Thursday 30 November 2023

কুমিল্লা বোর্ডের সুইসাইড করা ১১ জন ছাত্রের মধ্যে ১ জনের সুইসাইড নোটঃ

কুমিল্লা বোর্ডের সুইসাইড করা ১১ জন ছাত্রের মধ্যে ১ জনের সুইসাইড নোটঃ • আগামি বছর আবার পরীক্ষা দিবো। মা, বাবাকে বুঝাইছি। সবাই স্বাভাবিক ছিলো, আমিও। কিন্তু একের পর এক প্রতিবেশী সহপাঠীরা মিষ্টি আর কথার খোঁচা নিয়ে হাজির হতে লাগলো। আমার মায়ের মাথা খারাপ হয়ে গেলো। • বাবাও আমাকে গালিগালাজ করলো। যে মা বাবা গতকাল আমার মাথায় হাত রেখে বলছিলো চিন্তা করিস না, বুড়ো হয়ে যাস নাই। সামনের বার আবার পরীক্ষা দিস, বছর যাইতে কয়দিন। অথচ, প্রতিবেশীদের মিষ্টি পেয়ে সেই বাবা মা আমাকে জুতা দিয়ে পিঠলো, শুধু তাই নয়, আমার উপর রাগ করে বাবাপাতের ভাত লাথি মেরে ফেলে দিলো। • অনেক চেষ্টা করেছি লুকিয়ে থাকার, পারলাম না। প্রতিবেশীরা এক হাত জিহ্ববা বের করে অনুশোচনা করলো, শুধু অনুশোচনা নয়, আমার জন্য নাকি আমার মা দায়ী। মায়ের আস্কারা পেয়ে আমি নষ্ট হয়ে গেছি। • তাদের কৈফিয়ত পেয়ে আমার বাবা মাকে উঠানে প্রচুর মেরেছে। মা এখনো বেহুঁশ। মার জ্ঞান ফিরার আগেই পৃথিবীকে বিদায় জানালাম...! ভালো থাকবেন প্রতিবেশীরা...! ভালো থেকো সহপার্ঠী বন্ধুরা...! পিতামাতাদের উপদেশ আমাদের মানায় না...! তবু ও বলছি সমাজ কি বললো...! প্রতিবেশী কি বললো সেটা শুনে, নিজের ছেলে মেয়েকে অপমান করে, মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিবেন না...! মনে রাখবেন ছেলেমেয়েটা আপনার তাদের(প্রতিবেশীর নয়)...….....!!!! নয় সংগৃহীত

Tuesday 28 November 2023

DALO letter

Honnerable Sir/Madame i am ......,,, a refugee , an exiled Film maker and blogger, struggling to get a home since 2017. I have been granted refugee status in May 2017. I requested for social housing in 2017 but it was cancelled in 2018 due to miscommunication with local council. I waited long time but I did not get any update from local council. I contacted with the local council again and they said they haven't got it. Then local council advised me to apply again over online. Hereafter i requested for social housing again in 2019 and I got my Reference number which is 11112....... Now it's been 03 years and 08 months of my file with Logement Social, which is active. I did not get any housing proposition. Every year I renew the application over online. Despite of the Logement social, I also made application to the several organisations including Action logement, Adoma, Loc announce, OPH villjuif and local housing agencies. But I haven't got any response. I have no stable house, today I am here tomorrow another place. I always have to depend on other people to stay their house. This is how last 08 years passed. I had to share the room with 3/4 people which is inhabitable and overcrowded too. As a law abiding resident, after 08 years of living in this situation, I deserve a house. I am working full time on CDI contract. Now I believe I have the full rights to have a housing to avoid the disastrous situation. I humbly request you to accept my housing request and provide me a housing as soon as possible. I really want to write a poem, I want to think about film making. But my desires can't fly. I had the Domiciliation in 93500 Pantin but I can't use it anymore. Few days ago someone allowed me to use his home domiciliation in Paris 75018. Because of this, I am using below mentioned address. ........... I cordially seek your kind attention and consideration on my application as if I can get a home to continue my creative works. I would be grateful if you can consider my application. Sincerely Azimul haque khan

Monday 27 November 2023

ঝরা পাতা,আগাছা এবং দাদা দাদী

একসময় এই উঠনটা পরিস্কার ঝকঝকে ছিলো, ভোরে দাদা ওই বড় ঘরটার দরজার পাশে মোড়া নিয়ে বসে চা খেতেন লাঠি হাতে। আর আমরা ঘুম থেকে না উঠলে লাঠি দিয়ে দরজায় বাড়ি দিতেন আর বলতেন " কত ঘুমাবি, আয় চা মুড়ি খাই" দাদী বলতেন, " থাক না কয়দিনের জন্য বেড়াতে আসছে, বাসায় তো স্কুলের জন্যে ঘুমাতে পারেনা" দাদার ভালো লাগতোনা কখন আমরা উঠবো, কখন আমি এসে বকবক করবো আর দাদা বলবে " তুই আমার চেয়েও বেশি কথা বলিস রে" দাদী আমাদের নামে নামে রাখা মোরগ গুলো এনে মাটির চুলায় রান্না করতো, ওমন মুরগির মাংসর ঘ্রান আর পাইনা। দাদা গাছ গুনতে দিতো, ওই যে তোদের নামে নামে কাঠ গাছ আছে, গোন তো কয়টা। আমি গুনতাম কিন্তু মনে রাখিনি কেনো জানিনা। ঢাকায় ফিরলে প্রতিদিন সকাল রাতে দুইবার ফোন দিতেই হতো , না দিলেই অভিমান করতো। আর এখন এই উঠোনটায়
চলে যাবার পর কত বছর যাইনা মনেও পড়ছেনা।শেষ যেবার গেছিলাম,কোনো এক ভাঙা টিনে দাদার নাম দেখে চোখ ভিজে আসছিলো।এখনো কেউ যদি আমাকে জিজ্ঞেস করে আমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষ কে আমি দাদার কথাই বলবো।

Friday 13 October 2023

গণতন্ত্র মানবাধিকারের নামে পশ্চিমা ভন্ডামি

ফিলিস্তিন-ইস্রায়েল সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে ফ্রান্স সকল ধরণের সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে। যুক্তরাজ্যের পুলিশ ইস্রায়েল বিরোধী সমাবেশকে বাধা দিয়েছে। জার্মান এবং নেদারল্যান্ডস ও প্রতিজ্ঞা করেছে ইস্রায়েল বিরোধী সভা সমাবেশ করতে দেয়া হবেনা।

Saturday 7 October 2023

ফ্রান্সে শহীদ মিনার স্থাপন এবং পরনে নেংটি না থাকার গল্প !!!

ফ্রান্সে শহীদ মিনার স্থাপন এবং পরনে নেংটি না থাকার গল্প !!! ফ্রান্সের প্যারিসের উপকণ্ঠে আজ ০৮ অক্টোবর ২০২৩ উদ্বোধন হতে যাচ্ছে শহীদ মিনার। এই শহীদ মিনার স্থাপন নিয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে "নির্লজ্জ এবং হাস্যকর ক্যাচাল" বেশ কয়েকটি গ্রুপ সৃষ্টি হয়েছে এটি নিয়ে। একপক্ষ দাবি করছে স্থায়ী শহীদ মিনারের "প্রথম প্রস্তাবক" তারা কিন্তু টাকার অভাবে তারা করতে পারেননি। বর্তমানে যারা বাস্তবায়ন করেছেন তাদের প্রতি "প্রথম প্রস্তাবকরা" মারাত্মক ক্ষেপা কারণ কথিত "প্রথম প্রস্তাবকদের" ডাকা হয়নি শহীদ মিনার তৈরির সময়। দ্বিতীয় পক্ষ হলো, ফ্রান্স আওয়ামীলীগ এবং ফ্রান্সের বাংলাদেশ দূতাবাস। তাদের গোস্বা হলো স্থায়ী শহীদ মিনারের বাস্তবায়ন কারীদের প্রতি !!! ফ্রান্স আওয়ামীলীগ এবং ফ্রান্সের বাংলাদেশ দূতাবাসের ক্ষোভের কারণ হলো আনুষ্ঠানিকভাবে তাদেরকে এই প্রকল্পে সংযুক্ত করা হয়নি। দূতাবাসের কেউ একজন আবার সংবাদ সম্মেলন করে কথিত "ইতিহাস বিকৃতির" অভিযোগ এনেছে !!! তৃতীয় পক্ষ হলো, স্থায়ী শহীদ মিনার বাস্তবায়নকারী পক্ষ যারা এই প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে। যতদূর জানা যায়, ব্যবসায়ী কাজী এনায়েতুল্লাহ ইনু এই প্রকল্পে সিংহভাগ অর্থ দান করেছেন। কাজী এনায়েতুল্লাহ ইনু "আয়েবা" নামক একটি সংগঠনের মহাসচিব, উক্ত সংগঠনটি প্রবাসীদের নিয়ে কাজ করে বলে জানা যায়। চতুর্থ আরেকটি পক্ষ হলো, আয়েবা বিরোধী এবং কাজী এনায়েতুল্লাহ বিরোধী পক্ষ !!! তাদের অভিযোগ হলো, কেনো কাজী এনায়েতুল্লাহ ইনু এককভাবে এই প্রকল্পে এতো অর্থ দান করেছেন। শহীদ মিনারের উদ্বোধন নিয়ে আয়েবার ব্যানারে কেনো সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন কাজী এনায়েতুল্লাহ ইনু ? কাজী এনায়েতুল্লাহ ইনু সিংহভাগ অর্থায়ন করাতে চতুর্থ পক্ষ এই প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট হতে পারেনি/হ্যাডম জাহির করতে পারেনি !!! এটা তাদের অন্যতম মনোবেদনার কারণ !!! শহীদ মিনার নাকি অনেকের কাছে আবেগের জায়গা !!! ২১ ফেব্রুয়ারীতে শহীদ মিনারের বেদীতে ফুল না দিলে "চেতনা" জাগেনা, মুখ রক্ষা হয়না । ভাষা আন্দোলন মুক্তি যুদ্ধের অন্যতম স্পিরিট, বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনগুলোর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা। যে বাংলাদেশ রাষ্ট্রে গণতন্ত্র নেই, বাক স্বাধীনতা নেই, ভোটের অধিকার নেই সেই রাষ্ট্রের ভাষা আন্দোলনের প্রতীক নির্মাণ নিয়ে এসব আদিখ্যেতা হাস্যকর। এ যেনো পরনে লুঙ্গী নাই কিন্তু গায়ে জামা পরার তাড়না !!! আজিমুল হক খান প্যারিস ০৮ অক্টোবর ২০২৩

Sunday 24 September 2023

আওয়ামিলীগের ভয় এবং কৈশোর

ছোটবেলায় হাটের বারে বাজার করতে যেতাম। বাড়ি ফিরতে সন্ধ্যা ঘনিয়ে অন্ধকার হয়ে যেতো। গ্রামের মূল রাস্তা থেকে হেঁটে শাখা রাস্তা দিয়ে বাড়ী যেতে হতো। শাখা রাস্তার দুপাশে পুকুর, নারিকেল-সুপারি বাগান এবং কবরস্থান। অন্ধকারে ঝোঁপঝাড়ের পাশে দিয়ে হাটতে ভয় পেতাম, কবরস্থানের পাশে গেলে ভয় আরো বেড়ে যেতো। এই ভয়কে জয় করার চেষ্টা করেছিলাম কৈশোরে। ঝোপঝাঁড়, কবরস্থান অতিক্রম করার সময় চিৎকার করে বাংলা সিনেমার গান গাইতাম, কখনো সূরা-কেরাত পড়তাম জোরে জোরে। কবরস্থান পার হওয়ার সময় গলা শুকিয়ে আসতো। তখন মনে হতো এই বুজি অশরীরী আত্মা এসে আমাকে ধরে নিয়ে যাবে, জীন-ভুত এসে আমার ঘাড় মটকাবে !!! তখন আরো জোরে গান গাইতাম, সূরা-কেরাত পড়তাম। আমি যে ভয় পাচ্ছি সেটা বুজতে দিতামনা। শেখ হাসিনা এবং তার সমর্থকদের অবস্থা আমার কৈশোরের মতো !!! তারা ভয় পায় কিন্তু প্রকাশ করেনা। দৃশ্যমান ভয়কে তারা "চাপাবাজি" "মিথ্যা" "কথিত চেতনা" দিয়ে জয় করতে চায়। আমার ভয় ছিলো অদৃশ্য, কাল্পনিক। কিন্তু আওয়ামীলীগের ভয় বাস্তব, দৃশ্যমান এবং অপ্রতিরোধ্য। আজিমুল হক খাঁন প্যারিস ২৪/০৯/২০২৩

Friday 15 September 2023

শাপলা অভিযান ও অধিকারের সাজা

শাপলা অভিযান ও অধিকারের সাজা ➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖ 🌗 ২০১৩ সালের ৫ই মে রাজধানী ঢাকার মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকায় শাপলা চত্বরে অনুষ্ঠিত কওমি মাদরাসাকেন্দ্রিক 'হেফাজতে ইসলাম' নামের সংগঠনের বিশাল জমায়েতে গভীর রাতে চারপাশের সব আলো নিভিয়ে দিয়ে নিরাপত্তাবাহিনীগুলো "অপারেশন ফ্ল্যাশআউট" ও "সিকিউর শাপলা" নামে যে মিলিত অভিযান চালায় তাতে কতো লোক নিহত হয়েছিল? 🌗 এ বিতর্ক ঘটনার দশ বছর পর ফের উঠছে ঢাকার এক সাইবার আদালত জাতিসংঘের অ্যাফিলিয়েটেড এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাংলাদেশী মানবাধিকার সংস্থা 'অধিকার' এর দু'জন শীর্ষ কর্মকর্তাকে জেল-জরিমানা করার কারণে। এই দণ্ড দেয়া হয়েছে সরকারের আনীত একটা অভিযোগের ভিত্তিতে। সেই অভিযোগটি হচ্ছে, হেফাজতের সমাবেশকে ছত্রভঙ্গ করে তাড়িয়ে দেয়ার দেয়ার অভিযানে ৬১ জন নিহত হয় বলে 'অধিকার' যে পরিসংখ্যান প্রচার করে তা' অতিরঞ্জিত এবং এতে দেশে আরো সহিংসতার উস্কানি দেয়া হয়েছে, আর বিদেশে ক্ষুন্ন করা হয়েছে সরকারের ভাবমূর্তি। 🌗 অর্থাৎ আপত্তি ও বিচার্য বিষয় ছিল ওই অভিযানে নিহতের সংখ্যা এবং এই সংখ্যার বিকৃতিই সাজার কারণ। বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা এই সরকারের আমলে ন্যায়বিচারের বদলে সরকারি দলের লোকদের মামলা-মোকদ্দমা থেকে অব্যাহতি দেয়া এবং সরকারের অপছন্দের লোকদের সাজা দেয়াকেই তাদের কর্তব্য বলে বেছে নিয়েছে। না হলে প্রশ্ন করা যেতো, মামলার রায় দেয়ার তারিখ পিছিয়ে পার্লামেন্টে পুরনো সাইবার অপরাধ আইনকে নতুন আইন দিয়ে প্রতিস্থাপিত করার পরদিন কেন পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছিল? প্রশ্ন করা যেতো, নিহতের সংখ্যা 'অধিকার'-এর প্রচারিত ৬১ অতিরঞ্জিত হয়ে থাকলে প্রকৃত সংখ্যা কতো? এই নিহতের প্রকৃত হিসেব কি আদালত নিয়েছে বা চেয়েছে সরকারের কাছে? নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ও পরিচয় নির্ভুল ও নিখুঁতভাবে নিরূপন না করে কিভাবে আদালত 'অধিকার'-এর প্রচারিত সংখ্যাকে অতিরঞ্জিত বলে নিশ্চিত হয়ে সাজার রায় দেয়? 🌗 বাংলাদেশে ন্যায়বিচার থাকলে আরও অনেক গুরুতর প্রশ্ন তোলা যেতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাপলা চত্বেরের ওই অভিযানের পর পার্লামেন্টে দাবি করেছিলেন, সেদিন একটি গুলিও ছোঁড়া হয়নি এবং একজনও নিহত হয়নি। সকৌতুকে ও সহাস্যে তিনি বলেছিলেন, হেফাজতের লোকেরা রাতের বেলা শাপলা চত্বরে গায়ে লাল রঙ মেখে মৃতের ভান করে শুয়ে ছিল। পুলিস গিয়ে যখন তাদের ধরে তোলার চেষ্টা করে তখন সব লাশ উঠে দৌড় মারে। 🌗 আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম অভিযান শুরুর আগে অনতিবিলম্বে শাপলা চত্বর ছেড়ে না গেলে হেফাজতকে 'গর্তে ঢুকিয়ে দেয়ার' হুমকি দেন। ওদিকে হেফাজতের সমাবেশ থেকে বলা হয় যে, তাদের আমির মৌলানা শাহ্ আহমদ শফিকে সমাবেশে আসতে দিলে তারা তাঁর নেতৃত্বে মোনাজাত করে চলে যাবেন। কিন্তু তাদেরকে সে সুযোগ দেওয়া হয়নি। মৌলানা শফিকেও আসতে দেওয়া হয়নি সমাবেশস্থলে। মধ্যরাতে সেখানে পুলিস, র‍্যাব সহ বিভিন্ন নিরাপত্তাবাহিনী সশস্ত্র হামলা চালায়। সেই দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করতে থাকায় দুটি টিভি চ্যানেল - দিগন্ত টিভি ও ইসলামিক টিভির প্রথমে সম্প্রচার বন্ধ এবং পরে নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়। 🌗 শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশ ছিল মূলতঃ শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের পালটা প্রতিক্রিয়া। হেফাজতের অভিযোগ ছিল যে, নাস্তিক ব্লগারদের উদ্যোগে শাহবাগে যে গণজাগরণ মঞ্চ বসানো হয়েছে তারা আল্লাহ্, রাসুল ও ইসলামের বিরুদ্ধে অশ্লীল প্রচারণায় লিপ্ত। এদেরকে শাস্তি দেওয়ার জন্য ধর্মদ্রোহ বা ব্লাসফেমি আইন প্রণয়ন সহ ১৩ দফা দাবিতে তারা শাপলায় এ সমাবেশ করে। গণজাগরণ মঞ্চ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ চত্বর ও সড়ক অবরোধ করে শাহবাগে টানা তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে রাতদিন তাদের অবস্থান চালিয়ে গেলেও পুলিস তাদের নিরাপত্তা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীবর্গ ও শাসক দলের নেতারা তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে জমায়েত শুরু হবার কয়েক ঘন্টার মধ্যে হেফাজতকে শাপলা চত্বর থেকে উৎখাত করে দেয়ার জন্য সরকার বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে সশস্ত্র আক্রমণ চালিয়েছে। 🌗 ঘটনার কয়েকদিন পর ১৩ মে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকা লাল ব্যানার হেডলাইনে প্রকাশিত এক সংবাদে জানায়, শাপলা চত্বরের ওই অপারেশনে প্রায় ১ লাখ ৫৫ হাজার রাউন্ড গোলাবারুদ খরচ হয়েছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের হিসাবে ৮০ হাজার টিয়ার শেল, ৬০ হাজার রাবার বুলেট, ১৫ হাজার শটগানের গুলি এবং ১২ হাজার সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়। এর বাইরে পিস্তল এবং রিভলবার জাতীয় ক্ষুদ্র অস্ত্রের গুলি খরচ হয়েছে মাত্র সাড়ে ৩০০ রাউন্ড। সরকারের ৫ মের অপারেশনে র‌্যাবের ১ হাজার ৩০০ সদস্য, পুলিশের ৫ হাজার ৭১২ এবং বিজিবির ৫৭৬ জন সদস্য সরাসরি অংশ নেয়। এর বাইরে বিজিবির ১০ প্লাটুন ছাড়াও র‌্যাব এবং পুলিশের বিপুলসংখ্যক সদস্য ‘স্টাইকিং ফোর্স’ হিসেবে তৈরি ছিল। রাত ২টা ৩১ মিনিটে মূল অপারেশন শুরু হলেও রাত ১২টার পর থেকেই মূলত আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা তিন দিক থেকে ধীরে-ধীরে শাপলা চত্বরের দিকে এগুতে থাকে। 🌗 হেফাজত শাপলা চত্বরে তাদের অনুমোদিত সমাবেশে আসার পথে বিভিন্ন পয়েন্টে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মীরা তাদের বাধা দেয় এবং এতে বেশ কিছু জায়গায় সংঘর্ষ হয়। ১০ মে সরকারি তথ্যবিবরণীতে বলা হয় যে, পাঁচ মে সারাদিন ধরে হেফাজত সন্ত্রাস চালিয়েছে এবং শাপলা চত্বরে হেফাজতের মঞ্চের পাশে কাফনে মোড়া চারটি লাশ পাওয়া যায়। পুলিসের হিসেবে সেদিন নিহতের সংখ্যা পথচারী ও পুলিস সহ ১১ জন বলে উক্ত তথ্যবিবরীতে উল্লেখ করা হয়। 🌗 স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় থেকে জারি করা ওই একই তথ্যবিবরণীতে বলা হয় : "শাপলা চত্বর থেকে হেফাজতে ইসলামের লোকজনকে সরিয়ে দিলে তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কে আবারও জমায়েত হতে থাকে। পরদিন ৬ মে ভোর থেকেই তারা রাস্তায় ব্যারিকেড বসায়। সেই সাথে নির্বিচারে রাস্তার পাশে রাখা গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করতে থাকে। এরই মধ্যে পূর্বনির্দেশ মতো বিএনপি-জামায়াত কর্মীরাও ধ্বংসযজ্ঞে যোগ দেয়। নারায়ণগঞ্জ জেলার কাঁচপুর, সাইনবোর্ড, শিমরাইল, সানারপাড়, কুয়েত মার্কেট ও মাদানীনগর এলাকায় উন্মত্ত ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ভয়াবহরূপ ধারণ করে। তারা মাদানীনগর মাদ্রাসাকে কেন্দ্র করে আশপাশের মসজিদের মাইক ব্যবহার করে চরম উত্তেজনাকর গুজব ছড়িয়ে লোক জড়ো করে কর্তব্যরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাদের পরিকল্পিত সংঘবদ্ধ আক্রমণ প্রতিরোধ করতে গিয়ে ২ জন পুলিশ, যথাক্রমে নায়েক ফিরোজ ও কনস্টেবল জাকারিয়া এবং ২ জন বিজিবি সদস্য যথাক্রমে শাহআলম ও লাভলু গুরুতর আহত হয়ে লুটিয়ে পড়ে এবং হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে উন্মত্ত সহিংসতার ফলশ্রুতিতে ১৩ জন মৃত্যুবরণ করেছে মর্মে জানা যায়। ঘটনা আরও চরম আকার ধারণ করতে থাকলে অধিকসংখ্যক ফোর্স সমাবেশ ঘটিয়ে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।" 🌗 সরকারের জারি করা তথ্যবিবরণী অনুযায়ী হেফাজত সংশ্লিষ্ট সহিংসতায় দু'দিনে নিহতের সংখ্যা পুলিশ, বিজিবি, পথচারী সহ ২৪ জন নাকি সব মিলিয়ে ১৩ জন তা বুঝা মুশকিল। দ্বিতীয় দিনে সংঘর্ষে আহত দু'জন পুলিস ও দু'জন বিজিবি সদস্যের চার জনই মারা গেছেন, নাকি দু'জন তাও পরিস্কার নয়। এই চার জনের সংক্ষিপ্ত নামোল্লেখ ছাড়া সরকারি প্রেসনোটে নিহতদের আর কারও নামধাম বা পরিচয় দেয়া হয়নি। এর পাশাপাশি বিভিন্ন সংবাদ-মাধ্যম তাদের নিজস্ব সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী নিহতের বিভিন্ন সংখ্যার কথা উল্লেখ করে। তবুও প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীরা, সরকারী বিভিন্ন কর্মকর্তা ও দলীয় নেতা "কোনও গুলি হয়নি, কেউ নিহত হয়নি" বলে একটানা প্রচারণা চালিয়ে গেছেন। তথ্যের এই বিকৃতির জন্য আদালত তাদের কাউকে কোনও ভাবে দায়ী করেছেন বা সাজা দিয়েছেন কিনা - এই প্রশ্নও তোলা যেতো দেশের বিচারব্যবস্থা আইন অনুযায়ী চললে। 🌗 শাপলার ঘটনার পর ঢাকা সহ সারা দেশে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ এবং বিভিন্ন এলাকায় ঘোষিত-অঘোষিত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। সংবাদ-মাধ্যমের জন্যও এক ভীতিপ্রদ অবস্থা তৈরি করা হয়। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে যারা সমাবেশে যোগ দিতে এসেছিলেন তাদের ছত্রভঙ্গ করে তাড়িয়ে দেয়ার পর তারা নানা দিকে ছিটকে পড়েন। অনেকে নিজ নিজ মাদরাসা বা বাড়িতে ফেরার বদলে আতঙ্কে নানা জায়গায় আত্মগোপন করে থাকেন। ঢাকার সমাবেশে হামলা ও হতাহতের সংবাদ পেয়ে অনেকের স্বজনেরা ছিলেন উৎকণ্ঠিত। যারা কয়েকদিনেও ফেরেননি সেই নিখোঁজদের স্বজনেরা ধরেই নিয়েছিলেন তারা হয়তো নিহত হয়েছেন। 🌗 এমন পরিস্থিতিতে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা নিরূপন করে একটি তালিকা তৈরি করা খুবই দুষ্কর ছিল। 'অধিকার' তাদের প্রাথমিক তদন্তের আলোকে নিহতের সংখ্যা ৬১ বলে উল্লেখ করে। এতে ত্রুটি থাকা অসম্ভব নয়। আরো যাচাই বাছাই এবং চেক ও ক্রসচেকের মাধ্যমে এ ব্যাপারে একটা নির্ভুল তালিকায় অবশ্যই পৌঁছা যেতো। কিন্তু সরকারের উদ্দেশ্য তা ছিল না। ৬১ জন নিহতের সংখ্যাকে অতিরঞ্জিত ও উদ্দেশ্যমূলক আখ্যায়িত করে সরকার হামলে পড়ে 'অধিকার' এর উপর। 🌗 শাপলা সমাবেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনীসমূহের উৎখাত অভিযানের পর হেফাজত হাজার হাজার আলেম ও মাদরাসা ছাত্র নিহত হয়েছে বলে অভিযোগ করে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিপুল সংখ্যক লোক নিহত হয়েছে বলে দাবি করে। বিদেশী একাধিক সংবাদ-মাধ্যমে রাতের অন্ধকারে বিভিন্ন গোরস্তানে পুলিসের তদারকিতে গোপনে অনেক লাশ দাফনের খবর প্রচারিত হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় বীভৎস সব চিত্র ও তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। সর্বত্র নারকীয় এক হত্যাযজ্ঞের গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে 'অধিকার'-এর মতন একটি মানবাধিকার সংস্থা তাদের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে ৬১ নিহতের কথা উল্লেখ করাটা ছিল সরকারের জন্য পরম স্বস্তিদায়ক। এতে গুজবের বাড়াবাড়ি স্তিমিত হয়ে আসে। এই পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ও পরিচয় নিশ্চিত করে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে পারতো। কিন্তু তা না করে তারা উলটো পথে হাঁটা দেয়। 🌗 ১০ জুলাই তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে অধিকার’র কাছে শাপলা চত্বরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহত হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের পরিচয়সহ প্রকাশিত তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদন চাওয়া হয়। এর জবাবে অধিকার এক চিঠিতে বলে, অবশ্যই তারা এসব তথ্য দিতে সম্মত আছে। তবে ভিকটিম ও সাক্ষীর নিরাপত্তার আইন বাংলাদেশে না থাকায় সরকারকে তিনটি বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। আর এগুলো নিশ্চিত করলে অধিকার সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে। 🌗 অধিকার’র শর্ত তিনটি ছিল- ১. নিহতদের তালিকা অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে যেসব মানবাধিকার সংগঠন কাজ করছে তাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে অবিলম্বে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন করা। ২. তথ্য প্রদানকারী, ভিকটিম, তাদের পরিবার এবং সাক্ষীদের জন্য সুরক্ষার সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দেয়া ও সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ৩. এই তথ্য প্রদানকারী, ভিকটিম, তাদের পরিবার এবং সাক্ষীদের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটবে না সেই ব্যাপারে নিশ্চয়তা দেয়া। 🌗 অধিকার চিঠিতে বলে, সরকার এসব বিষয়ে নিশ্চিত করলে তারা অবশ্যই সেই কাঙ্ক্ষিত কমিশনের কাছে প্রাসঙ্গিক সকল তথ্য সরবরাহ ও সহযোগিতা করবে। উল্লেখিত বিষয়গুলোর ব্যাপারে নিশ্চয়তা বিধান ছাড়া নিহতদের নাম, ঠিকানাসহ পূর্ণাঙ্গ তালিকা সরবরাহ করা দেশে ও আন্তর্জাতিকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনে সহায়তা বলে বিবেচিত হবে। মানবাধিকার সংগঠন হিসেবে অধিকার’র পক্ষে এই দায় নেয়া সম্ভব নয়। 🌗 অধিকার আরো বলে যে, যদি সরকার কোনো তালিকা করে থাকে তাহলে আমরা পরস্পরের সঙ্গে তালিকা মিলিয়ে দেখতে পারি। সরকার আন্তরিক হলে অধিকার সব রকম সহযোগিতা প্রদানে আগ্রহী। 🌗 অধিকারের চিঠিতে বলা হয়, সরকার বলে আসছে যে, ৫ মে দিবাগত রাতে কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। এ নিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদ, জাতীয় সংসদে সরকারদলীয় নেতৃস্থানীয় সংসদ সদস্য এবং সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য তুলে ধরে 'অধিকার' বলে যে, যেখানে সরকার নিজেই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত এবং কোনো প্রাণহানি হয়নি বলে বক্তব্য দিচ্ছে সেই পরিস্থিতিতে এই ঘটনা সম্পর্কে অনুসন্ধান ও নিহতের প্রকৃত সংখ্যা জনগণকে জানানোর বিষয়ে সরকার আন্তরিক নয় বলেই প্রতীয়মান হয়। 🌗 অধিকার তাদের চিঠিতে আরো বলে, নিহতদের পরিবারের সদস্যরা ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। গত ৫ মের ঘটনায় অন্তত: ১,৩৩,৫০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামী করে ২৩টি মামলা দায়ের করেছে সরকার। ভিকটিম পরিবারগুলোর আশঙ্কা তাদের পরিবারের সদস্যদের সরকার হয়রানি করতে পারে এবং এই কারণে তারা জনসমক্ষে কথা বলতে ভয় পাচ্ছেন। মানবাধিকার সংগঠন হিসেবে ভিকটিমদের নিরাপত্তা বিধান আমাদের কর্তব্য। সুতরাং ভিকটিমদের পরিবারের নিরাপত্তার স্বার্থে দায়িত্বশীল মানবাধিকার সংগঠন হিসেবে অধিকার উপরোক্ত শর্তগুলোর নিশ্চয়তা পেলে সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে রাজি আছে। 🌗 অধিকার তাদের প্রকাশিত প্রাথমিক তথ্যানুসন্ধান রিপোর্টের কপি তথ্যমন্ত্রীকে সরবরাহ করে। 🌗 এরপর অধিকারের বিরুদ্ধে মামলা এবং আদিলুর রহমান খান ও নাসিরউদ্দিন এলানের গ্রেফতার ও কারাবাসের ঘটনা ঘটে। অধিকারের বিরুদ্ধে সরকারী প্রোপাগান্ডা অভিযান, নিবন্ধন বাতিলসহ নিবর্তনমূলক নানান ব্যবস্থা চলতে থাকে। অবশেষে দশ বছর পর সরকারি দলের এক্টিভিস্ট হিসেবে তৎপর ব্যক্তির কোর্টে এক চরম বিতর্কিত আইনে আদিল ও এলানের জেল ও জরিমানার রায় দেয়া হয়েছে। 🌗 এই রায়ের বিরুদ্ধে দুনিয়ার সকল মানবাধিকারবাদীরা সোচ্চার হয়েছেন। রাশিয়া, বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া, চীন, ইরান সহ বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার আন্দোলনকারীদের জেল-জরিমানা ও সাজার ঘটনা বিরল না হলেও বাংলাদেশে এমন ঘটনা ইতিহাসে প্রথম। দেখা যাক, শেষ অব্দি কোথাকার জল কোথায় গিয়ে গড়ায়।◾

Thursday 7 September 2023

ডঃ ইউনুস এবং শ্রমিকদের “লাভ্যাংশ”

ইউনূস শ্রমিকদের ঠকিয়েছেন। কীভাবে ঠকিয়েছেন? তিনি শ্রমিকদের লাভ্যাংশ দেন নাই। Let’s unpack that argument. শ্রমিকদের “লাভ্যাংশ” নিয়ে কোনো আইডিয়া আছে রে, বেকুবের দল? এই লাভ্যাংশ মানে প্রভিডেন্ট ফান্ড বা রিটায়ারমেন্ট ফান্ড না। এই লাভ্যাংশ হলো কোম্পানির প্রফিট শেয়ারিং। অর্থাৎ, একটা কোম্পানির যত প্রফিট হয়, তাঁর ৫ শতাংশ কোম্পানির সকল কর্মীর মধ্যে বিভিন্ন ভাবে বিতরণ করার একটা প্রোগ্রেসিভ ল’ বাংলাদেশে আছে। এই ল’ পৃথিবীর কোন কোন দেশে আছে — আমি জানি না। আমেরিকাতে যে নাই, এটা নিয়ে আমি একশত ভাগ নিশ্চিত। প্রফিট শেয়ারিং-এর ধারণা উন্নত বিশ্বের গুটিকয়েক কোম্পানিতে নিজ উদ্যোগে প্রচলিত আছে; অনেক বুদ্ধিজীবী একে বৈষম্য নিরোধনের উপায় হিসেবে তুলে ধরছেন ইদানীং; কিন্তু পৃথিবীর খুব কম দেশই আইন করে প্রফিট-শেয়ারিং-এর বিধান রেখেছে। এবং, বাংলাদেশের অনেক “ভালো” আইনের মতো, এই আইনও কাগজে আছে, কিন্তু বাস্তবে খুব কমই অনুসৃত হয়। বাংলাদেশে কিছু বিদেশী কোম্পানি, বিদেশী-বিনিয়োগের ফার্মা কোম্পানি, কিছু ব্যাংকে (সব বছরই নয়) কর্মীদের “প্রফিট বোনাস” হিসেবে লাম্প সাম একটা টাকা দেয়া হয় বলে অনেকে কমেন্টে লিখেছেন। অ্যানিওয়েজ, আমি আমার জীবনে বাংলাদেশে ৩টা বহুলপরিচিত কোম্পানিতে কাজ করেছি। আমার সঙ্গে এদের কেউই ১ পয়সা প্রফিট শেয়ার করেনি; আমার জানামতে কোনো এমপ্লয়ীর সঙ্গেই কেউ করেনি, করেও না। কিন্তু ইউনূসকে করতেই হবে। কারণ, ইউনূস মঙ্গল গ্রহ থেকে এসেছেন — সুতরাং এই গ্রহের কারও বেলায় ওই নিয়ম প্রযোজ্য না হলেও, তাঁর বেলায় হবে! আচ্ছা, তারপর আসেন। এখন এখানে মজার বিষয় হলো, যেই কোম্পানির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়েছে, সেই কোম্পানি হলো একটা নন-প্রফিট কোম্পানি। নাম হলো গ্রামীন টেলিকম। এই কোম্পানির মালিক ইউনূস নন; তিনি কোম্পানির বোর্ডের চেয়ারম্যান। আইনগতভাবেই নন-প্রফিট বা অলাভজনক কোম্পানির কেউ মালিক হতে পারেন না। কিন্তু কোম্পানির মালিক ইউনূস না হলেও, কর্মীদের সঙ্গে লাভ্যাংশ শেয়ার না করার অভিযোগ উঠে ইউনূসের বিরুদ্ধে; গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে নয়। আচ্ছা, তারপর আসেন। এটা নিয়ে গ্রামীন টেলিকম ও কোম্পানির কর্মীদের মধ্যে একটা বিরোধ দেখা দেয়। কারণ হলো গ্রামীন টেলিকম সেই শুরুর দিকে গ্রামীনফোনের ৩৪% শেয়ারের মালিক। আর সেই সূত্রে নব্বইয়ের দশক থেকে জমতে জমতে তাদের মোট রেভিনিউ এখন প্রায় ১-২ বিলিয়ন ডলারের সমান; বাংলাদেশি অর্থে এখন ১০-২০ হাজার কোটি টাকা। বিরাট অংকের টাকা! এই টাকা শুধুমাত্র দাতব্য খাতে ব্যয় করার বিধান রেখেই গ্রামীন টেলিকম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ইউনূস কী বোকা দেখেন! সেই ইউরোপ থেকে ফান্ড এনে গ্রামীনফোনে বিনিয়োগ করিয়েছিলেন। কিন্তু মালিকানা দিয়েছেন একটা নন-প্রফিটকে। নিজের বা নিজের পরিবারের নামে মালিকানা রাখেন নাই। কিন্তু গ্রামীন টেলিকমের নিজস্ব কোনো প্রোডাকশন বা ইউটিলিটি নাই। নব্বইয়ের দশকে তারা গ্রামেগঞ্জে সস্তায় নোকিয়া ফোন ডিস্ট্রিবিউট করার জন্য ৩০০ কর্মী নিয়োগ দিয়েছিল। কিন্তু এরপর তো সবার হাতে হাতে ফোন চলে আসলো, ওই ব্যবসাও আর রইলো না। এরপর থেকে তাদের কর্মীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৬০ জন। যারা শুধু অফিস পরিচালনার কাজ কর্মই করতেন — যেহেতু কোম্পানির সমস্ত আয় ছিল গ্রামীনফোনের ডিভিডেন্ড থেকে। এখন ১-২ বিলিয়ন ডলার কোম্পানির এমপ্লয়ী মাত্র ৬০ জন বা সাবেক শ’ খানেক; আর এরাই চাইলেন ৫% প্রফিট। আপনি মঙ্গলগ্রহের আইন বাদ দেন। একেবারে কমনসেন্স খাটায়ে বলেন যে একটা ১-২ বিলিয়ন ডলারের কোম্পানি, যাদের কোনো নিজস্ব প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নাই, যাদের সমস্ত প্রফিট আসে আরেক কোম্পানির শেয়ার থেকে প্রাপ্ত ডিভিডেন্ড থেকে, সেই কোম্পানির এত বড় ডিভিডেন্ডের অঙ্ক কি গুটিকয়েক কর্মচারি ডিজার্ভ করেন? ইউটোপিয়ায় হয়তো করে থাকতে পারেন। আচ্ছা, এরপর আসেন। এমপ্লয়ীরা যখন ওই টাকা চাইলেন, কোম্পানির লইয়াররা বললেন, এই টাকা দেওয়া যাবে না; কারণ নন-প্রফিট কোম্পানি হিসেবে কোম্পানির লাভের অঙ্ক কাউকে দেওয়া যাবে না। আইনে বলা আছে, শুধু দাতব্য কাজেই এই অর্থ ব্যয় করা যাবে। ইফ ইউ আস্ক মি, দ্যাট’স অ্যা ভেরি লেজিটিমেট লিগ্যাল পজিশন। অর্থাৎ, গ্রামীন টেলিকমের কর্মচারিরাই বরং কোম্পানির দাতব্য কাজের সুবিধাভোগীদের হক মারতে চাইছেন। কিন্তু এমপ্লয়িরা গোস্বা করলেন — মামলা করার উদ্যোগ নিলেন। একেবারে ক্ল্যাসিক কোম্পানি ভার্সাস এমপ্লয়ী কেইস। ইউনূসের এত রাজনৈতিক চাপ সত্ত্বেও তিনি আইনি পথে বিষয়টা মোকাবিলার সিদ্ধান্ত নিলেন। অথচ, তিনি চালাক হলে তখনই ৫-১০ কোটি টাকা দিয়ে বিষয়টা মিটমাট করে ফেলতে পারতেন। বিষয়টা এতদূর আসতে দিতেন না। মামলা হলো। সরকারের লেবার পরিদর্শকরাও মামলা করলেন। গ্রামীণ টেলিকমের আইনজীবীদের আরেকটা শক্ত যুক্তি ছিল, গ্রামীনফোনের শেয়ার থেকে যেই ডিভিডেন্ড গ্রামীন টেলিকম পেয়েছে, সেটা তো টেলিকমের কর্মীদের হক নয়; সেটা হলো গ্রামীনফোন কর্মীদের হক। কেউ যদি ওই অর্থ প্রাপ্য হন, সেটা হবেন গ্রামীনফোনের কর্মীরা; টেলিকমের নয়। এমপ্লয়ীরা জানতেন, তারা হেরে যাবেন দুই যুক্তিতে। তারপর তারা একটা শয়তানির আশ্রয় নিলেন। তারা কোম্পানি আদালতে মামলা করলেন যে, যেহেতু গ্রামীণ টেলিকমের সস্তায় নোকিয়া ফোন বিক্রয়ের প্রকল্প আর নাই, তাহলে কোম্পানি হিসেবে গ্রামীন টেলিকমের আর উপযোগিতা নাই; ফলে একে বিলুপ্ত করে দেওয়া হোক। এবং, কোম্পানি কোর্ট সেই যুক্তি আমলে নেয়। অর্থাত, আপনার আদরের “শ্রমিকরা” সিদ্ধান্ত নিলেন আমরা যেহেতু ফল খাইতে পারুম না, ফলে পুরা ফলগাছ কাইটা ফেলবো! এইখানে তারা আর কী পাবে আর না পাবে, সেটার প্রশ্ন নাই। তারা জানে ইউনূস চাপে আছে; অতএব আরও চাপ কেমনে দেওয়া যায়! একেবারে আদর্শ ”শ্রমিক“ যাদের বলে আরকি। আচ্ছা, এরপর আসেন। এই ঘটনার পর গ্রামীন টেলিকম বুঝে যায় আইনি পথে তাদের জয়ের সম্ভাবনা নাই। কোম্পানির অস্তিত্ব নিয়ে টানাটানি। তখন তারা ইউনিয়নের সঙ্গে দরকষাকষিতে বসেন। এবং, সমঝোতা অনুযায়ী গ্রামীন টেলিকমের লইয়াররা শ কয়েক কর্মীকে ৪৩৬ কোটি টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত দেয়। প্রত্যেক কর্মীর ভাগে প্রায় ১-২ কোটি টাকা করে পড়েছে! জ্বি, আগের লাইনটা আবার পড়েন। আপনার সারাজীবনের চাকরির বেতন ২ কোটি টাকা হবে তো? ৫% প্রফিট থেকে ২ কোটি তো দূরে থাক। এই হলো আপনার শ্রমিকের “হক” যেইটা গ্রামীন টেলিকমের কর্মচারীরা প্রাপ্য না হয়েও পেয়েছে; যেইটা আপনি আপনার প্রাপ্য শ্রমিককে দেওয়ার কথা কল্পনাও করতে পারেন না; আর যেইটা আপনি নিজেও কখনও পাওয়ার কথা স্বপ্নেও ভাবতে পারেন না। আচ্ছা, এরপর আসেন। সমঝোতা হওয়ার পর, একটা যৌথ অ্যাকাউন্টে টাকাটা সাথেসাথে ডিসবার্স করে দেওয়া হয়। আদালত থেকে এই সেটেলমেন্ট অ্যাপ্রুভ করা হয়। মামলা ডিসমিস! আমি এমনও শুনেছি যে, কর্মীরা ওই টাকা বুঝে পাওয়ার সাথে সাথেই দুয়েকটা করে অ্যাপার্টমেন্ট কিনে ফেলেন! এদিকে তখন সরকারের টনক নড়ে! আরে পাখি তো খাঁচা ছাইড়া যাইতাছে গা! এতদিন পর্দার আড়ালে খেললেও, সরকার একেবারে নগ্ন হয়ে উঠে। যেই শ্রমিকদের হক নিয়ে সরকারের এত হাহাকার, সেই সরকার ঘোস্বা করলো কেন তারা কোটি কোটি টাকা নিয়ে সন্তুষ্ট হইলো! তারা কেন মামলা অব্যাহত রেখে সরকারের গুটিতে পরিণত হইলো না! এদিকে পত্রিকায় খবর আসে যে ইউনূস নাকি ঘুষ দিয়া মামলা দফারফা করাইছেন! অর্থাৎ, যেই “হক” ইউনূস তাঁর শ্রমিকদের দেন নাই বলে আপনি চিৎকার করতেছেন, সেই “হক” রাতারাতি হয়ে গেল “ঘুষ”। আপনাদের ন্যারেটিভ নির্মানের দক্ষতা দেখে আপনাদেরই গর্ব হওয়া উচিৎ! খুব দ্রুতই ডিবি থেকে কর্মীদের নেতা দুইজনকে গুম করা হয়। তাদেরকে টর্চার করা হয়েছে, এমন অভিযোগও আমরা শুনেছি। কর্মীদের যেই লইয়ার তাদেরকে ৪৩৭ কোটি টাকার সেটেলমেন্ট পাইয়ে দিলেন, সেই লইয়ারও নাকি ঘুষ পাইছেন! অথচ, সেই লইয়ার তাঁর পূর্বচুক্তি অনুযায়ী সেটেলমেন্টের একটা অংশ পেয়েছে মাত্র। একেবারে আইনগত নথিপত্র অনুযায়ী হওয়া ও সর্বোচ্চ আদালত অনুমোদিত একটি বৈধ সেটেলমেন্ট রাতারাতি হয়ে গেল ঘুষ! এই হলো মঙ্গলগ্রহের আইন আর বিধান! আরও আইন-কানুনের গল্প শুনবেন? যেই হাইকোর্ট সেটেলমেন্ট অ্যাপ্রুভ করলো, সেই হাইকোর্টই ক’ দিন বাদে সেই সেটেলমেন্ট বাতিল করলো! খুবই স্বাধীন কোর্ট আপনাদের! ডিসমিস হয়ে যাওয়া মামলা পুনরায় চালু হলো; গুম হওয়া শ্রমিক নেতা বের হয়ে এসে “স্বীকারোক্তি” দিলেন ইউনূসের বিরুদ্ধে; আরও ডজন খানেক মামলা যোগ হলো রাতারাতি! সেইটা চলতে থাকলো বছরের পর বছর। আচ্ছা, এরপর আসেন। এখানে আয়রনিক ঘটনা হলো, ওই ঘটনার পর ইউনূসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি কমিশন মানি-লন্ডারিং-এর অভিযোগ আনে। লেবার ল’ অনুযায়ী, ৫ শতাংশ লাভ্যাংশের একটা অংশ কর্মীদের ফান্ডে রাখতে হয়, একটা অংশ সরকারি ফান্ডে রাখতে হয়, বাকিটা কর্মীদের দিতে হয়। তো এই ৪৩৭ কোটি টাকার একটা অংশ, ২৬ কোটি টাকা, কর্মীদের ফান্ড অর্থাৎ ইউনিয়নের ফান্ডে যায়৷ এই টাকাকে আপনারা বলেছেন ইউনিয়নকে দেওয়া ঘুষ। আর দুদক বলেছে মানি লন্ডারিং! অর্থাৎ, ইউনূস শ্রমিকের হক “পরিশোধ” করার পর সেটা হলো পাচার! একেবারে দো-ধারি তলোয়ার! আচ্ছা, শেষবারের মতো আসেন। ২০২১ সালের দিকে ইউনূসের সঙ্গে আমার প্রথম ও শেষবারের মতো আলাপ হয়। ওই সময় পর্যন্ত তাকে দেখে মনে হয়েছে তিনি সেটেলমেন্ট আর পরিস্থিতি নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট। তিনি আইনি পথেই হাঁটতে চান। আমি আর আমার আরেক সাংবাদিক সহকর্মী বিষয়টা নিয়ে খুবই বিস্মিত হয়েছিলাম। তো পরিস্থিতি এরপর থেকে এতই বাজে দিকে গেছে যে ইউনূসের মতো চরম অপ্টিমিস্টিক মানুষও ফিল করতেছেন যে, তাকে এবার গ্রেপ্তারই করা হবে! অথবা, তাঁর মিত্ররা পুরো বিষয়টা টেকওভার করেছেন। তারা বুঝেছেন যে, বিষয়টা ইউনূসের অপ্টিমিজমের উপর ছেড়ে রাখলে, ইট উইল বি টু লেইট। এরপর বারাক ওবামা থেকে শুরু করে বিশ্বের বেশিরভাগ জীবিত নোবেল পুরষ্কারজয়ী যখন বিবৃতি দেওয়া শুরু করলেন যে ইউনূসের বিরুদ্ধে বিচারিক হয়রানি চলছে, তখন আপনি গোস্বা করলেন! আপনাদের সাধের সোহাগা বিচার বিভাগ নিয়ে এত বড় কথা! :-)

Thursday 17 August 2023

বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছিল।

সাইদীর জানাজায় মানুষের ঢল নামায় আজব এক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে পুরা বাংলাদেশে। উনার জন্য ইন্নালিল্লাহি পড়ায় বিতর্কে পরেছেন হুজুর স্কুলের শিক্ষক থেকে আওয়ামী লীগের হাজারো নেতা কর্মীরা । আমিও ক্ষমা করে দোয়া চেয়ে বিরোধের জন্ম দিয়েছি। সবার এখন একটাই প্রশ্ন কেন বঙ্গবন্ধুর জানাজায় সামান্য কিছু মানুষ হয়েছিলো? স্বাধীনতা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা বাদ দিলাম। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি দেশকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারেন নি। বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তা এতটাই নীচে নেমে গিয়েছিল যে 'তার নিজের দলের নেতারা মার্কিন দূতাবাসে বারবার গিয়েছিল বঙ্গবন্ধুর ব্যাপারে একটা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।' এবার আসি দেশের জনগণের প্রতিবাদ নিয়ে। নিজ দলীয় লোকদের লুটপাট, রাজনৈতিক দলগুলোকে বিলুপ্তকরণের কারণে অনেক ক্ষেত্রেই তার উপর মানুষের একটা ক্ষোভ জন্মায়। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে দেশের ইতিহাসে সবথেকে ভয়ঙ্কর দুর্ভিক্ষ হয়েছিল যেখানে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করেছিল। সারা দেশে শুধু হাহাকার চলতেছিল। দলীয় এবং সরকারি লোকদের কিছু না হলেও এর প্রভাব দেশের সাধারণ জনগণ ভালো করেই টের পেয়েছিল যার ক্ষোভ গিয়ে পড়েছিল বঙ্গবন্ধুর চরম অব্যবস্থাপনার উপরে। এক্ষেত্রে আওয়ামীলীগের লোকেরা যে যুক্তিটি সবথেকে বেশি দাঁড় করায় তা হচ্ছে সারা দেশে কারফিউ জারি ছিল। এটা স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধুর অজনপ্রিয়তাকে ঢাকতে তা কেবলই একটা প্রোপাগান্ডা মাত্র। তারা এটা ভুলে যাচ্ছেন যে এই অভ্যুন্থান সেনাবাহিনীর মাত্র ২ টি ইউনিটের ৯০০ জন সৈন্য অংশগ্রহণ করেছিল তাও কিছু না বুঝে। বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তা এতটাই নীচে নেমে গিয়েছিল যে তার মৃত্যুর পর ঢাকা শহরে একটা প্রতিবাদী মিছিল পযর্ন্ত বের হয় নি। মূলত, তার সুবিধাভোগী ব্যক্তিবর্গরা একটু ভয় পেয়েছিলেন। সেসময়ের কিছু কথা হুবহু তুলে দিলাম। লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব) এম এ হামিদ সাহেবের ভাষ্যমতে, " বঙ্গবন্ধুর বাড়ি পরিদর্শনের পরে) ৩২ নং রোড থেকে ফিরে আমি স্টেশন হেডকোয়ার্টার থেকে জেনারেল শফিউল্লাহকে জানালাম ১৪৪ ধারা জারির কোন দরকার নেই। কোনরকম গন্ডগোলের আশঙ্কা কোথাও নেই। " তিনি আরো লিখেছেন, দুপুরে আমার অফিসে বসে স্টেশন সিকিউরিটি প্লান বানাচ্ছিলাম। এমন সময় জেনারেল শফিউল্লাহর ফোন এলো। তিনি আমাকে তাড়াতাড়ি শহরের অবস্থাটাও দেখে আসতে বললেন। সেই সাথে ৩২ নম্বর রোডের অবস্থাটাও দেখে আসতে বললেন। আমি সিকিউরিটি প্ল্যানের একটা খসড়া দাঁড় করিয়ে আমার স্টাফ অফিসারকে মোসাবিদা করতে বলে জিপ নিয়ে শহরের দিকে ছুটলাম। এয়ারপোর্ট রোড ধরে এগিয়ে আসছিলাম। রাস্তাঘাট ফাঁকা। সবাই ভীত-সন্ত্রস্ত। মোড়ে মোড়ে জটলা। ফাঁকা রাস্তা পেয়ে একটি মাত্র জীপই বীরদর্পের সশব্দে এগিয়ে যাচ্ছিল। আওলাদ হোসেন মার্কেট, ফার্মগেট দিয়ে যাওয়ার পথে বিভিন্ন স্থানে আর্মি জিপ দেখে হাত নেড়ে স্লোগান তুললো, আল্লাহু আকবার ! সেনাবাহিনী জিন্দাবাদ ! একদিনেই এত পরিবর্তন ! অথচ গতকালও পরিস্থিতি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। কি অবাক কান্ড ! তবে আমার বুঝতে অসুবিধা রইলো না যে, পরিবর্তিত অবস্থাকে সাধারণ মানুষ মেনে নিয়েছে। কোন বড় রকমের গন্ডগোল হওয়ার কোন আশঙ্কা নেই। আমি ১৪৪ ধারা জারির পক্ষে কোন যুক্তি দেখতে পেলাম না। শুধুমাত্র ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রোডে সৈনিকরা বাড়ি ঘেরাও করে রেখেছিল। মূলত এই ঘটনায় অনেকেই খুশি ছিলেন, এজন্য প্রতিবাদ করেন নি। অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের ভাষ্যমতে, মুজিবের মৃত্যুর ১০ বছর পরেও আত্মীয়-পরিজনদের মতানৈক্যের জন্য তাদের গ্রামের বাড়ি টুঙ্গিপাড়ায় মুজিবের সমাধির উপর একটি সুযোগ্য স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করতে পারেননি বলে, তার কন্যা হাসিনা আমাকে জানান। মুজিবের নাকি অনেক জনপ্রিয়তা ছিল জনগণের কাছে, এমনটাই দাবি আওয়ামীলীগের। চিন্তা করেন, যে দলের লোকেরা দশ বছরেও নিজের নেতার একটা স্মৃতিসৌধ তৈরি করতে পারেন নি, তারা প্রতিবাদ করবে কিভাবে? তার জনপ্রিয়তায় ভাটা পরার কারন কী ছিলো? এজন্য আপনাকে শেখ মুজিব সাহেবের শাসনামল পড়তে হবে। তবে একটা বক্তব্যের মাধ্যমে কিছু একটা ধারনা সবাই পেয়ে যাবেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী বলেন, Althought he lacked any sophisticated knowledge of running a modern government. For his own part he was content to centralize all powers in his hands and attempted to rule the country like a medieval despot. অনুবাদ : আধুনিক একটা রাষ্ট্র চালানোর যে দক্ষতা থাকা দরকার, শেখ মুজিবের মধ্যে তার ঘাটতি ছিল। তার নিজের অধীনে তিনি সমস্ত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করতে সন্তুষ্ট ছিলেন এবং মধ্যযুগীয় স্বৈরশাসকের মতো দেশ শাসন করতে চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর এই মধ্যযুগীয় কায়দায় দেশ চালানোই তার জনপ্রিয়তাকে নিচে নামিয়ে দিয়েছিল। দেশের অবস্থা চরম অবনতির পর্যায়ে নেমে গিয়েছিল সরকারি দলের লুটপাট আর নৈরাজ্যের কারনে। অ্যান্থনী মাসকারেনহাসের বক্তব্য অনুসারে, দুইশত কোটি ডলার পরিমাণ আন্তর্জাতিক সাহায্য দেশে আসার পরও ১৯৭৩ সালের শেষের দিকে দেশটি দেউলি হয়ে গেল। আমদানি আর বিতরণ প্রক্রিয়ার প্রত্যেকটি স্তরে দুর্নীতি, কালোবাজারি, চোরাচালানি ইত্যাদির বদৌলতে খাদ্য সরবরাহ অবনতির দিকে দিকে ধাবিত হতে লাগলো। চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেল। তারপরই দেশের প্রায় অর্ধেক এলাকা প্রলয়ংকারী বন্যায় ডুবিয়ে দিলো। মানুষখেকো বাঘের মতো দুর্ভিক্ষ সদর্পে সারাদেশে ছেয়ে গেল। গ্রামগুলোতে মশা মাছির মতো মানুষ মরতে শুরু করলো। উল্লেখ্য, শেখ মুজিব সাহেব স্বীকার করেছিলেন যে, খেতে না পেয়ে প্রায় ২৭,০০০ লোক মরে গেছে কিন্তু বাস্তবে লক্ষাধিক মানুষ মারা গিয়েছিল। এইরকম মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছিল। রেফারেন্স বই ও তথ্য : ১। Bangladesh: A Legacy Of Blood, Anthony Mascarenhas. অনুবাদক : মোহাম্মদ শাহজাহান ২। তিনটি সেনা অভ্যুত্থান ও কিছু না বলা কথা, লে. কর্নেল (অব.) এম.এ হামিদ, পিএসসি। ৩। The Killing of Sheikh Mujibur Rahman: New Zealand International Review (September/ October 1976), Page: 18

অধ্যাপক ইউসুফ আলী: সব সরকারের মন্ত্রী

এটা পড়ার পর আগামী দুই দিন পাগল থাকবেন 🤣 আমি আগে
সম্পর্কে জানতাম- তিনি মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন। বাকি অল্প স্বল্প জানতাম। একটা ফেসবুক পোস্টের সূত্রে বাংলাপিডিয়া দেখে যা জানলাম- উনি ছিলেন বাংলার অধ্যাপক। ৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান আইনসভার সদস্য হন। ৬৫ সালে পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য, ৭০ সালে আবার গণপরিষদের সদস্য এবং চিপ হুইপ। মুজিবনগর সরকারের ইউথ কন্ট্রোল বোর্ডের চেয়ারম্যান। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু সরকারের শিক্ষা ও সংস্কৃতি মন্ত্রী, ৭৫ সালে বাকশালের শ্রমমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু নিহত হলে খুনী মোশতাকের পরিকল্পনা মন্ত্রী, ৭৭ সালে আওয়ামীলীগ (মিজান) এর সাধারণ সম্পাদক, ৭৯ সালে জিয়ার(বিএনপি) শ্রমমন্ত্রী, ৮১ সালে বিচারপতি সাত্তারের পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী, ৮২ সালে এরশাদের সময় বিচারপতি সাত্তারের সরকারে শিল্পমন্ত্রী, ৮৫ সালে এরশাদের মন্ত্রীসভায় (জাতীয় পার্টি) ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী হন!! কেমন বোধ করছেন? 🤣

এ্যাভারেজ আমেরিকান মহিলারা মাত্র সাতাশ মিনিট আর বাঙ্গালি মহিলারা গড়ে সাড়ে পাঁচ ঘন্টা সময় প্রতিদিন রান্নাঘরে ব্যয় করে।

বাংগালী নারীদের জীবনের বিশাল অংশ এই রান্নাঘরেই কেটে যায়। কয়েকসপ্তাহ আগে আমার প্রতিবেশী হ্যারল্ডের বাসায় আমাদের ডীনারের দাওয়াত ছিলো। সন্ধ্যা ছটার আগেই সাধারণত এরা ডীনার শেষ করে। একেবারে ঘড়ির কাঁটায় ঠিক ছটা বাজেই ডীনার শুরু হলো। ডীনারের আয়োজন ছিলো টুনা ফীস, সালাদ, কিছু চিপস আর কোমল পানীয়। ব্যস । হ্যারল্ডের ওয়াইফ ম্যারি আর হ্যারল্ড আমাদের সাথে ক্লান্তিহীন আড্ডা দিলেন। রান্নার আয়োজন যেহেতু কম-আড্ডার আয়োজনতো সুন্দর হবেই। কেউ যদি বলে বাংগালীরা আড্ডা প্রিয়। কথাটি ভুল। আমরা আসলে ভোজনপ্রিয়। আমাদের বাসায় কারো দাওয়াত মানেই বিশাল রান্নার আয়োজন। কে কত আইটেম বাড়াতে পারে ভাবীদের সাথে ভাবীদের চলে এর প্রতিযোগিতা। যেদিন অতিথিদের নিমন্ত্রণ বলতে গেলে এর এক সপ্তাহ আগে থেকেই শুরু হয় রান্নার আয়োজন। একেকটা রান্নার আয়োজন একেকটা ঘুর্ণিঝড়। এরকম ঘুর্ণিঝড়ের ভিতর সময় পার করে ঘরের বউ, ভাবী ক্লান্ত, বিধ্বস্ত। সুতরাং সুন্দর পরিবেশে বসে আড্ডাটা হবে কখন? রান্নাঘর আর বাথরুম দেখে মানুষের পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে একটা ভালো ধারণা পাওয়া যায়। হ্যারল্ডের ঘরে পা দিয়েই বুঝা গেলো- কত সুন্দর, পরিপাটি আর কত পরিচ্ছন্ন হতে পারে একটি ঘরের পরিবেশ। সুন্দর ঘর রাখার অন্যতম প্রধান কারণ হলো- ওদের রান্নার আয়োজন খুবই কম। আপনি যখন গরম তেলের ওপর দুনিয়ার নানা রকমের মশলা ছাড়বেন- সাথে সাথেইতো ঘর গ্রীজি হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে দিবে। আর এই তৈলাক্ত গ্রীজ শুধু আপনার কিচেন নষ্টই করছেনা। আপনার উদরও নষ্ট করছে। তবে কি আমেরিকানরা রান্না করেনা। না করলে এতো গ্রোসারি আইটেম যায় কই । জ্বি করে। বেশ আয়োজন করেই করে। তবে একদিনে চৌদ্দ পনের পদ তৈরি করে- ডাইনিং টেবিলের এই মাথা থেকে ঐ মাথা পর্যন্ত খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেনা। আমি নিজেও বুঝিনা। এতো পদ দিয়ে একসাথে খাবার খেয়ে এতো ভূরিভোজনের দরকারটাই বা কি? কালকে মারা গেলে- আজকে বেশ করে খেয়ে নেন ঠিক আছে। কিন্তু তাই যদি না হয়- তবে আজকে দুপুরে এক আইটেম দিয়ে খান। রাতের বেলা আরেকটা দিয়ে খান। এভাবে প্রতিদিন একেকটা আইটেম দিয়ে খেলেইতো নানা রকমের খাবারের স্বাদ পাওয়া যায়। আমাদের পিকনিক মানেই ঐ খাবার দাবার। গাড়ীতে খাবার ঢুকাও, গাড়ী থেকে খাবার নামাও, খাবার সাজাও, খাবার রান্না করো, খাবার পরিবেশন করো, খাবারের পর এবার তালা, বাসন, বাটি, ঘটি গাড়িতে তোল। ব্যস খাবারের আয়োজনের ভিতরই পিকনিক শেষ । একবার সমূদ্র দর্শন করতে গিয়ে দেখলাম- এক আমেরিকান কী সুন্দর করে ফোল্ডিং চেয়ার খোলে পানিতে পা ভিজিয়ে বসেছে। ঘন্টার পর ঘন্টা যায়। সে বসা। তার মাথার ওপর ছাতা। পাশে একটা ড্রিংক। বুঝা গেলো সে আজ মন প্রাণভরে সমূদ্র দেখবে। আর আমরা- খাবার খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে সমূদ্র দেখলাম। আর সমূদ্র দেখার পাশাপাশি এই দোকানে ঢু মারলাম, আরেক দোকান থেকে বের হলাম, একটু এদিক ওদিক ঘুরলাম, রাজনীতি, কম্যুনিটি নীতি, ট্রাম্প, মোদি, গদি, হাসিনা, খালেদা, পাপিয়া, সাফিয়া,কাদেরি , তাহেরি সহ দুনিয়ার সব বিষয়ে বিপুল আলোচনা, হালকা বাক বিতণ্ডা, ঝাপসা মনোমালিন্য নিয়ে সমূদ্র জয়ের পাশাপাশি দুনিয়া জয় করে ঘরে ফিরলাম। গত শনিবার। গ্রোসারি কিনতে যাবো। দেখি হ্যারল্ড। সেও আমার সাথে যাবে। আমাদের গ্রোসারির লিস্টি মাশাল্লাহ- এইগুলো একটার সাথে আরেকটা জোড়া লাগালে- চাঁদের দেশে যাওয়া যাবে। মাংসের জন্য এক দোকান, মাছের জন্য আরেক দোকান। সব্জির জন্য ফার্মাস মার্কেট। সেখানে আবার দেশি লাউ পাওয়া যায়না। যাও আরেক দোকান। কাঁচামরিচের জন্য আরেক জায়গায়। দুধ-ডিমগুলো আবার এইসব দোকানে ভালো পাওয়া যায়না। যাও আমেরিকান গ্রোসারিতে। বিশাল লিস্টের যুদ্ধ শেষ করে যখন ফিরছি- হ্যারল্ড বললো- একটু দাঁড়াও। এক ফাস্টফুডের দোকানে দাঁড়ালাম। হ্যারল্ড একটা স্যান্ডউইচ কিনলো। স্যান্ডউইচের অর্ধেক সে খাবে। বাকি অর্ধেই ওর বউয়ে খাবে। ঝামেলা শেষ। সেইজন্য ওরা নাসা থেকে স্পেসে যায়। আর আমরা বেডরুম থেকে কিচেন আর কিচেন থেকে বেডরুমে যাই। আর, এর ফাঁকে ফাঁকে ইয়া বড় বড় ভুড়ি বানাই। স্পেশ স্টেশানে যাওয়ার সুযোগ আসলে আমরা খোঁজ নিবো- কিমার জন্য ফ্রেশ গ্রাউন্ড বীফ, কাচ্চি বিরিয়ানির মশলা, ডালের জন্য পাঁচফোড়ন, খাওয়ার পর গোলাপজামুন, চায়ের সাথে বিস্কুট, পানের সাথে চুন, খয়ের এসব কিছু সেখানে ঠিকঠাক পাওয়া যাবেতো? আমি একটা জিনিস পর্যবেক্ষণ করলাম। যার গ্রোসারির ট্রলি যত বড়- মেধা আর যোগ্যতায় সে তত ছোট। যারা দরিদ্র-অর্থের অভাবে খেতে পায়না-সেটা ভিন্ন কথা। মেক্সিকান আর আমাদের গ্রোসারির ট্রলিগুলো যেন একেকটা মুদির দোকান। চেকআউট লেনে দাঁড়ালে মনে হয় কোনো ছোট দোকান ঘরের পিছনে দাঁড়িয়ে আছি। এতো বেশি বেশি খাবার উদরে যায় বলে আমাদের মগজে আর বেশী কিছু যায়না। হিসপানিক আর ভারতীয় অধ্যুষিত এলাকায় আপনি কোনো ভালো লাইব্রেরি কিংবা কোনো ভালো বইয়ের দোকান পাবেন না। এগুলো পাবেন শুধু সাদা বিশেষ করে ইহুদি অধ্যুষিত এলাকায়। রান্না করে আর খেয়েইতো আমাদের জীবন শেষ। অধ্যাবসায়ের অতো সময় কোথায়? বিল গেটস, মার্ক জুকারবার্গ, স্টিভ জবস ওনাদের সামনে কোনোদিনও ইয়াবড় খাবারের প্লেট দেখিনি। যেমন দেখেছি-রাজা-বাদশাহ-আমীর ওমরাহদের সামনে। প্রিয় ভাই, চাচা, বাবা, দাদারা দয়া করে বউ, ভাবি, বোন, চাচী, মাসিদের রান্নাঘরের একচেটিয়া জীবন থেকে মুক্তি দিন। আর ভাবী, আপা আপনারাও একজনের সাথে আরেকজনের রান্নার আইটেম বাড়ানোর প্রতিযোগিতা থেকে দয়া করে নিজেদের হেফাজত করুন। এক জনে পাঁচজনের জন্য প্রতিদিন পাঁচপদ রান্না না করে পাঁচজনে মিলে একপদ রান্না করুন। সম্পর্ক বাড়বে। ভালোবাসা তৈরি হবে। কষ্ট লাঘব হবে। কিচেনে আপনার সময় যত বাড়বে- ভাইয়ের ভুড়িও তত বাড়বে। আর এই ভুড়ি ভালোবাসা না। এটা সর্বনাশা। এটা জীবননাশা। জীবন ধারনের জন্য খেতেতো হবেই। কিন্তু রান্নাঘর আর ভোজন যেন আমাদের পুরো জীবনটাই খেয়ে না ফেলে- দয়া করে সেদিকে একটু লক্ষ্য রাখব। © আরিফ মাহমুদ

Wednesday 16 August 2023

২১ দিন কী করেছেন তোফায়েল-রাজ্জাক?

◾আওয়ামী লীগের ১৯৭৫ পরবর্তী রাজনীতির বড় পুঁজি হচ্ছে 'মুজিব হত্যা'। 'পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বাকশাল-এর মুজিববাদী সমাজতন্ত্রের বিরোধী গণতন্ত্রপন্থী নেতাদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের নেতৃত্বে এক রক্তক্ষয়ী সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে। এতে ক্ষমতার পটপরিবর্তন ঘটে এবং একদলীয় শাসন উৎখাত করে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরে আসে। এই রক্তক্ষয়ী পটপরিবর্তনকে আওয়ামী লীগ শেখ মুজিবুর রহমান ও তার স্বজনদের নিছক খুনের ঘটনা বলে প্রচার করে। একসময় তারা খুনের বিচার চেয়ে রাজনীতি করতো। পরে খুন দেখিয়ে অভ্যুত্থানে জড়িত মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসারদের তারা অধিকাংশের ফাঁসি কার্যকর করে। এরপর সেই রক্তাক্ত ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগ জিয়াউর রহমান ও স্বাধীনতা-বিরোধীদের দায়ী করে রাজনীতি করতে থাকে। এর পাশাপাশি এবার তারা নিজেরাই আঙুল তুলেছে নিজেদের ঘরের দিকে। শেখ হাসিনা নিজেই এক লেখা লিখে তার দলের লোকদের দিকে সন্দেহের তীর ছুঁড়েছেন। তাদের একটি অনলাইন প্রোপাগান্ডা সাইট, সৈয়দ বোরহান কবিরের 'বাংলা ইনসাইডার' এ নিয়ে এক রচনা প্রচার করেছে। তাতে '৭৫-এর ১৫ আগস্টের অভিযানে আ.লীগের গৃহশত্রু বিভীষণদের ভূমিকা যাচাই করে দেখার জন্য একটি জাতীয় কমিশন গঠনের প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে। এ রচনা পাঠে আমি আমোদ পেয়েছি। আপনারাও যারা মজা পেতে চান, তারা পড়ে দেখতে পারেন।◾ ****************************************************** বাংলা ইনসাইডার-এর রচনা। শিরোনাম :
````````````````````````` ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার ভূমিকা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি উঠেছে। যে কোনো সময় তদন্ত কমিশন গঠনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে- এমন কথাও শোনা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির একটি লেখা শোকাবহ আগস্টের আগের দিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। ‘বেদনায় ভরা দিন’- শিরোনামে এই লেখাটি এখন টক অফ দা টাউন। এই লেখায় তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের ব্যর্থতা এবং নির্লিপ্ততা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সেই সময়ের জনপ্রিয় দুই তরুণ নেতার ভূমিকা নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রশ্ন তুলেছেন। এদের একজন প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাক এবং অন্যজন তোফায়েল আহমেদ। প্রধানমন্ত্রীর লেখায় সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, এই দুই নেতাকে বঙ্গবন্ধু ফোন করেছিলেন, এদের একজন স্বেচ্ছাসেবকদের দায়িত্বে ছিলেন এবং অন্যজন রক্ষী বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই আওয়ামী লীগ সভাপতির এই লেখা আওয়ামী লীগের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। এই দুই নেতার ব্যাপারে নতুন করে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ সভাপতির এই লেখাই শেষ বিষয় নয়, আগস্টে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার ভূমিকা নিয়ে যতই গবেষণা করা যায়, ততই নিত্য নতুন তথ্য বের হয়। যে তথ্যগুলোতে সুস্পষ্টভাবে নেতাদের ব্যর্থতা, নির্লিপ্ততা, উদাসীনতা এবং কাপুরুষতার প্রমাণ পাওয়া যায়। ১৫ই আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর পরই খুনি মোশতাক নতুন সরকার গঠন করে এবং এই নতুন সরকারে আওয়ামী লীগের সব নেতাই যোগ দিয়েছিল। মজার ব্যাপার হলো- খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায় কোন প্রধানমন্ত্রী রাখা হয়নি। বঙ্গবন্ধুর শেষ মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মনসুর আলী। তিনি ১৫ই আগস্টের পর তার বাসায় অবস্থান করছিলেন। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো- ১৭ই আগস্ট মনসুর আলীর সঙ্গে খুনি মোশতাক সাক্ষাৎ করেন। তাদের মধ্যে কি আলাপ-আলোচনা হয়েছিল, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য সেই সময়ের গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি। তবে ১৫ই আগস্ট থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত মনসুর আলী, নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, আব্দুস সামাদ আজাদ, কামরুজ্জামান ও কোরবান আলী কেউই গ্রেপ্তার হননি। তারা স্ব স্ব অবস্থানে ছিলেন। প্রশ্ন হচ্ছে এই ৮ দিন, অর্থাৎ ১৫ আগস্ট থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে তারা কি করলেন? তারা কি একটি প্রতিবাদও করতে পারলেন না? তারা কি ঘর থেকে বের হতে পারলেন না? তারা কি কর্মীদেরকে একটা নির্দেশ দিতে পারলেন না? এতোটুকুই ঝুঁকি যদি রাজনীতিতে কেউ না নেয়, তাহলে সে রাজনীতিকে কি বলা উচিত? জাতীয় চার নেতাসহ অন্যান্যদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ২৩শে আগস্ট। তার আগে পর্যন্ত তারা আসলেই যথাযথ ভূমিকা পালন করেছিলেন কিনা?- সে প্রশ্ন ইতিহাসে অমীমাংসিত হয়েই থাকবে। তবে তোফায়েল আহমেদ এবং আব্দুর রাজ্জাকের দায়টি আরও বেশি। তোফয়েল আহমেদ এবং আব্দুর রাজ্জাক, দুজনই গ্রেপ্তার হন ৬ সেপ্টেম্বর। ১৫ই আগস্ট থেকে ৬ সেপ্টেম্বর, ২১ দিন। অর্থাৎ তিন সপ্তাহের ব্যবধান। এই তিন সপ্তাহ তারা গৃহান্তরীণ থাকুক, গৃহবন্দি থাকুক বা যে অবস্থায় থাকুন না কেন, তারা বাড়িতে ছিলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার হননি। এই সময়ে তারা কি করেছেন? তাদের সাথে কি খুনিরা কোনো সমঝোতার চেষ্টা করেছিল? খুনিরা তাদেরকে গ্রেপ্তারে এতো বিলম্ব করল কেন? তোফায়েল আহমেদ বা আব্দুর রাজ্জাকের মত বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ নেতারা-তো সাথে সাথেই খুনিদের চরম টার্গেট হওয়ার কথা, যেভাবে টার্গেট হয়েছিলেন শেখ মনি। সেক্ষেত্রে তোফায়েল আহমেদ আর আব্দুর রাজ্জাককে গ্রেপ্তারে এতো বিলম্ব হলো কেন? তাদের সাথে কি কোনো দরকষাকষির চেষ্টা হয়েছিল?- এই প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রয়োজন। আর এই প্রশ্নগুলোর উত্তরের জন্যই প্রয়োজন একটি জাতীয় কমিশন গঠন। ⚫

Tuesday 15 August 2023

সুখরঞ্জন বালি

একজন বহুদেববাদী সনাতন ধর্মাবলম্বী কিন্তু সত্য ন্যায়ের উপর তার ঈমানী জজবা ছিল ইস্পাত-দৃঢ়।গতকাল ও জানাজা কালে বেঈমান জালিমের সেবাদাসী উচ্ছিষ্টভোগী প্রশাসনের হাতে মৃত্যুঝুকি উপেক্ষা করে সবার সম্মুখে হাত তুলে আবার স্বাক্ষ্য দিয়েছেন আল্লামা সাঈদি নির্দোষ তার উপর জুলুম করা হয়েছে।

Friday 11 August 2023

Digestifs and Aperatifs

Each region and country has its own preferences of DIGESTIFS as well: In France, the digestif of choice is often a French brandy, such as cognac or Armagnac. Italians tend to drink bitter amaros and sweet grappas or liqueurs like limoncello and nocino. Spain has a preference for fortified wines like sherry, Madiera, and port, and pacharán, a sloe gin-like liqueur made from sloe berries. In Germany, you'll find some of the most flavorful digestifs, including Underberg bitters and Jägermeister. Aperitifs are an age-old tradition and have been produced for centuries. Some of the most popular use a signature recipe that has been used for a century or more or is proprietary and held under a single brand name. Amer Picon: This bittersweet French apéritif has a unique flavor dominated by orange with a dry finish. Anise Spirits: From ouzo or pastis, anise-flavored spirits are popularly enjoyed as apéritifs. Aperol: An Italian aperitivo, the orange flavor matches its bright orange color, though herbs and roots are included to give it a bitter twist. It's often enjoyed as an Aperol spritz. Campari: Possibly the most famous apéritif, this red Italian spirit has a very distinct bitter profile and is used in cocktails like the famous Negroni. Cynar: While it has an artichoke base, that is not the dominant flavor of this bitter herbal liqueur. It's often mixed with orange juice and topped with soda or tonic water. Dry Wine: When in doubt, any still or sparkling dry wine makes an excellent apéritif. Dubonnet: Available as Rouge (more popular) or Blanc, Dubonnet is a proprietary fortified wine flavored with "herbs, spices, and peels." It includes quinine, which gives it a drier profile than vermouth. Gin: The botanicals found in gin make it the ideal hard liquor for apéritif cocktails, even if that's simply a gin and tonic.

Friday 28 July 2023

DIPLÔME D'UNIVERSITÉ DROIT DE L'ASILE

https://cfp.u-paris2.fr/fr/formations/offre-de-formation/diplome-duniversite-droit-de-lasile-accueil-et-protection-des DIPLÔME D'UNIVERSITÉ DROIT DE L'ASILE - ACCUEIL ET PROTECTION DES ÉTRANGERS PERSÉCUTÉS

আমার এই রাষ্ট্র, এই পুলিশের কোনো দরকারই নাই।

যে রাষ্ট্রে আপনি সারাদিন চিল্লান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আপনি স্বাধীনতা অর্জন করছেন। সেই রাষ্ট্রে পুলিশ জনগনের ব্যাক্তিগত ফোন চেক করে, বাক্তিগত ছবি দেখে কোনো এলিগেশন ছাড়া র‍্যান্ডমলি সেই রাষ্ট্র ব্যাক্তি হিসেবে আমার অস্তিত্বের জন্য হুমকি। এই হাসিনা অথরিটি প্রতিটি ব্যাক্তি মানুষকে হত্যা করেছে। জনগনের সিভিল রাইটসই যেখানে নাই সেখানে আপনি কি বালের যুদ্ধের কথা বলেন আর দেশের কথা বলেন। যেইখানে আমার ফোনে পুলিশ হাত দিয়েছে সেখানেই আমার সব অর্জন শেষ। রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের সাথে আমাদের ব্যাক্তি সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে। সভ্য মানুষের অন্যতম রাইটস ব্যাক্তির প্রাইভেসি। সেই রাইটসই যেখানে লঙ্ঘন হচ্ছে সেখানে আমার এই রাষ্ট্র, এই পুলিশের কোনো দরকারই নাই। আমি এদের হাত থেকে বাচার জন্য জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী চাই। এই পুলিশি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যা করা দরকার আমার তাই করতে হবে। লাগলে আমি আবার কলোনি হইতে চাই। যুদ্ধ করে পারলে আবার আমরা কখনো এদের বিরুদ্ধে নিজের রাষ্ট্র বানাব।

Wednesday 26 July 2023

কোথায় হারিয়ে গেল সোনালী সেই দিনগুলো

৯০ দর্শকের শৈশব : "রাজা" (বেলুন)ক*ন*ড*ম আর "হিরো" (বেলুন) ক*ন*ড*ম ছিলো বেশি প্রচলিত, সেগুলোকে আমরা বেলুন হিসেবেই চিনতাম, তখনকার দিনে এত রঙ বেরঙের বেলুন ছিল না, চায়ের দোকান থেকেও কিনতাম। প্রায় কোল বালিশ সাইযের বানিয়ে ফেলতাম ফুলিয়ে। বড়রা এগুলা পঁচা জিনিস,বাজে তেল দিয়ে বানায় এই সেই নানা কথা বলতো। কিন্তু এই ক*ন*ড*ম*কে বেলুন বানিয়ে খেলার কারণেই চায়ের দোকানীরা বিক্রি করতো খেলনা হিসাবে। তখনকার সময়ে প্রতিটি বাড়িতে টিভি ছিল না, ১০-১২ বাড়ি পর- পর দেখা গেছে একজনের বাড়িতে টিভি আছে, আমরা সেই বাড়ির সমবয়সীদের সাথে বন্ধুত্ব পাতিয়ে নিতাম, কোন কারণে ঝগড়া হলেও বৃহস্পতিবারের দিন মিটমাট করে নিতাম, কারণ শুক্রবারটা ছিলো একটা ঈদের দিনের মতোন। শুক্রবার কি সিনেমা হবে আর কে নায়ক নায়িকা থাকবে সেটা জানার জন্যই সকাল 10 টা অথবা দুপুর 12 টায় সূচিপত্র দেখার জন্য টিভি অন করে বসে থাকতাম, যতক্ষণ না চ্যানেল খুলতো ততক্ষণ টিভির মধ্যে শুধু নুড়ি পাথরের কত ঝিলমিল ঝিলমিল করতো, কি যে বিরক্ত লাগতো তারপরও ধৈর্য ধরে বসে থাকতাম। সিনেমা হতো দুপুর আড়াইটা থেকে বিকাল পর্যন্ত, আলিফ লায়লা রাত 9 টায়, তারপরে ছায়া ছন্দ, বাবারা তো রাতে চোখে চোখে রাখতো পড়ার সময় টিভি দেখায় একদমই পছন্দ করতো না, যেই এশারের নামাজ পড়তে বের হতো অমনি আমরা সাথে সাথেই টিভির সামনে এসে হাজির হয়ে যেতাম, 1 মিনিটো দেরি করতাম না, ছায়া ছন্দ শেষ হতে না হতে আবার রাত 10:30 মিনিটে ভারতীয় ন্যাশনাল চ্যানেল শুরু হতো ইন্টারন্যাশনাল লাক্স সাবান নিবেদিত হিন্দি সিনেমা, আর মাসের শেষে শুক্রবার তো ইত্যাদি কোন মতেই মিস দিতাম না না না না। পরের দিন শনিবার দুপুর 12:30 মিনিটে স্কুলের সময় শুরু হতো 'পারলে-জি' বিস্কুট নিবেদিত "শক্তিমান" 😇 শনিবারের দিন শক্তিমান দেখা বাদ দিয়ে স্কুল যেতে কলিজা ফেটে যেত😅😅😅 নিজে শক্তিমান হবার জন্য শক্তিমানের মত করে একহাত মাজায় রেখে আরেক হাত মাথার উপরে দিয়ে পাক ঘুরতে ঘুরতে কত যে আছাড় খেয়েছি তা গুনে শেষ করা যাবে না। # রবিনহুড, হারকিউলিস, রোবোকাপের কথা নিশ্চয়ই আপনাদের মনে করিয়ে দিতে হবে না। একসাথে সিনেমা দেখার আলাদা মজা ছিলো। বড়রা খাটে বা সোফায় বসতো আমরা নিচে বসতাম। আঙুল দিয়ে বিজ্ঞাপণ গুনতাম। প্রায় বারোটা বিজ্ঞাপণ দেখানোর পরই সিনেমা শুরু হতো, এসবের ভিতর থেকে জায়গার দখল হারানোর ভয়ে বাইরে না গিয়েই কেউ কেউ আবার চুপিসারে বায়ু দূষণ করে দিত, সহ্য হতো না, নাক চিপে দম আটকে রেখে দম বন্ধ হয়ে যেত তারপরও জায়গা থেকে উঠতাম না, উঠলে ওই জায়গার আর দখল পাবো না এই ভয়ে, তারপরে সবাই শুরু করতো দর্শকের উদ্দেশ্যে আঙ্গুল দেখিয়ে ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন : উবু ১০ ২০ ৩০ ৪০ ৫০ ৬০ ৭০ ৮০ ৯০ ১০০ যার কাছে গিয়ে ১০০ পূরণ হতো সে বায়ু দূষণকারী 🤪🤪🤪 তাকে শাস্তি স্বরূপ 5 মিনিটের জন্য বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হতো টিভি ঝিলমিল ঝিলমিল করলে তাকে গিয়ে প্রত্যেকবার "এন্টিনিয়ার" ঘুরিয়ে ঠিক করতে হবে, সিনেমা চলাকালীন এন্টিনিয়ার ঠিক করাটা খুব যন্ত্রণাদায়ক একটা কাজ ছিল, টিভির এন্টিনিয়ারের কথা আপনাদের মনে আছে তো? রুবেল, ইলিয়াস কাঞ্চন, দিথী, জসীম, সাবানা, ববিতা, ওমর সানি, সালমান শাহ, মৌসুমি, রাজ্জাক ছিল নায়ক নায়িকা। এদের কেউ নেই মানে সিনেমা পানসে। রাজীব, রানি, শরীফ, মিশা, জাম্বু, এটিএম শামসুজ্জামান ও হুমায়ুন ফরিদী ভিলেন থাকার কারণে কতো গালিই যে খেত তার হিসেব নেই। নায়ক মার খেলে আমাদের আফসোস হত, অসহায় জসিম, রাজ্জাক, সাবানা আর ববিতার কান্নায় চোখে পানি চলে আসতো। যেইদিন রুবেলের ক্যেরাতের একশন সিনেমা হতো সেদিন সিনেমা দেখা শেষ করে মনের মধ্যে অ্যাকশন ফিলিং নিয়ে বন্ধুদের বলতাম : আয় আমরা নায়কদের মতন মারপিট খেলি, রাজি হলে নিজের নায়ক হওয়ার চান্সটা মিস দিতাম না, বলতাম :- আমি নায়ক তোরা গুন্ডা, তোরা সবাই মিলে আমাকে চেপে ধরবে আর আমি তোদের সবকটাকে মারবো, তোরা মার খেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকবি, অনেক সময় বন্ধুরা রাজি হতো না, তখন বলতাম একবার আমি নায়ক একবার তোরা নায়ক, সমান- সমান ঠিক আছে, তারপরও যদি রাজি না হতো তখন শেষ চেষ্টা করে দেখতাম :- বলতাম আগামীকাল আমার আব্বা পাইনাপেল বিস্কুট নিয়ে আসবে তখন ওখান থেকে তোকে দুইটা দিব 🤪🤪🤪 তারপরে শুরু হতে আমাদের নায়ক আর গুন্ডার খেলা, মুখ দিয়ে ঢিসুম- ঢিসুম করতাম আর উড়ে উড়ে মার দিতাম, কিযে ভয়ংকর অ্যাকশন তা লিখে বুঝানো যাবে না 🤪🤪🤪 ও পাইনাপেল বিস্কুটে কোথায় তো আর একটা কথা মনে পড়ে গেলো,পাইনাপেল বিস্কুটের কথা তো ভুলার মতন না, তখনকার পাইনাপেল দুই বিস্কুটের জয়েন্টে ক্রিমে ছিল ভরপুর, আমরা বিস্কুট হাতে নিয়ে দুই বিস্কুটের জয়েন্ট ছুটিয়ে তারপরে ক্রিমটা আগে চেটে চেটে খেয়ে নিতাম 🤪🤪🤪🤪🤪🫣 কি যে অনুভূতি তা বলে বোঝানো সম্ভব না 😇 এবার আসি মেয়েদের কথায়: যদি শাবনূর, মৌসুমী, দিথি, চম্পার সিনেমা হতো তাহলে মেয়েরা সিনেমা দেখা শেষ করে ঘরের ভিতরে অথবা আড়ালে লুকিয়ে সিনেমার নায়িকাদের স্টাইলে গুনগুন করে গান গাইতো আর নাচ প্যাকটিস করতো, আর আমরা তাদেরকে জ্বালাতন করার জন্য লুকিয়ে লুকিয়ে দেখার চেষ্টা করতাম, শেষের দিকে বলতাম এ-হে নাচ দেখে ফেলেছি - দেখে ফেলেছি, তখন তারা ভীষণ লজ্জা পেতো 🫣🫣🫣🫣 বিকেলটা ছিল অনেক লম্বা,শেষ হইতো না। তখন খেলতাম চোর- পুলিশ, লুকা-চুরি, ইচিং বিচিং, কুতকুত, বউছি, ফুলের টোকা, বরফ পানি, ছোঁয়াছুঁয়ি, সাতচারা, ডাংগুলি, মাংশ চোর, সিগারেটের আর ম্যাচের বক্স দিয়ে তাস খেল, লাটিম সহ আরও কতো কী, মনেও নেই। খুব ছোটরা খেলার বায়না ধরলে তাদেরকে "দুধভাত" হিসেবে খেলায় নিতাম, তবুও ছোট বলে তাকে বঞ্চিত করতাম না। ঝগড়া হলে তাহলে কাইন আঙুলে আড়ি নিতাম, দু দিন কথা বলতাম না। তারপর আবার আনুষ্ঠানিক ভাবে দুই আঙুলে " ভাব" নিতাম। তখন আবার রক্তের বান্ধবীর প্রচলন ছিল। কারও হাত কাটলে ছুটে যেতাম রক্তের সই পাতাতে। আমার কাটা আঙুলের সাথে ভাল আঙুল মিলিয়ে হতাম "রক্তের বান্ধবী, কোনদিন এই বন্ধুত্ব যাবেনা"। কই গেল আমার সেই বান্ধবী গুলা। মারবেল দিয়ে বিড়িং খেলা হত। দামি খেলনা ছিলো রবারকোপ আর পিস্তল। টাকাওয়ালা বাবার মেয়েরা খেলত ব্যাটারির পুতুল দিয়ে। পুতুলের সুইচ অন করলেই বাজত ‘চল ছাইয়া ছাইয়া’ গান। বেশিরভাগ মেয়েদের হাড়িপাতিল থাকতো অনেকগুলা। সকাল হলে ভাত রান্না করতো আবার। সন্ধ্যা হলেই শুরু হত যন্ত্রণা। বই খাতা খুলে পড়তে বসা লাগবে। সবার আগে পড়তাম সমাজ। চার্জার লাইটগুলা চার্জ দেয়া লাগতো,কখন কারেন্ট যাবে বলা যায় না,বাড়ির কাজও হবে না। অংক করতে বিরক্তি থেকে মুক্তি পেতে দোয়া করতাম, "আল্লাহ, কারেন্ট যা"। যেই কারেন্ট যেত অমনি সবাই একসাথে চিৎকার করে বেড়িয়ে আসতাম ঘর থেকে। শুরু হয় নতুন খেলা, 'চোখ পলান্তিস' নাইলে 'বরফ পানি'। বড়রা বিরক্ত হয়ে। তখন পাড়ায় পাড়ায় এত মসজিদ ছিল না এবং মসজিদে মাইকো ছিল না, ছিলোনা রমজান মাসের ইফতারের ও সেহরির সময়সূচীর কোন ক্যালেন্ডার, তখন সেহেরী ইফতারির সময় আযানের মাধ্যমে এবং পাড়ার কোন মুরুব্বির ঢং ঢং বেলের শব্দ জানতে পারতাম, ইফতারীর পূর্বে অনেক সময় আযান আথবা ঢং ঢং বেলের শব্দ কোনটাই ক্লিয়ার বোঝা যেত না বলে আমাদের মায়েরা বাড়ির ছোট ছেলে মেয়েদের আযান দিচ্ছে কিনা বাইরে থেকে শুনে আসতে বলতো, তখন আমরা তাড়াতাড়ি খাওয়ার লোভে বাইরে গিয়ে নিজেই আজান দিয়ে বাড়িতে এসে বলতাম আম্মা আযান দিয়েছে 🫣 আমি খাই তোমরা পরে খেয়ে খাও🤪🤪🤪 ( ছোট বলে নিজে তো আর রোজা করতাম না তো🤪🤪🤪 🫣) ঈদের চাঁদ উঠলে সেই আনন্দর কথা লিখে বোঝাতে পারবো না, পুরো মহল্লায় মিছিল করতাম। তখন সম্ভবত ক্লাস টুতে একটা পড়া ছিল : আজ ঈদ, ঈদগাহে যাবো, ফিরনী সেমাই খাবো, কোলাকুলি করবো, কত মজা হবে। কোথায় হারিয়ে গেল সোনালী সেই দিন 😯🤔🤔🤔

Sunday 23 July 2023

এই উদ্ভট তত্ত্ব শেখ হাসিনা কোথায় পেলেন?

২০২০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ইতালির রাজধানী রোমে এক সংবর্ধনায় যোগ দিয়ে প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেছিলেনঃ ‘’জিয়াউর রহমানের জন্ম বিহারে, এরশাদের জন্ম কুচবিহারে, খালেদা জিয়ার জন্ম শিলিগুড়িতে। তাদের একজনও এই মাটির সন্তান না। এখন পর্যন্ত যতজন ক্ষমতায় এসেছে, একমাত্র আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং আমি শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মাটির সন্তান। যেহেতু আমাদের মাটির টান আছে, এইজন্য আমাদের একটা কর্তব্যবোধ আছে।‘’ শেখ হাসিনার বক্তব্য শুনেছেন শত শত প্রবাসী, যাদের সন্তানদের জন্ম ইতালি সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। কেউ শেখ হাসিনার এই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেনি। বিদেশে জন্ম হলে বাংলাদেশকে ভালবাসা সম্ভব নয়- এই উদ্ভট তত্ত্ব শেখ হাসিনা কোথায় পেলেন? একই বক্তব্য শেখ হাসিনা বাংলাদেশে একাধিকবার দিয়েছেন। কেউ কোনো প্রতিবাদ করেনি, সমালোচনাও করেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা শেখ হাসিনার এই দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে বিতর্ক করেনি; টক শো’তে বিশ্লেষণ হয়নি; সংবাদপত্রে কলাম লেখেনি কেউ। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে ধর্ষিতা নারীদের সন্তানদের ‘দুষিত রক্ত’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। এই উদ্ভট তত্ত্ব শেখ মুজিব কোথায় পেয়েছিলেন? রাষ্ট্র এবং সরকার পরিচালনায় নিযুক্ত সর্বোচ্চ ব্যাক্তির মস্তিষ্কে এরকম অসুস্থ চিন্তা এবং দর্শনের অস্তিত্ব থাকা জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক। Courtesy: abdul hye shanju

Wednesday 19 July 2023

আওয়ামিলীগের চাইলেও সুস্থ ইলেকশন করতে পারবে না।

আওয়ামিলীগের সবচে বড় সমস্যা সে চাইলেও সুস্থ ইলেকশন করতে পারবে না। সুস্থ ইলেকশন মানে স্বচ্ছ না। অনেক ম্যানিপুলেটেড, রিগিং এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইলেকশনও সুস্থ হতে পারে যদিও তা স্বচ্ছ না। কিন্তু আওয়ামিলীগের তার ইনার ফ্রেকসনের কারনে তার দ্বারা সুস্থ ইলেকশন করা আর সম্ভব না তাই তার মারতেই হয় যেই দাড়াক তার সাথে সে হিরো আলম হলেও। যেমন ২০১৮ সালের ইলেকশনে যা হয়েছে। একটা অস্বাভাবিক পার্সেন্টেজের ভোট হয়েছে। অধিকাংশ এলাকায় বিরোধিদের ভোট জিরো হয়েছিলো। পরে যা বাড়িয়ে ঘোষনা করা হয়। নুন্যতম ভোটের পারসেন্টেজের হিসাবও সেখানে মানা হয় নি। কারন মাঠে গিয়েই সকল পরিকল্পনা ফল করে এবং তা এজেন্সি আর পুলিশের হাত থেকে লোকালি চলে যায়। পুলিশ যদি দশ হাজার ব্যালট পেপার প্রিজাইডিং অফিসার থেকে রাতে নিয়ে গেছে তবে ছাত্রলীগ নিয়েঁছে বিশ হাজার। কারন এটা তখন আর জাতীয় ব্যাপার থাকে না। এটা একান্তই লোকাল দখল। আর লোকাল দখলে কখনোই কেন্দ্র হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এটা লাঠিয়াল বাহিনির চড় দখলের মতো। পুলিশ যদি পাচ হাজার ভোট দিয়েছে রেশিও অনুযায়ী হিসাব করে তবে ছাত্রলীগ জোর করে আরও দশ বাড়াইছে। বিএনপিকে একটা নির্দিষ্ট পারসেন্টেজ ভোট দেয়ার প্লান ছিলো কিন্তু কোথাওই তা সম্ভব হয় নি। লোকাল প্রভাবক এই রিস্ক নিতেই দেয় নি। যে কর্মকর্তারা লীগকে জেতানোর পলিসিতেই দায়িত্ব নিয়ে এসেছিলো সেই এজেন্সির লোকরে পর্যন্ত সেই রাতে বেধে রাখঁছে পরেরদিন দশ লাখ টাকা ধরিয়ে দিয়ে মিমাংসা করে নিছে। লোকাল প্রভাবক এড়ায়া যাওয়ার এই রিস্ক কোনো পার্থিই নিতে নিবে না। এটা পরীক্ষার রাতের মতো। কেউই যেন কোনে সুযোগ না পায় এই চেস্টা থাকে। তাই প্রশাসনের চেয়ে গতবার লোকাল নেতারা বেশি ব্যালট পেপার রাতের বেলা নিয়ে গেছে প্রিজাইডিং অফিসার থেকে জোর করে। অনেক প্রশাসনের কর্মকর্তারাই পরে আক্ষেপ করছে তারা এতো উলঙ্গ কাজ করতে চায় নি। কিন্তু লোকালি তারা নিয়ন্ত্রন করতে ব্যার্থ হয়। তাদের সম্মানজনক চুরির পথে লোকাল স্টেক হোল্ডারদের বাধা হওয়াটাই সরকারের নিজেরই আদার ফ্রাকশন গুলার জন্য সবচে বড় চ্যালেঞ্জ।

Sunday 16 July 2023

রিএক্সামা কি এবং কিভাবে করতে হয় ?

রিএক্সামা -------------- উকিলের সাথে রিএক্সামা নিয়ে আলোচনা করছিলাম.. রিএক্সামা আসলে কি? : কমিশন থেকে যখন প্রথমবার রিজেক্ট হয়ে যায় তখন রিএক্সামা করা যায়৷ কোন শর্ত আছে? : হ্যা, দেশে আপনার নতুন কোন সমস্যা হলে রিএক্সামা করা যেতে পারে৷ যদি সখতি অর্থাৎ ফ্রান্স ত্যাগের নোটিশ থাকে তাহলে কি রিএক্সামা করা যাবে? : হ্যা যাবে। তবে আপনার সখতি বহাল থাকবে। আর রিজেক্ট হলে সখতির শর্ত গুলো আরও কঠিন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কতবার করা যায় রিএক্সামা? : যতবার খুশি ততোবার। রিএক্সামা করলে কি লাভ হয়? : রিসিপিসি পেতে পারেন। কিন্তু মনে রাখবেন এই রিসিপিসি কিন্তু প্রথম এজাইল আবেদনের রিসিপিসির মতো শক্তিশালী না। পুলিশ চাইলেই সখতি অর্থাৎ দেশে পাঠানোর নোটিশ দিতে পারবে। রিএক্সামা কিভাবে করতে হয় ? : প্রথমবার এজাইল আবেদনের মতোই ফোন দিতে হবে OFII তে। তারপর প্রিফেকচার থেকে ফাইল আনতে হবে। ভালোভাবে ফর্ম ফিলাপ করে OFPRA তে পাঠাতে হবে। OFPRA রিজেক্ট হলে CNDA তে আবেদন পাঠাতে হবে। তারমানে সব আগের মতোই? : হ্যা সবই প্রথমবারের মতো। সরকারি ভাবে উকিল নেয়ার সুযোগ আছে? : হ্যা অবশ্যই। আবেদনকারী আগের মতোই OFPRA রিজেক্টের পর ১৫ দিন হাতে পাবে সরকারি ভাবে উকিল নেবার জন্যে। ১৫ দিন পার হয়ে গেলে টাকা দিতে হবে আপীল এর জন্যে। আবার কি নতুন করে কেইস লিখতে হবে? : আসলে কেইস লিখা বলে কিছু নেই। প্রিফেকচার যে ফরম দেয় সেখানে আবেদনকারীর সমস্যা লেখার একটা জায়গা থাকে। অনেক সময় জায়গার অভাবে সেখানে পুরো ঘটনা লেখা যায়না দেখে মানুষ অতিরিক্ত কাগজে লিখে। এটাকেই মানুষজন কেইস বলে। আচ্ছা। রিএক্সামা তে কি এজাইল পাওয়া যায়? : সম্ভাবনা খুব কম কিন্তু খুব সিরিয়াস হলে পাওয়া যায়। কি রকম সিরিয়াস? : এই ধরেন, নতুন যে সমস্যা বা সমস্যাগুলো দেখানো হবে সেগুলোর পুঙ্খানুপূর্ণ বিবরণ থাকতে হবে। প্রথম আবেদনের সাথে মিল রেখে সুন্দর ভাবে পুরো বিষয়টা খুব যত্নে উপস্থাপন করলে এবং যদি সম্ভব হয় আসল প্রমাণাদি যোগার করতে পারলে রিক্সামা থেকে এজাইল পাওয়া সম্ভব। তবে তোমাদের বাংলাদেশীদের অনেকে রিএক্সামা নিয়ে ব্যাবসা কর এটা সবাই জেনে গেছে। ফ্রিতে রিএক্সামা করার কথা বলে কিন্তু টাকা দিয়ে অনুবাদ করাতে হয় সেটা ওইসব জায়গা থেকে। কোনরকমে তারা যে রিএক্সামা গুলো করে দেয় তাতে আবেদনকারীর আরও ক্ষতি হয়। বাংলাদেশীদের রিএক্সামার গুরুত্ব একারণে বেশী থাকেনা। পরিশেষে আমি বললাম : আসলে পুরা বিষয়টা অনেকটা মাফিয়া চক্রের মতো হয়ে গিয়েছে। দুই তিনটা পার্টি সব কন্ট্রোল করতে চায়। ফ্রেঞ্চ না জানায় সাধারণ বাংলাদেশিরা জিম্মি। উকিল বললেন: এইসব খবর এখানকার অথরিটি জানে। অনুবাদের মান খুব নিম্নমানের হয় তাদের । কোন রকম ভাবে ফাইল রেডি করা হয় দেখে বাংলাদেশি আবেদনের গুরুত্ব খুবই কম। তবে এভাবে মানহীন কাজ করে বেশীদিন আর চালাতে পারবেনা ওরা। অথরিটি থেকে অলরেডি প্রচুর চাপ দেয়া হচ্ছে ওদের উপর৷ ফ্রান্সে মাফিয়া তৈরী হতে দেরী, ভাঙতে দেরী হয়না। #ভাতিজা #কেইস #রিএক্সামা ফ্রান্সের আলো হাওয়ায় / Ma vie en France

Sunday 25 June 2023

শেখ হাসিনার পতনের পরবর্তী ৭২ ঘন্টা

শেখ হাসিনার পতনের পরবর্তী ৭২ ঘন্টা যা যা হতে পারে এবং অন্তবর্তীকালীন সরকারকে যা করতে হবেঃ #আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিরা দেশ ছেড়ে পালাবে। #হাসিনার অবৈধ সুবিধাভোগকারী কর্মকর্তাদের অনেকেই গা ঢাকা দিবে। #দেশে গচ্ছিত টাকা সীমান্ত দিয়ে প্রতিবেশি দেশে পাচারের চেষ্টা করবে। #বিজয়ের আনন্দে আত্মহারা মানুষ জাতীয় পতাকা উড়িয়ে রাস্তায় ঘুরবে। #হাসিনার পরাজিত শক্তি দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করবে। #নতুন সরকারকে প্রথম ২৪ ঘন্টা পুরো দেশব্যাপি কারফিউ জারি করতে হবে। #ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়গুলোকে সবোর্চ্চ সুরক্ষা দিতে হবে। #আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় ম্যাজিস্ট্রেসী ক্ষমতা দিয়ে সারাদেশে সেনা মোতায়েন করতে হবে। #পালিয়ে যাওয়া ওসিদের দায়িত্ব সাময়িকভাবে সেনা কর্মকর্তাদের দিতে হবে। #সচিবালয়সহ দেশের সকল প্রতিষ্ঠানে কঠোর নিরাপত্তা জারি করতে হবে। #গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সাপ্লাই চালু রাখতে হবে। #প্রতিবেশি দেশের দুস্কৃতিকারীরা যেনো ঢুকতে না পারে, সীমান্তে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। #রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবিরে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। #অন্তবর্তীকালীন সরকারকে সরকারের সকল রুটিন কাজ চালু রাখতে হবে। ।। সুরমা প্রতিবেদন ।।

প্রেসারগ্রুপ আওয়ামী রাজনীতির পারপাস সার্ভ করে।

আওয়ামী রাজনীতির স্ট্রেন্থ আগে জানেন। তাইলে পরে সেই শক্তিতে ধ্বস নামানো যাইব। বাংলাদেশের অনেকগুলো প্রেসারগ্রুপ আওয়ামী রাজনীতির পারপাস সার্ভ করে। এদেরকে সাধারণ মানুষ নিরপেক্ষ বইলা মনে করে। এরা মাঝে মাঝে বিবৃতি দেয়। সব বিবৃতিই আওয়ামী রাজনীতির পক্ষে যায়। এদের শব্দচয়নও আওয়ামীলীগকে সুবিধা তৈরি কইরা দেয়। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদসহ অনেকগুলো সংগঠন আছে যারা নিরপেক্ষতার বেশ ধরে আওয়ামী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে। এরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকার কথা বইলা মূলত আওয়ামী লীগের পক্ষে থাকে। আপনার কাজ হইল, সকল ক্ষেত্রে এদেরকে আওয়ামীপন্থী সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে পরিচিত কইরা তোলা। এদের নেতাদের আওয়ামী সাংস্কৃতিক কর্মী হিসাবে তুইলা ধরা। এই সংগঠনগুলার সাথে অনেক বিএনপি জামায়াতের কর্মীও জড়িত আছে। এদের শীর্ষ পর্যায়ে বিএনপি জামাতের দুই একজন আছেও। কিন্তু সংগঠনগুলো সব সময় আওয়ামী স্বার্থ রক্ষার বাইরে এক পাও ফেলে না। অনেক মানবাধিকার কর্মী আছে নিরপেক্ষতার বেশ ধইরা কাজ করে। এরাও আওয়ামী মানবাধিকার রক্ষার বাইরে এক পাও ফেলে না। গত পনের বছরে বিএনপি জামাতের লোকদের সাথে যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে তার বিরুদ্ধে এরা একটা বাক্যও ব্যয় করেনি। অনেক নারীবাদীকেও পাবেন যারা আওয়ামীমনা নারী ছাড়া আর কারও অধিকার নিয়া সোচ্চার না। খালেদা জিয়ার মত একজন নারীর সাথে সরকার যা করছে তার প্রতিবাদে এই নারীবাদীরা একটা বিবৃতিও দেয়নি। সুতরাং এই মানবাধিকার কর্মী ও নারীবাদীদেরও সর্বদা আওয়ামীপন্থী হিসেবে উল্লেখ করুন। দেখবেন, অর্ধেক যুদ্ধজয় হয়ে গেছে। দিপ্র হাসান

Wednesday 21 June 2023

রাজনৈতিক সংকটের কি সুন্দর একটা সমাধান প্রস্তাব করেছিল বিএনপি

ফিফটিন্থ এমেন্ডমেন্টের সংবিধানিকতা নিয়ে কত বড় একটা সেমিনার করে ফেললো বিএনপি তার কোন খবর মিডিয়ায় দেখিনা, ফেসবুকেও দেখিনা ۔ এর আগে , মাস ছয়েক বা তারও আগে চলমান রাজনৈতিক সংকটের কি সুন্দর একটা সমাধান প্রস্তাব করেছিল বিএনপি তা নিয়েও খুব বেশী হৈচৈ নেই ۔ ইলেকশনের পরে সব দল থেকে যোগ্যদের নিয়ে জাতীয় সরকার করার ঘোষণা , দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠন , উচ্চ কক্ষে পেশাজীবী মানুষদের প্রতিনিধিত্ব প্রতিষ্ঠা যা অনেকটা ইংল্যান্ডের হাউজ অব লর্ডসের আদলে , এসমস্ত যুগান্তকারী কথাগুলো নিয়ে কারো কোন মাথাব্যথা নেই ۔ এই মিডিয়াকে এই ফ্যাসিবাদ দাবায়ে রাখছে বুঝলাম , মুক্তভাবে লেখালেখি করে এমন ফেসবুকাররাও বিএনপির কনসেপ্টগুলো নিয়ে আলাপ করেনা ۔ আহারে , পেশিশক্তি প্রয়োগ করেনা দেখে বিএনপিকে খুব দুর্বল ও নাজুক মনে করে সবাই , বহুদিন ক্ষমতাহারা হয়ে বেচাহারা টাইপের একটা ইমেইজ যেন লেপ্টে গেছে বিএনপির চেহারায় , তাইনা ? ডোন্ট ওরি , এইটা বেশীদিন থাকবেনা ۔

Friday 16 June 2023

DALO application

ফ্রান্সে Logement social বা সরকারি ঘরের আবেদনে অনেক খুঁটিনাটি বিষয়ে সতর্ক থাকতে হয়, নতুবা আবেদন মজবুত তো হয়-ই না বরং রিজেক্ট কিংবা বছরের পর বছর ধরেই সেই আবেদনটাকে ঝুলে থাকতে দেখা যায়। যেমন কেউ RSA তে আছে, তার নিজস্ব কোনো আয় নেই। সে যা পাচ্ছে তা Prestation sociale, আবার অন্যদিকে সে ঘরের আবেদন ফর্মে লিখে দিলো যে, সে ঘর চায় প্যারিস ৮ কিংবা ১৬ তে। আবার অন্য কোনো এলাকায় ঘর প্রপোজ করলে তা এক্সেপট করবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে সে লিখে দিলো একদমই না, সাথে আবার লিখলো পার্কিং ও চাই-ই চাই। তাইলে তো বছরের পর বছর যাবেই, আর ঘরও যে আসবেনা সেটাই তো খুব স্বাভাবিক। আবেদন মজবুত ও সুন্দর করতে নিম্নে কিছু টিপ্স দিলাম আশাকরি অনেকেরই উপকারে আসবে: •কত টাকার মধ্যে ঘর চান এমন প্রশ্নে লিখবেন আপনার মাসিক আয়ের তিন ভাগের এক ভাগ। যেমন আপনার মাসিক আয় ১৫০০ ইউরো, আপনি ঘর চাইবেন ৫০০ ইউরোর মধ্যে। আপনার মাসিক আয় ১৮০০ ইউরো, আপনি চাইবেন ৬০০ ইউরোর মধ্যেই। •ঘর চাইবেন আপনার কর্মস্থল কিংবা আপনার বর্তমান ঠিকানা এই দুই এলাকার মধ্যেই। আশপাশের একাধিক এলাকা ও উল্লেখ করবেন, এবং নিচে যে দুইটি টিক চিন্থ থাকে যেখানে অন্য এলাকায় ঘর প্রপোজ করলে এক্সেপট করবেন কিনা? এমন প্রশ্নে সেখানে অবশ্যই হ্যা লিখে দিবেন। •সরকারি ঘরগুলা বেশীরভাগই Dalo থেকেই দিয়ে থাকে। তাই ইউনিক নাম্বারটি হাতে পাওয়ার কিছুদিন পরই Dalo তে যুক্তিগত একটি কারণ দেখিয়ে ঘরের আবেদন করে নিবেন। ফর্মের শেষ পৃষ্টায় যেখানে Argumentaire libre নামক একটি জায়গা থাকে (নিম্নের পিকচারে দেখুন) সেখানে অবশ্যই স্বাধীন ও শক্ত মনে কিছু লিখবেন। আপনার সমস্যা ও প্রয়োজনীয়তা সুন্দর করেই সেখানে বর্ণনা করবেন। প্রয়োজনে অপ্ফখার দেয়া রাজনৈতিক আবেদনের ফর্মে যেমন এই প্রশ্নের উত্তরে আমরা এক্সটা ৩/৪ পৃষ্টা লাগাই, ঠিক এখানেও তেমনিই লাগাবেন।

Tuesday 13 June 2023

সামিটের আজিজ খান এবং সামিট সিঙ্গাপুরের বড় আর্টের সমঝদার

সামিটের আজিজ খানেরা গত এক দশকে বাংলাদেশকে যেভাবে লুট করেছে, ব্রিটিশরাও সেভাবে করেনি। তারা বিদ্যুৎ কেন্দ্র করেছে দেশি ব্যাংকের ঋণে। সেই ঋণে যে যন্ত্রপাতি আমদানি করেছে তার একটা অংশ পাচার করেছে ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জে। ইন্টারন্যাশনাল কন্সোরটিয়াম অফ ইনভেস্টিগেটিভ জারনালিস্টের প্রকাশিত ২০১৬ সালের পানামা পেপারসে জনাব আজিজ খান, তার স্ত্রী এবং তিনজন পরিবারের সদস্যের নাম আসে। পানামা পেপারসে দেখানো হয়, তারা ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জে সিঙ্গাপুরের ঠিকানা ব্যবহার করে ছয়টি অফশোর কোম্পানি পরিচালনা করছেন। আমি একটা ছবি দিলাম, ছবিটা সরাসরি পানামা পেপারসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া। যে অর্থ সামিটের আজিজ খানেরা ভার্জিন আইল্যান্ডে পাচার করেছে, যে অর্থ দিয়ে সামিট সিঙ্গাপুরের বড় আর্টের সমঝদার হয়েছে সেই অর্থ থাকলে আজ বাংলাদেশ জ্বালানী সংকটে আপনার লোডশেডিং হতো না, শিল্পোৎপাদন বন্ধ হয়ে যেত না, জেনারেটর দিয়ে প্রসুতির বাচ্চার জন্মের সময়ে অপারেশন করতে হতো না। কিন্তু যন্ত্রপাতি ক্রয়ে এই অর্থপাচার লুটের শুরু মাত্র। বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলো ক্রয়ের পর দায়মুক্তি দিয়ে তাদের সাথে যে চুক্তি করা হয়েছে সেই চুক্তিতে বিদ্যুৎ কেনায় তাদের অস্বাভাবিক মুনাফা করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এবং বিদ্যুৎ কেনা না হলে, তারা অস্বাভাবিক হারে ক্যাপাসিটি চারজ পেয়েছে। ২০১৯-২০ সাল পর্যন্ত এক দশকে সামিট ৭৬৮৯.৯৫ কোটি টাকা নিয়েছে শুধু মাত্র ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে- এক মুহূর্ত চিন্তা করেন এই ৮০০০ কোটি টাকা কত বড় অঙ্কের টাকা। পূর্বের হিসেবে ৮ হাজার কোটি টাকা প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ আইএমকে তার সভ্রেন্টি বেচে দিয়েছে, ৩ বছরে ৪.৫ বিলিয়ন ডলার আয়ের জন্যে, অর্থাৎ বাংলাদেশ বছরে আইএমএফের কাছে সর্বোচ্চ ১.২ বিলিয়ন ডলার পাবে। অন্য দিকে এই সামিট একলাই এক বিলিয়ন ডলার সমপরিমানের অর্থ নিয়ে গ্যাছে শুধু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চারজ হিসেবে। তাদের এলএনজি বা অন্য প্রজেক্টের হিসেব বাদ দিলাম। কিন্তু এখানে শেষ নয়। সামিট এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলো আবার শেয়ার বাজারে ------------ বাকি লেখাটা আমার Zia Hassan এ গিয়ে পড়েন। সেখানে সাবস্ক্রাইব করেন। এই প্রোফাইলটি এল্গোরিদ্মের রেস্ট্রিকশানের কারনে একটা মৃত দেয়াল। আমি সব লেখা ঐ প্রোফাইলেই দিচ্ছি। @ziahassanpage টিকে আমার নতুন করে গড়তে হচ্ছে। আপনাকে @ziahassanpage সাবস্ক্রাইব করার অনুরোধ করছি। বৃষ্টির কারনে দাবদাহ কমে বাংলাদেশের মানুষ কিছু দিন স্বস্তিতে আছেন শুনে ভালো লাগলো। শুভেচ্ছো।

Sunday 11 June 2023

২০১৮ সালের রাতের নির্বাচনে কীর্তিমান পুলিশ মহারাজদের নামের তালিকা:

---------------------- ইনারাও মেধাবী কর্মকর্তা। কেবল ভোটের আগের দিন ১ নম্বরের ফোন পেয়ে দিশেহারা হয়ে যায়, উপরন্তু প্রচুর টাকা পেয়েছিল বিতরণ করতে, পাশাপাশি তাদের সিনিয়র অফিসাররা মনিটর করে তারা যেনে সঠিকভাবে আগের রাতেই নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করার মত ভোটে এগিয়ে রাখে। রিটার্নিং অফিসারের এবং দায়িত্বরত সেনা অফিসারদের সাথে লিয়াঁজো করে তারা ভোটকাটার কাজটি সফলভাবে সম্পন্ন করে। বাকী ফলাফল জাতি দেখেছে, কিন্তু তারা ভোট দিতে পারে নাই। ২০১৮ সালে বিভিন্ন জেলায় এসপি হিসেবে জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ অফিসারের নাম, ব্যাচ, বর্তমান পদবী ও বর্তমান কর্মস্থলের তালিকা। ২০১৮ সালের দায়িত্ব বর্তমান কর্মস্থল ----------------- ------------- ঢাকা বিভাগ ১। ঢাকা জেলা: শাহ মিজান শাফিউর রহমান (২০ ব্যাচ- বর) ডিআইজি, সিলেট রেঞ্জ। ২। গাজীপুর জেলা: শামসুন্নাহার, (২০ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ৩। নারায়ণগঞ্জ জেলা: মো: হারুন অর রশীদ (২০ ব্যাচ)- ডিআইজি, ডিবি, ডিএমপি। ৪। নরসিংদী জেলা: মিরাজ উদ্দীন আহমেদ (২০ ব্যাচ)- ডিআইজি, পিবিআই, ঢাকা। ৫। মানিকগঞ্জ জেলা: রিফাত রহমান শামীম (২৪ ব্যাচ)- ডিসি, ডিএমপি। ৬। মুন্সীগঞ্জ জেলা: জায়েদুল আলম (২২ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, ডিএমপি। ৭। ফরিদপুর জেলা: জাকির হোসেন খান (২০ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, ডিএমপি। ৮। শরীয়তপুর জেলা: আবদুল মোমেন (২৪ ব্যাচ)- ডিসি, গুলশান টাফিক, ডিএমপি। ৯। মাদারীপুর জেলা: সুব্রত কুমার হালদার(২১ ব্যাচ)- এসপি, পুলিশ একাডেমী সারদা। ১০। গোপালগঞ্জ জেলা: মোহাম্মাদ সাইদুর রহমান খান(২০ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, ঢাকা রেঞ্জ। ১১। রাজবাড়ী জেলা: আসমা সিদ্দিকা মিলি(২৪ ব্যাচ)- ডিসি, ডিএমপি। ১২। কিশোরগঞ্জ জেলা: মাশকুর রহমান খালেদ(২০ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, ঢাকা রেঞ্জ। ১৩। টাংগাইল জেলা: সঞ্জিত কুমার রায় (২২ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, ডিএমপি। চট্টগ্রাম বিভাগ: ১৪। বিবাড়িয়া জেলা: আনোয়ার হোসেন খান(২০ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, র‍্যাব। ১৫। কুমিল্লা জেলা: সৈয়দ নুরুল ইসলাম (২০ ব্যাচ)- ডিআইজি, ঢাকা রেঞ্জ। ১৬। চাঁদপুর জেলা: জিহাদুল কবির (২০ ব্যাচ) - ডিআইজি, শিল্পাঞ্চল পুলিশ, ঢাকা। ১৭। লক্ষীপুর জেলা: আসম মাহাতাব উদ্দিন (২১ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, সিএমপি, চট্টগ্রাম। ১৮। ফেনী জেলা: এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার(২২ ব্যাচ)- এসপি, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স। ১৯। নোয়াখালী জেলা : ইলিয়াস শরীফ (২০ বিসিএস)- কমিশনার, এসএমপি (সিলেট) ২০। চট্টগ্রাম জেলা: নুরে আলম মিনা (২০ ব্যাচ)- কমিশনার, রংপুর মেট্রপলিটন পুলিশ। ২১। কক্সবাজার জেলা: এবিএম মাসুদ হোসেন(২৪ ব্যাচ) এসপি, রাজশাহী। ২২। বান্দরবান জেলা: মোহাম্মদ জাকির হোসেন মজুমদার (২২ ব্যাচ) এসপি, বরিশাল মেট্রপলিটন পুলিশ। ২৩। রাঙ্গামাটি জেলা: আলমগীর কবীর (২০ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, ঢাকা। ২৪। খাগড়াছড়ি জেলা: মোহা: আহমার উজ্জামান (২১ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, এসবি। সিলেট বিভাগ: ২৫। সিলেট জেলা: মো: মনিরুজ্জামান(২০ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, এসবি। ২৬। মৌলভীবাজার জেলা: মোহাম্মদ শাহ জালাল (২১ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ২৭। সুনামগঞ্জ জেলা: মো: বরকতুল্লাহ খান, (২০ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, হাইওয়ে পুলিশ ২৮। হবিগঞ্জ জেলা: মোহাম্মদ উল্লা(২৪ ব্যাচ) এসপি, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স। ময়মনসিংহ বিভাগ: ২৯। ময়মনসিংহ জেলা: শাহ আবিদ হোসেন (২০ ব্যাচ)- ডিআইজি, এপিবিএন, ঢাকা। ৩০। নেত্রকোনা জেলা: জয়দেব চৌধুরী(২১ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, হাইওয়ে পুলিশ ৩১। শেরপুর জেলা: কাজী আশরাফুল আজীম (২৪ ব্যাচ)- এসপি, নরসিংদী জেলা। ৩২। জামালপুর জেলা: মো: দেলোয়ার হোসেন (২১ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, জিএমপি, গাজীপুর। রংপুর বিভাগ ৩৩। পঞ্চগড় জেলা: গিয়াস উদ্দিন আহমদ(২০ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, সিলেট রেঞ্জ। ৩৪। লালমনিরহাট জেলা: এসএম রশিদুল হক (২১ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, রংপুর রেঞ্জ। ৩৫। গাইবান্ধা জেলা: আব্দুল মান্নান মিয়া (২২ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, এন্টি টেরোরিজম ইউনিট, ঢাকা। ৩৬। ঠাকুরগাঁও জেলা: মোহা. মনিরুজ্জামান (২০ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, এন্টি টেররিজম ইউনিট, ঢাকা। ৩৭। কুড়িগ্রাম জেলা: মেহেদুল করিম(২০ ব্যাচ): অতিরিক্ত ডিআইজি, পুলিশ স্টাফ কলেজ ঢাকা ৩৮। দিনাজপুর জেলা: সৈয়দ আবু সায়েম(২২ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, ৪র্থ এপিবিএন (বগুড়া) ৩৯। নীলফামারী জেলা: মোহাম্মাদ আশরাফ হোসেন(২৪ ব্যাচ)- ডিসি, রমনা বিভাগ, ডিএমপি। ৪০। রংপুর জেলা: মিজানুর রহমান(২১ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, রংপুর রেঞ্জ। রাজশাহী বিভাগ ৪১। নওগাঁ জেলা: মো: ইকবাল হোসেন(১৮ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, হাইওয়ে পুলিশ। ৪২। জয়পুরহাট জেলা: মো: রশীদুল হাসান(২০ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, রাজশাহী রেঞ্জ। ৪৩। বগুড়া জেলা: আলী আশরাফ ভুঞা(২৪ ব্যাচ)- ডিসি, বরিশাল মেট্রপলিটন পুলিশ। ৪৪। রাজশাহী জেলা: মো. শহিদুল্লাহ(২৪ ব্যাচ)- ডিসি, গুলশান বিভাগ, ডিএমপি, ঢাকা। ৪৫। নাটোর জেলা: সাইফুল্লাহ আল মামুন(২০ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, ডিএমপি। ৪৬। পাবনা জেলা: শেখ রফিকুল ইসলাম(২০ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, এসবি, ঢাকা। ৪৭। সিরাজগঞ্জ জেলা: টুটুল চক্রবর্তী(২০ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, ঢাকা রেঞ্জ। ৪৮। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা: এটিএম মোজাহিদুল ইসলাম (২০ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, এন্টি টেররিজম ইউনিট, ঢাকা। খুলনা বিভাগ ৪৯। সাতক্ষীরা জেলা: মো: সাজ্জাদুর রহমান (২১ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, এসবি। ৫০। যশোর জেলা: মইনুল হক (২০ ব্যাচ)- ডিআইজি, খুলনা রেঞ্জ। ৫১। বাগেরহাট জেলা: পংকজ চন্দ্র রায়(২১ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, নৌ পুলিশ। ৫২। খুলনা জেলা: এসএম শফিউল্লাহ (২৪ ব্যাচ)- এসপি, চিটাগাঙ ৫৩। ঝিনাইদহ জেলা: মো: হাসানুজ্জামান(২২ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স। ৫৪। চুয়াডাঙ্গা জেলা: মাহবুবুর রহমান (২০ ব্যাচ)- ডিআইজি, হাইওয়ে পুলিশ, ঢাকা। ৫৫। কুষ্টিয়া জেলা: এসএম তানভীর আরাফাত(২৪ ব্যাচ)- এসপি, বরিশাল মেট্রপলিটন পুলিশ। ৫৬। মেহেরপুর জেলা: মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান (২৪ ব্যাচ)- ডিসি, সিএমপি, চট্টগ্রাম। ৫৭। নড়াইল জেলা: মোঃ জসিম উদ্দিন(২৪ ব্যাচ)- ডিসি, সিএমপি, চট্টগ্রাম। ৫৮। মাগুরা জেলা: খান মুহাম্মদ রেজোয়ান(২০ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, এসপিবিএন ২, ঢাকা। বরিশাল বিভাগ ৫৯। বরিশাল জেলা: সাইফুল ইসলাম(২০ ব্যাচ)- কমিশনার, বরিশাল মেট্রপলিটন পুলিশ। ৬০। পিরোজপুর জেলা: মোহাম্মদ সালাম কবির (২২ ব্যাচ)- এসপি, সিএমপি। ৬১। ভোলা জেলা: মো: মোকতার হোসেন(২১ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, সিআইডি। ৬২। ঝালকাঠি জেলা: মো: জোবায়েদুর রহমান (২০ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, এসএমপি, সিলেট। ৬৩। পটুয়াখালী জেলা: মোহাম্মদ মইনুল হাসান (২৪ ব্যাচ)- ডিসি, ডিএমপি। ৬৪। বরগুনা জেলা: মারুফ হোসেন (২২ ব্যাচ)- অতিরিক্ত ডিআইজি, র‍্যাব। বি: দ্র: দেখা যাচ্ছে ৬৪ জেলার এসপিদের মধ্যে ০১ জন অফিসার ১৮ বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তা যারা ১৯৯৯ সালে আওয়ামী আমলে পুলিশে যোগদান করে। ২৯ জন অফিসার ২০ বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তা যারা ২০০১ সালে আওয়ামী আমলে পুলিশে যোগদান করে। ১১ জন অফিসার ২১ বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তা যারা ২০০৩ সালে বিএনপি সরকারের আমলে পুলিশে যোগদান করে। ৯ জন অফিসার ২১ বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তা যারা ২০০৩ সালে পুলিশে যোগদান করে। ১৪ জন অফিসার ২৪ বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তা যারা ২০০৫ সালে বিএনপি সরকারের পুলিশে যোগদান করে। অর্থ্যাৎ ২১/২২/২৪ ব্যাচের ৩৪ জন কর্মকর্তাই বিএনপি আমলে পুলিশে যোগদান করে।

Saturday 10 June 2023

ঘৃণা প্রচার পারস্পরিক বিদ্বেষ, দ্বন্দ্ব ও বিভাজন

আর সব কথা বাদ দিই, একটা দেশে ও সমাজে একটানা ঘৃণা প্রচার করতে করতে পারস্পরিক বিদ্বেষ, দ্বন্দ্ব ও বিভাজন কোন্ পর্যায়ে নিয়ে গেছেন আপনারা, ভেবে দেখুন। আওয়ামী লীগ বনাম বিএনপি, মুসলমান বনাম হিন্দু, নারী বনাম পুরুষ, সমতলবাসী বনাম পাহাড়ি, সেক্যুলার বনাম ধর্মীয় মূল্যবোধপন্থী, ভারতপ্রেমী বনাম পাকিস্তানপন্থী, মার্কিনভক্ত বনাম চীন-রুশপন্থী, সুফিবাদী বনাম সালাফী, হানাফি বনাম আহলে হাদিস, শিয়া বনাম সুন্নি (আরো আছে তবলিগী, কওমী, দেওবন্দী উপশাখাভিত্তিক বিভক্তি), সামরিক বনাম 'ব্লাডি সিভিলিয়ান', গ্রামীন বনাম শহুরে, পাবলিক ইউনিভার্সিটি বনাম প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি, রাজনীতি সক্রিয় বনাম 'আই হেট পলিটিক্স', অনলাইন বনাম অফলাইন .... এ রকম আরো হরেক রকম বিভাজন। শিক্ষিত-অশিক্ষিত ও ধনী-গরীবের ফারাকের কথা না-ই বললাম। এর বাইরে অঞ্চলে অঞ্চলে, জেলায় জেলায় বিরোধ তো আছেই। বিরোধ-বিভাজন উস্কাতে উস্কাতে আমরা জাতির ঐক্যসূত্রই নষ্ট করে ফেলেছি। জাতীয় সংহতিকে সম্পূর্ণ বিপন্ন অবস্থায় নিয়ে গেছি। এখন একজন আরেকজনের কোনো বিপর্যয়ে, এমনকি মৃত্যুতেও উল্লাস প্রকাশ করে। অনুভূতির দিক থেকে আমরা আর এক জাতি বা সম দেশবাসী আছি কিনা সন্দেহ। এই ঘৃণাচর্চা আমাদের জাতীয় মানসিকতাকেই সম্পূর্ণ বিকৃত করে ফেলেছে। বিপজ্জনকভাবে বিনষ্ট করে ফেলেছে আমাদের জাতীয় অখণ্ডতাকে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, বিদেশীরা এসেও যদি আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষকে আঘাত করে, তখন আমরা উল্লাস করে সে আঘাতকে স্বাগতঃ জানাবো। ক্ষুদ্র ও সংকীর্ণ স্বার্থে যারা এতোকাল ঘৃণা ও বিভাজনকে উস্কে দিয়ে আসছেন আজ তারাই এর সবচেয়ে বড় শিকার হবার সময় চলে এসেছে। সেটা না হয় হলো কিন্তু এতে করে পুরো দেশ ও জাতির বর্তমান ও ভবিষ্যৎ যে অনিশ্চিত আশংকার মুখোমুখি হয়েছে, তার কী হবে? সংকটের কথাটা তো বললাম, তা'হলে সমধান কী? ঘৃণাজীবী ও বিভাজনপন্থীরা এখনো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রে বসে আছে। তাদেরকে বহাল রেখে এ সংকটের সমাধান হবে না। দেশ ও সমাজে যারা ঘৃণা-বিভেদের সংস্কৃতির প্রবর্তন করেছে, সব কিছুর আগে তাদেরকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। আমি তাদেরকে সম্পূর্ণ নির্মূল করে ফেলার কথা বলছি না। বলছি ঘৃণাবাদকে পরাস্ত করার কথা। দেশ ও সমাজে বিভাজনের এই রাজনীতি-দর্শন-সংস্কৃতি অবাঞ্ছিত করতে হবে। আমাদের স্বাধীনতার কোর ভ্যালুজ বা মূল্যবোধের ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্য ও সংহতির পাটাতন তৈরি করতে হবে। বৃহত্তর জনসমাজে সঞ্চারিত করতে হবে একাত্মবোধ। সেটা হবে জাতি-রাষ্ট্র-সমাজ গঠন বা পুনর্গঠনের আসল কাজ। এটা যদি আমরা করতে না পারি তা'হলে জাতীয় সার্বভৌমত্ব তো আমরা আগেই খুইয়েছি অনেকখানি, স্বাধীনতা হারাবার শংকাও কিন্তু তৈরি হবে। 🌗

Sunday 14 May 2023

সেন্ট মার্টিনে কত প্রমোদতরী আসতো, কেয়ারী আসতো। এই প্রলয়ের রাতে কেবল ঈশ্বরই আছেন তাদের সাথে।

সেন্ট মার্টিন বা নারিকেল জিঞ্জিরা হলো সেই এলাকা যেখানে ঈশ্বর থাকেন কিন্তু সরকার কম থাকেন। ঈশ্বর থাকেন সেখানকার শত শত এতিম শিশুদের সাথে, তাদের বাবারা তাদের ছেড়ে চলে গেছে। হয় সমুদ্র থেকে আর ফেরেনি, নয়তো মৌসুমী বিয়ে করে এখন অন্য জায়গায় আরেক সংসার পেতেছে। এটা সেই জায়গা যেখানকাার যুবকদের এলাকায় কোনো বড় হওয়ার সুযোগ নাই, ট্যুরিস্ট গাইড হওয়া ছাড়া অথবা অটো চালক, অথবা রেস্টুরেন্টের মেসিয়ার। সরকার ব্যবস্থা না করলে তাদের আসলেই যাওয়ার কোনো জায়গা নাই। এরকম আট হাজার মানুষ সেখানে আটকা। এটুকু মানুষের জন্য কিছু করা গেল না? মাত্র ৪৫ মিনিটের দূরত্ব। ছোট্ট এই জায়গাটাকে তারা পৃথিবী ভেবে সেখানেই ঘুরপাক খেয়েছে ভাগ্য গড়ার জেদে। দ্বীপটা যখন ডুবে যাবে, অনেক মানুষ মারা যাবে, তখন সরকার আর সাংবাদিক টেকনাফে বসে সব দেখবে। তাদের মাথার ওপর ঘুরবে টিনের তৈরি এক বঙ্গ স্যাটেলাইট। সেই স্যাটেলাইট আর তার সরকার জননী গত দুদিনে একটা উদ্ধার জাহাজও পাঠাতে পারেনি! ২৬ এপ্রিল থেকে জানা ছিল, একটা বড় কিছু আসছে। অথচ
তিনিই জানেন, তাঁর মনে কী আছে। কাকে মেরে তিনি কাকে শিক্ষা দেন; কে তা বলতে পারে! * সেন্ট মার্টিনের দুজন অধিবাসীর নম্বর ছিল। একজন হাফেজ ভাই, তিনি তাঁর পরিবারকে গতকাল স্পিড বোটে টেকনাফ পাঠিয়ে বসে ছিলেন কী হয় কী হয় ভেবে। আরেকজন এতিম শিশু জাহিদের এক বড় ভাইয়ের। সেই নম্বরটায় পোঁছাতে পারিনি। [Faruk Wasif]

রক্ষীবাহিনী কেমন ছিলো তা হুমায়ুন আহমেদ-এর মা আয়েশা ফয়েজের লেখা

আমরা বললেই দোষ? রক্ষীবাহিনী কেমন ছিলো তা হুমায়ুন আহমেদ-এর মা আয়েশা ফয়েজের লেখা পড়ে ইয়াং জেনারেশন জেনে নিও। ‘বাবর রোডের বাসায় ওঠার তিন দিন পর হঠাৎ একদিন রক্ষীবাহিনী এসে হাজির হলো। একজন সুবেদার মেজর জিজ্ঞাসা করল , এ বাড়ি আপনি কোথা থেকে পেলেন ? আমি বললাম সরকার আমাকে দিয়েছে। আমার স্বামী যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন তাই। সুবেদার মেজর কিছু না বলে চলে গেল। . আমার মনের ভেতর হঠাৎ করে একটা খটকা লেগে গেল। হঠাৎ করে রক্ষীবাহিনী আসছে কেন? খাণিকক্ষণ পর আরেকজন সুবেদার মেজর এসে হাজির। সে একা নয় , তার সঙ্গে বোঝাই এক ট্রাক রক্ষীবাহিনী।
. সবার হাতে অস্ত্র। সুবেদার মেজরের নাম হাফিজ। ভেতরে ঢুকে বলল , এই বাড়ি আমার। শেখ সাহেব আমাকে দিয়েছেন। আমি বললাম , সে কি করে হয়? আমার সঙ্গে বাসার অ্যালটমেন্ট রয়েছে। . সে কোনো কথা না বলে টান দিয়ে ঘরের একটা পর্দা ছিঁড়ে ফেলল। সঙ্গে আসা রক্ষীবাহিনীর সদস্যদের বলল ছেলেমেয়েদের ঘাড় ধরে বের কর। আমি এত দিনে পোড় খাওয়া পাথর হয়ে গেছি। রুখে দাঁড়িয়ে বলেছি , দেখি তোমার কত সাহস ? সুবেদার মেজর একটু থমকে গিয়ে কিছু না বলে ঘর থেকে বের হয়ে গেল। . দেখতে দেখতে পুরো এলাকা রক্ষীবাহিনী দিয়ে বোঝাই হয়ে গেল। বাসা চারদিকে ঘেরাও হয়ে আছে। কাউকে বাসায় ঢুকতেও দেয় না, বের হতেও দেয় না। কাজল (হুমায়ূন আহমেদ) মহসিন হলে ছিল। খবর পেয়ে এসেছে। . তাকেও ঢুকতে দিল না। সারা রাত এভাবে কেটেছে। ভোর হতেই আমি বের হলাম। পুলিশের কাছে গিয়ে সাহায্য চাইলাম। পুলিশ বলল — আমরা গোলামির পোশাক পরে বসে আছি। . রক্ষীবাহিনীর বিরুদ্ধে আমরা কি করব? বঙ্গভবন, গণভবন এমন কোনো জায়গা আমি বাকি রাখলাম না সাহায্যের জন্য। কিন্তু লাভ হলো না। আমি তুচ্ছ মানুষ। আমার জন্য কার মাথা ব্যথা? রাতে ফিরে এসেছি। আমাকে ভেতরে ঢুকতে দেবে না। . অনেক বলে ভেতরে ঢুকেছি। রাত আটটার দিকে রক্ষীবাহিনীর দল লাথি মেরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে গেল। ইকবাল আমাকে আড়াল করে দাঁড়াল। একজন বেয়োনেট উঁচিয়ে লাফিয়ে এলো। রাইফেল তুলে ট্রিগারে হাত দিয়েছে। চিৎকার করে কিছু একটা বলছে। গুলি করে মেরে ফেলবে আমাদের? . আমি ছেলেমেয়েদের হাত ধরে বের হয়ে এলাম। পাকিস্তান সেনাবাহিনী আমাকে প্রথমবার গৃহহারা করেছিল। বাংলাদেশ সরকারের রক্ষীবাহিনী আমাকে দ্বিতীয়বার গৃহহারা করল।’ . জীবন যে রকম’ - আয়েশা ফয়েজ

Friday 5 May 2023

কেঁদে উঠতে ইচ্ছে করলো, আমার মায়ের জন্যে। একটি মাছির জন্যে

নিউইয়র্কে বাংলাদেশী অধ্যুষিত জনপদের মুদি দোকানগুলোতে হরেক রকম আম উঠেছে।কোনোটা মেক্সিকোর, কোনোটা গুয়াতেমালা, হাইতি, ইকুয়েডর, ভেনেজুয়েলা আবার কোনোটা ফ্লোরিডার আম। ডাঁসা, রসালো। এই মধুমাসে, বিক্রমপুরে আমাদের পাড়াগাঁয়ের বাড়ীতে, পাকা আমের মৌ মৌ গন্ধে হঠাৎ হাজির হওয়া রঙ্গিন মুটো মাছিদের কথা বড়ো বেশী মনে পড়ছে। আমের আঁঠি চুষতে গিয়ে হাতের ফাঁক গলিয়ে কনুই অব্দি চুয়ে পড়া রস জিহ্বা দিয়ে চুকচুক করে চট জলদি চেটে নিতাম সেসাথে হাল্কা ধুলো আর নোনতা ঘাম। মা' ভিজে গামছায় মুখ মোছাতেন। আহা, ‘সেই যে আমার নানান রঙ্গের দিনগুলি---!’ এখন সারাদিন আম খেলেও ভনভন শব্দ তুলে মাছিরা ছুটে আসেনা ! একটি মাছিও তাড়াতে হয়না। আজ সন্ধ্যেয় আমের টুকরো মুখে তুলতেই ডুকরে কেঁদে উঠতে ইচ্ছে করলো, আমার মায়ের জন্যে। একটি মাছির জন্যে ! ----তাসের মাহমুদ, নিউইয়র্ক।

Thursday 20 April 2023

সিনেমার নায়িকা ববি, ডিবি হারুন এবং নৈতিকতা

“ডিবি প্রধান হারুনের আতিথেয়তায় মুগ্ধ ববি” এই শিরোনামে কয়েকদিন থেকে গণমাধ্যমে সংবাদ এসেছে। বাংলা সিনেমার নায়িকা ববি ডিবি পুলিশের প্রধান হারুনের সাথে দেখা করতে গিয়েছে এবং সেই সাক্ষাৎ নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে। হারুন একজন কুখ্যাত চরম দলবাজ, নিপীড়নকারী পুলিশ। ক্ষমতার অপব্যবহার, মানবাধিকার লঙ্গন, বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে যে তেলবাজির সংস্কৃতি তৈরী হয়েছে সেখানে বাংলা সিনেমার নায়িকা ববি পিছিয়ে থাকবে কেন !!! সরকারের আজ্ঞাবহ আওয়ামী পুলিশ হারুনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ নায়িকা ববি। নাগরিক হিসেবে হারুনের কর্মকান্ড ববি কি জানেনা ? অবশ্যই জানে । ববি লিখেছে,” হারুন ভাই আমাদের জন্য বরাবরই বিশেষ একজন মানুষ। তার সততা ও দেশের জন্য ভালোবাসা সত্যিই প্রশংসনীয়। বরাবরই তার আতিথেয়তা এবং সহযোগিতায় মুগ্ধ হই।” একটা কথা আছে “বিউটি উইথ ব্রেইন” অর্থাৎ সুন্দর এবং বুদ্ধিমতী। “বিউটি উইথ ব্রেইন“ সবার থাকেনা, ধারালো শরীর দিয়েই আয়-রোজগার করা যায় তাহলে ব্রেইনের কি দরকার !!! পৃথীবির দেশে দেশে শিল্পী, বুদ্ধিজীবীরা গণ মানুষের পক্ষে দাঁড়ায়, গণতন্ত্রের জন্য কথা বলে। শেখ হাসিনার এই ফ্যাসিবাদের সময়ে শিল্পী-বুদ্ধিজীবীরা সব শুয়ে পড়ে শয়তানের পদতলে। শয়তানের ঔরসে জন্ম হয় নিপীড়নকারী হাজারো জারজের !!!! প্যারিস ২১ এপ্রিল ২০২৩

Friday 24 March 2023

সরকারের ব্যর্থতা এবং মিডিয়ায় পাকিস্তানের তুলনা

আমাদের কতিপয় মিডিয়া সরকারের ব্যর্থতা ঢাকতে সবকিছুতেই পাকিস্তানের তুলনা দেয়। পাকিস্তানে দ্রব্যমূল্য বেশী, পাকিস্তানে ডলার সংকট আমাদের থেকেও বেশী, পাকিস্তানে বিদ্যুত নেই আরও কত কি। আরে বাবারা পাকিস্তান খারাপ বলেই না আজ থেকে ৫২ বছর আগে আমরা ওদের ত্যাগ করেছিলাম। তারপরও সেই পরিত্যাক্ত পাকিস্তান নিয়ে কেন এত ঘ্যানঘ্যান?

Thursday 23 March 2023

আমার দরিদ্র আম্মা এবং রমজান

আমার দরিদ্র আম্মারে মিস করতেছি, রমজান নিকটে এলেই বাড়িঘর, উঠোন, যাবতীয় আসবাবপত্র ও কাপড়চোপড় যা কিছু থাকে, রমাজানের আগে সবকিছু পলিশ করে রাখাতে যে আভিজাত্য একটা ব্যাপার থাকে, আম্মার এইসব ব্যস্ততা দেখেই অনুমান করা যাইতো। পেঁয়াজ কুচি করার সময় আম্মা প্রায়ই আব্বারে উদ্দেশ্য করে বলতেন, আগামীকাল রোজা, ভোর রাতে কি খাবো, এইসব নিয়ে কোন চিন্তা নেই, এখন প্রায় রাত দশটা কখন আসবে, কখন রান্না করবো এইসব বলতে বলতে আম্মা হাঁপিয়ে যেতেন। দারিদ্রতা এমনভাবে মুখিয়ে থাকতো যে, পুরো একটা মাস আম্মার কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে থাকতো। আম্মার দারিদ্রতা কিছুটা মসৃণ হয়েছে সম্ভবত, কিন্তু চিন্তা কমছেনা।যত চিন্তা আমাদেরকে নিয়ে, মানে তার সন্তানদের নিয়ে। কিছুক্ষণ পর আম্মা সেহরী খেতে উঠবেন নিশ্চয়ই, কি রান্না করেছেন, আগের মতো এখনো রোজার বাজার না হওয়া নিয়ে চিন্তা গুলো মনে পড়ে কিনা, জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে হয়। একটা অর্থসংকটের জীবন সার্ভাইভ না করলে অবশ্য জীবনকে চেনা যায় না। আম্মার সুস্থতা কামনা করছি। Courtesy: Mohammad abu sofaen

Thursday 9 March 2023

একটি শ্রেণী মানসিকতা

আমাদের দেশে কিছু মানুষ আছে খুব মেজাজী। প্রায় সবার সাথেই খারাপ ব্যবহার করেন। কিন্তু একই সাথে সবার সাথে এমন না। খারাপ ব্যবহার হয় বেছে বেছে। আবার এই সব মানুষরাই প্রভাবশালী বা যাদের সাথে পেরে উঠবে না তাদের সাথে খুবই নরম/মিষ্টি ব্যবহারকারী হয়ে উঠেন। এই বিষয়টি সম্ভবত আমাদের ডিএনএ তে আছে। প্রথমে আমরা মানুষদের কে মাপি, তারপর ব্যবহার ঠিক করি। শ্রেণী টা খুবই কাজ করে আমাদের মধ্যে। আমাদের কারো সাথে নতুন পরিচয় হলে প্রথম প্রশ্ন থাকে- কি করেন, কোথায় পড়েছেন, বাবা কি করেন, তারপর দেশের বাড়ি। এইভাবে আমাদের মানুষ কে মাপামাপি হয়ে যায়। তারপর ঠিক হয় কি ধরণের ব্যবহার হবে। এই সব মানুষদের মনের মধ্যে একটি শ্রেণী মানসিকতা বাস করে বলে আমার মনে হয়। Courtesy:Minhaj uddin choudhury

Tuesday 7 March 2023

আমার বড় ফুফু এবং লাউশাক পাতা

আমার বড় ফুফু মলা মাছ রান্নার সময় নামানোর আগে কড়াইয়ের একপাশে কয়েকটা লাউশাক পাতা চিড়ে দিতেন।চিড়ে দিতেন। খাওয়ার সময় প্লেটের একপাশে লাউশাক পাতা রেখে, অল্প অল্প করে মাখিয়ে খেতেন। ফুফু বলতেন, মলা মাছের ঝোলে দেয়া লাউশাক খেতে খুব মজা। আসলেই অনেক মজা খেতে। ফুফুদের বাড়ি ছিলো কর্ণফুলী নদীর কাছেই, টাটকা মাছ রান্না হতো, ফুফুর হাতের রান্নার সেই স্বাদ এখনো মিস করি। আজকে মলার ঝোলে আমিও লাউশাক দিয়েছি। ফুফুকে মিস করছি খুব। তিনি বেঁচে নেই, স্মৃতিটা রয়ে গেছে। আসলে খাবার শুধু খাবার নয়, এর সাথে জড়িয়ে থাকে আমাদের প্রতিদিনের ইমোশন। Collected From Facebook

Saturday 4 March 2023

সহনশীল হোন। অপরকে সম্মান করুন।

কাদিয়ানীরা কাফের - কারণ তারা আমার প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা) কে অস্বীকার করে। তাই তাদের বিরুদ্ধে আপনি গর্জে উঠে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছেন। ফেলতেছেন। ফেলুন। তো, হিন্দুরাও তো আমাদের প্রিয় নবীকে স্বীকার করে না - তারাও তো কাফের! ঠিক কি না? খৃস্টানারাও আমাদের প্রিয় নবীকে স্বীকার করে না - তারাও তো কাফের। তাই না? ইহুদীরাও আমাদের প্রিয় নবীকে স্বীকার করে না - তারাও কাফের। বৌদ্ধরাও আমাদের প্রিয় নবীকে স্বীকার করে না - সুতরাং তারাও কাফের। আপনি বাদে আর যারা যারা ইসলাম ধর্মকে স্বীকার করে না তারা সকলেই কাফের। আর এদের সংখ্যা টা হচ্ছে ৬.৮ বিলিয়ন। এই পৃথিবীতে নামকাওয়াস্তে মুসলিমের সংখ্যা হচ্ছে ১.৮ বিলিয়ন; আউট অব ৮ বিলিয়ন। অর্থাৎ ৬.৮ বিলিয়ন কাফেরের সংগে আপনি কেন বসবাস করে চলছেন! এবার একটু লজ্জা করছে না? আপনার মতমাতের সংগে ৬.৮ বিলিয়ন মানুষেরই কোন মিল নেই। তারা কি আপনাকে অপছন্দ করে যতটা আপনি তাদের ঘৃণা করছেন? সহনশীল হোন। অপরকে সম্মান করুন। এই ৬.৮ বিলিয়ন কাফেরকে ইসলামের পথে আনেতে আপনার কি আদৌ কোন ভূমিকা আছে? রেখেছেন কোনও ভূমিকা? আপনি নিজে আজ ফজরের নামাজে মসজিদে গিয়েছেন? এই ৬.৮ বিলিয়ন কাফের আপনার ঠিক কোন গুনটা দেখে আপনার ইসলাম ধর্মের প্রতি সম্মান জানাবে একটু বলতে পারবেন? আছে আপনার সেরূপ কোনও গুন - যা দেখে অন্যে আপনাকে সম্মান করবে? আগে নিজে মানুষ হোন। আগে নিজে আপনি মুসলিম হোন। আপনি যেদিন প্রকৃত মুসলিম হতে পারবেন - সেদিন আর এভাবে ভিন্ন মতের মানুষদের প্রতি উগ্রতা প্রদর্শন করবেন না। তখন সহসশীল হতে শিখবেন। মুহাম্মদ (সা) নবুয়ত পাবার পর কি আরবদের ‘কাফের’ কাফের’ করে গালাগালি শুরু করে দিয়েছিলেন না কি নিজের মহানুভবতা, নিজের ব্যক্তিত্ব দিয়ে তাদের সম্মানের সংগে ইসলাম কবুলের আহ্বান জানিয়েছিলেন? আপনাদের ভাব দেখে মনে হচ্ছে সেই আমলে ফেইসবুক থাকলে মুহাম্মদ (সা) তাদের কাফের কাফের করে ফেইসবুকে ভাইরাল করে ফেলতেন। ইসলাম সহসশীলতা শিখায়। কাউকে গালি দিয়ে বা জোরে করে ধর্মে আসতে ইসলাম শিক্ষা দেয়নি। আপনার আচরণে যেন অন্যেরা ইসলামে আগ্রহী হয় - সেটাই ইসলাম শিখায়। সেই আচরণ কি আপনি আদৌ প্রদর্শন করেছেন কখনও? আগে নিজে সুস্থ মানুষ হোন, তারপর অন্যকে গালাগালি করবেন; তবে মনে রাখবেন সুস্থ মানুষরা ভিন্ন মতাবলম্বীদের গালাগালি করে না। এভাবে চিল্লাফাল্লা করে কাদিয়ানীদের থামাতে পারবেন না। কাজেই অপ্রয়োজনীয় চিৎকার চেচামেচি মুল্যহীন। নিজের গলা ব্যাথা হয়ে যাবে। আপনি বরং আপনার নিজের আচরণ পরিশুদ্ধ করুন। অতপর দেখবেন, তারাসহ অন্যরাও তখন আপনাকে দেখে মুগ্ধ হবে, সম্মান জানাবে, আপনার কথা শুনতে চাবে। এভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হয় না। বরং ইসলামের গাম্ভীর্য নস্ট হয়, আপনার জন্য ইসলামী মুল্যবোধ নস্ট হচ্ছে। আগে নিজে শুদ্ধ হোন। আর যে বা যারা আমাদের রাসুল মুহাম্মদ (সা)কে মানে না - সে তো অটোমেটিক্যালী অমুসলিম হয়ে যাচ্ছে, তাতে আপনার চিল্লাচিল্লিতে কি আসে যায়? আপনাকে কে সার্টিফিকেট ইস্যূ করার দায়িত্ব দিলো?

Thursday 2 March 2023

তুমি বলেছিলে

তুমি বলেছিলে রাতে তোমার ঘুম হয় না; আমি বুঝেছিলাম সময় চাইছো; তুমি বলেছিলে আকাশে কী মেঘ করেছে দেখো! আমি বুঝেছিলাম তোমার মন খারাপ। তুমি বলেছিলে চুলে জট বেধেছে; আমি বুঝেছিলাম তুমি স্পর্শ চাইছো। তুমি বলেছিলে আজ বিকেলে তুমি বারান্দায় থাকবে; আমি বুঝেছিলাম সাক্ষাত চাও। তুমি বলেছিলে অন্ধকারে আমার বড্ড ভয়; আমি বুঝেছিলাম তোমার আমাকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছে; তুমি বলেছিলে সমুদ্রে যাবে; আমি বুঝেছিলাম পাশাপাশি হাত ধরে হাঁটতে চাইছো। তুমি বলেছিলে নীল প্রিয় রঙ, আমি বুঝেছিলাম তোমার কষ্ট হচ্ছে; তুমি বলেছিলে ঠোঁট ফেটেছে, আমি বুঝেছিলাম চু মু খেতে চাইছো; তুমি বলেছিলে অংক ভালো লাগেনা, আমি বুঝেছিলাম তুমি কবিতা ভালোবাসো; তুমি বলেছিলে আজ তাড়াতাড়ি ঘরে ফিরতে হবে; তুমি বলেছিলে এই হুটহাট দেখা করা,অসময়ে ফোন করা আর তোমার ভালোলাগছেনা; আমি বুঝে গিয়েছিলাম,বিচ্ছেদ চাইছো। তারপর অলিখিত স্বাক্ষরে তুমি যখন ইনভিজিবল কোর্টে আমার বিরুদ্ধে বিচ্ছেদের মা ম লা ঠুকে দিলে; আমি বুঝেছিলাম তুমি মুক্তি চাও। এরপর সব বুঝে যখন আমি দার্শনিক, সব মিটিয়ে তুমি যখন অন্য ঘরের শো-পিস, একদিন আমাদের দেখা হলো তখন; তুমি জিজ্ঞেস করেছিলে, কেমন আছো? আমি বুঝে গিয়েছিলাম তুমি ভালো নেই। শেষ পর্যন্ত তাই হলো! একজন হুমায়ুন ফরিদী!

Tuesday 28 February 2023

ফুলপরী এবং বেজন্মাদের গল্প !!!

ফুলপরী, বাবা-আদর করে নাম রেখেছে মেয়েটির। স্কুল-কলেজ শেষ করে মেয়েটি পড়তে যায় বিষবিদ্যালয়ে। সেখানে গিয়ে ছাত্রলীগ নামের বেজন্মা-নষ্টদের নির্যাতনের শিকার হয় ফুলপরী। বিবস্র করে নির্যাতন করা হয় সেইসাথে ভিডিও করে রাখা হয়। ছাত্রলীগের বেজন্মারাই তদন্ত করে জানায় এই ধরণের ঘটনা ঘটেনি !!! রাষ্ট্র-আদালত-বুদ্ধিজীবী-নারী নেত্রী সবাই নিশ্চুপ। ফুলপরীর দুর্ভাগ্য, সে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কিংবা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্য নয়। সংখ্যালঘু হলে বিচারের দাবিতে সরগরম হতো রাজপথ,বিশ্ব বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। নারী নেত্রীরা ছুটে আসতেন, মানবাধিকার কর্মীরা আসতেন হয়তো উচ্চ আদালত স্বপ্রনোদিত হয়ে রুল জারি করতো। চারিদিকে এক অদ্ভুত নীরবতা বিরাজ করছে। ব্যাক্তিগত লাভ, চাটুকারিতা এবং ভয়ের সংস্কৃতি জেঁকে বসেছে মানুষের মনোজাগতিক বিষয়ে। জাতি হিসেবে নির্লজ্জ এবং বিবেকহীনতার সর্বনিম্ন স্তরে অবস্থান করছি। চোখের সামনে দানব-বেজন্মাদের এই আস্ফালন দেখা কষ্টের !