"... শেখ মুজিব ঢাকায় এসে তার প্রথম জনসভায় মর্মস্পর্শী ভাষণ দিয়েছিলেন। তিনি এই সভায় বলেছিলেন যে, লায়ালপুর জেলে তাকে হত্যা করে দাফন করার জন্য তার সেলের পাশে কবর খোঁড়া হয়েছিল। একজন জেলার ঘাতকের কবল থেকে তাকে বাঁচিয়েছিল।
জেলের ভিতর দাফন করার কথাটায় আমার বেশ খটকা লেগেছিল। অনেকদিন পরে, যখন বাংলাদেশ-পাকিস্তান ডাক চলাচল শুরু হয়, তখন লায়ালপুরে আমার এক পুরাতন বন্ধুকে কড়া ভাষায় পত্র লিখলাম যে, তোমাদের দেশে আমার দেশের সর্বজনমান্য নেতাকে নিয়ে যে ব্যবহার করেছ তা সভ্য জনোচিত হয়নি। জেলের মধ্যে কবর দেওয়ার কাহিনীও তাকে জানালাম। আমার আশা ছিল যে, তিনি প্রকৃত সংবাদ জানাতে পারবেন। কারণ তার প্রথম পুত্র সামরিক বাহিনীর কর্নেল এবং লায়ালপুর জেলে সামরিক ট্রাইব্যুনালের সদস্য ছিলেন। বন্ধুটি ছিলেন আবার শহীদ সোহরাওয়ার্দীর অন্ধ ভক্ত। সেজন্য শেখ মুজিব সম্পর্কে তার একটু দূর্বলতা ছিল।
প্রায় দেড়মাস পরে আমার পত্রের জওয়াব পেলাম। তিনি লিখেছেন যে, ট্রাইব্যুনালের সামনে শেখ সাহেব বলেছেন যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা তিনি চান নি। তিনি পূর্ব পাকিস্তানের ন্যায্য অধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছেন। শেখ সাহেবের এই বিবৃতি ট্রাইব্যুনালে রেকর্ড করা আছে। আর সেলের পাশে কবর খোঁড়ার ব্যাপার সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তা সত্য নয়। ভারতীয় বিমান হামলার আশঙ্কায় জেলখানার মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় অনেক ট্রেন্স খুঁড়ে রাখা হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে শেখ সাহেবকে জেলে এক বিরাট ওয়ার্ডে রাখা হয়েছিল। সেখানে তিনি নিজে ফুলগাছ লাগাতেন, গাছে পানি দিতেন। তিনি যে ওয়ার্ডে ছিলেন তা আসবাবপত্রে সজ্জিত ছিল॥"
- মোহাম্মদ মোদাব্বের / সাংবাদিকের রোজনামচা ॥ [ বর্ণ মিছিল; সেপ্টেম্বর, ১৯৭৭ । পৃ: ৩৪৭ ]
জেলের ভিতর দাফন করার কথাটায় আমার বেশ খটকা লেগেছিল। অনেকদিন পরে, যখন বাংলাদেশ-পাকিস্তান ডাক চলাচল শুরু হয়, তখন লায়ালপুরে আমার এক পুরাতন বন্ধুকে কড়া ভাষায় পত্র লিখলাম যে, তোমাদের দেশে আমার দেশের সর্বজনমান্য নেতাকে নিয়ে যে ব্যবহার করেছ তা সভ্য জনোচিত হয়নি। জেলের মধ্যে কবর দেওয়ার কাহিনীও তাকে জানালাম। আমার আশা ছিল যে, তিনি প্রকৃত সংবাদ জানাতে পারবেন। কারণ তার প্রথম পুত্র সামরিক বাহিনীর কর্নেল এবং লায়ালপুর জেলে সামরিক ট্রাইব্যুনালের সদস্য ছিলেন। বন্ধুটি ছিলেন আবার শহীদ সোহরাওয়ার্দীর অন্ধ ভক্ত। সেজন্য শেখ মুজিব সম্পর্কে তার একটু দূর্বলতা ছিল।
প্রায় দেড়মাস পরে আমার পত্রের জওয়াব পেলাম। তিনি লিখেছেন যে, ট্রাইব্যুনালের সামনে শেখ সাহেব বলেছেন যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা তিনি চান নি। তিনি পূর্ব পাকিস্তানের ন্যায্য অধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছেন। শেখ সাহেবের এই বিবৃতি ট্রাইব্যুনালে রেকর্ড করা আছে। আর সেলের পাশে কবর খোঁড়ার ব্যাপার সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তা সত্য নয়। ভারতীয় বিমান হামলার আশঙ্কায় জেলখানার মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় অনেক ট্রেন্স খুঁড়ে রাখা হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে শেখ সাহেবকে জেলে এক বিরাট ওয়ার্ডে রাখা হয়েছিল। সেখানে তিনি নিজে ফুলগাছ লাগাতেন, গাছে পানি দিতেন। তিনি যে ওয়ার্ডে ছিলেন তা আসবাবপত্রে সজ্জিত ছিল॥"
- মোহাম্মদ মোদাব্বের / সাংবাদিকের রোজনামচা ॥ [ বর্ণ মিছিল; সেপ্টেম্বর, ১৯৭৭ । পৃ: ৩৪৭ ]