্রিকা পড়বেন তাতেও তাদের লাভ। আপনি খালি পায়ে থাকলেও তাদের লাভ আবার ফ্যাশন করে দামী জুতা পরলেও তাদের লাভ। আরেকটা কথা ম্যাগি, বাটা, আটা, ময়দা ও সুজি এসব কোনটাই তাদের পণ্য নয়।তারা আটা, ময়দা ও সুজি বিক্রি করে রাষ্ট্র চালায়না। তাদের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৯০ ভাগ আপনাদের ছাড়াই হয়। লরিয়াল, প্রেসিডেন্ট এসব আপনি কিনলেও তাদের লাভ আর না কিনলেও তাদের লাভ । আমেরিকা ও ইউরোপের মত দেশ যাদের কাছ থেকে বিভিন্ন হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার রপ্তানি করে সেখানে আপনি আমি চোখ খুললেও কিছু যায় আসেনা।আর চোখ বন্ধ করে তেল মেখে ফেসবুক গুতালেও তাদের কিছু যায় আসেনা।। কথায় কথায় বয়কট বয়কট না করে নিজেদের চরিত্র সংশোধন করুন। নিজেদের সর্বজ্ঞানী না ভেবে, আগামী ইউটিউব ও ফেসবুক বিজ্ঞানী না বানিয়ে জ্ঞান অর্জন করার শিক্ষা দিন।নিজ দেশে জ্ঞানী মানুষকে সম্মান দিবেননা আর বলবেন প্রতিবেশীরা লুট করে নিয়ে যাচ্ছে।বলি নিজের চরকায় তেল দিতে শিখুন।চুরি ও দূর্নীতি, সুদ, ঘুষ, পরনিন্দা এসব ছেড়ে মানুষ ও দেশপ্রেমিক হতে শিখুন। আমাদের মতো হিন্দু, মুসলিম , আস্তিক, নাস্তিক , ধনী ও গরীব এতো ভেদাভেদ ৬০ লক্ষ মানুষের ছোট দেশ ইসরায়েলে নেই। আপনারাও জাতি ভেদাভেদ ভূলে জ্ঞান ও জ্ঞানীকে সম্মান করতে শিখুন। আইনস্টাইনকে হিংসা না করে নিজের সন্তানকে জ্ঞান অর্জন করার শিক্ষা দিন। কোকাকোলা যখন শুরু হয় তখন ইসরায়েল নামক দেশটি পৃথিবীতে ছিলোনা। কিন্তু জাতি হিসেবে তারা একতাবদ্ধ বিধায় তারা এর সুফল পেয়েছে। আমাদের মধ্যে শিয়া, সুন্নি, কাদিয়ানি , মাজার পুজারি , হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান কত ভাগ।এই দেশ উন্নতি করবে কেমনে? যে দেশে দূর্নীতিবাজদের গলায় ফুলের মালা দেওয়া হয় , ঘুষখোর ও রাজাকারকে রাষ্ট্রীয় সম্মান দেওয়া হয় সেই দেশটা ফেসবুক আর ইউটিউব বিজ্ঞানীরাই শেষ করে দিবে এবং দিচ্ছে।ফেসবুক ও ইউটিউব ভিউ ও টাকা কামানোর ধান্দায় এরা দেশটাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। যে দেশে সৎ মানুষের সম্মান নাই , জ্ঞানী লোকের সম্মান নাই, দেশ প্রেমিকদের সম্মান নাই সেই দেশের মানুষের মুখে বয়কট শুনলেই হাসি পায়। কাউকে বয়কট করার আগে নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করুন , নিজেদের পৃথিবীতে বসবাসের যোগ্য করে গড়ে তুলুন নয়তো আফগানিস্তান ও ইরাকের মত অথবা পাকিস্তানের মত আম ও ছালা দুটোই হারাতে হবে।।লোটা হাতে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ২৩ শতাংশ হয়ে বিশ্ব শাসন করা যায়না।এই বিশ্বকে শাসন করতে হলে ধর্মান্ধতা ও উগ্রতা পরিহার করে এবং গাছে ভূত আছে এই জাতীয় কুসংস্কার কবর দিয়ে জ্ঞানে ও বিজ্ঞানে উন্নত জাতি হতে হবে।তাহলে এক ঢাকা শহরের মানুষকে দিয়েই পুরো বিশ্ব শাসন করতে পারবেন।আর লোটা বিজ্ঞান পড়লে দেশ ও জাতি দুটোই ধ্বংস হবে আজ নয়তো কাল। #সত্য_সবসময়_সুন্দর আলফ্রেড নোবেল #আলো_আসবেই ক্যাপটেক শুভ ক্যাকটাস ওমর ফারুক শুভ –সময়ের প্রেক্ষাপটে উপলব্ধি মূলক অসাধারণ একটি লিখা।