Tuesday 14 August 2018

এই প্রচারণা টোটালি বের হয়ে আসেন।

বিএনপির অনলাইন এক্টিভিস্টরা অনেক প্রতিকূল অবস্থার মধ্য দিয়ে নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মতন চমৎকার কাজ করছেন,উপহার দিচ্ছেন। তবে এর মাঝে একটা জিনিসের অভাব প্রকট মনে হয়, সেইটা হল লেখা বা কন্টেন্টে জোস কিংবা ঝাজের কমতি। এইটার নানামাত্রিক কারণ আছে, সরকারী দানবীয় আচরণ বাদ দিলে কয়েকটা ফ্যাক্ট একটু হাইলাইট করা দরকারঃ

১। প্রকৃতিগতভাবে বিএনপি করেন দেশের সাধারণ নিরীহ মানুষজন। এরা প্রকৃতিগতভাব্র ঝগড়াইট্টা আর অসৎ লীগারদের সাথে পেরে উঠবেন না এইটাই স্বাভাবিক। এইটার আসলে তেমন কোন সলিউশন নাই।

২। বিএনপির আমলে দেশ খালি দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হইছে,এইটা টোটালি মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলেন। ৫ বারের প্রথম ২ বারের দায় আওয়ামী লীগের, এবং পরের ৩ বার সেইটার কন্টিনিউশন। বিএনপির আমলেই দুর্নীতির সুচক থেকে বাংলাদেশের নাম কাটা যায়।

৩। বিএনপি জংগীবাদের স্রষ্টা। এই প্রচারণা টোটালি বের হয়ে আসেন। প্রান্তিকভাবে সর্বহারা,জংগিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে সব দলই,এইটাই সত্য। কিন্তু বেগম জিয়াই আব্দুর রহমান আর বাংলা ভাই নামক দুইটা শুয়রকে জেলের ভিতর ঢুকায়ে বিচার করেছিলেন।

৪। আওয়ামী লীগের চক্কর-বক্কর উন্নয়নের ধাধা দেখে বিভ্রান্ত হয়ে বিএনপির আমলে উন্নয়ন -টুন্নয়ন হয় নাই" এই ধারণার মুক্তি আবশ্যক। উন্নয়ন একটা কন্টিনিউয়াস আর রানিং প্রসেস, কোন উন্নয়নের দাবিদার কোন সরকারের একার নয়। এইটা নিয়ে সিরিজ আকারে লিখবো। খালি কথাটা মাথায় ঢুকায়ে রাখেন।

৫। বাংলাদশের ইতিহাসে একমাত্র জিয়া বাদে সব সরকারই কমবেশি চোর ছিল। এইটাই সত্য কথা। কিন্তু বিএনপি চোর-দুর্নীতিবাজ এই ধারনা থেকেও বের হয়ে আসা দরকার। বিএনপির আমলে চুরি চামারি হয় নাই এইটা কেউ বলবে না, কিন্তু আওয়ামী লীগের আমলের মতন দুই দুই বার শেয়ার বাজার কেলেংকারি, ডেস্টিনি-হলমার্ক কেলেংকারি, রিজার্ভ লুট, ব্যাংক লুট,সোনা লুটের ইতিহাস বিএনপির নাই। বিএনপির সাথে আওয়ামী লীগের তুলনা দেয়া মানে পাড়ার ছিচকে চোরের সাথে আন্ডারওয়ার্ল্ডের মাফিয়ার তুলনা করা।

৬। ক্ষমতার লড়াইয়ে কেউ নিষ্পাপ নয়। বিএনপিও কোন দুধে ধোয়া তুলসি পাতা নয়। দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতির নানাপ্রকরণে বিএনপি আওয়ামী জামাত জাপা সবাই কমবেশি জড়িত। কিন্তু অগণতন্ত্র,নষ্ট রাজনীতি,ফ্যাসিবাদ,অসুস্থ পরিবেশ তৈরিতে আওয়ামী লীগের সাথে কোনভাবেই বিএনপির তুলনা চলে না, বিএনপির কন্ট্রিবিউশন ১ তলা হইলে আওয়ামী লীগের ১০ তলা।

৭। আরেকটা প্রাইম ইস্যু হইলো জামাত। জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করার মানে এই না যে নিজের সব স্বকীয়তা বেচে তার কোলে গিয়ে বসতে হবে। অনেককে দেখি বিএনপি-জামাতকে আপন মায়ের পেটের ভাই ভেবে খুব সন্তুষ্ট হোন। আবার বিএনপির ট্যাগ গায়ে লাগায়ে ৭১এ জামাতের ভূমিকা ডিফেন্ড করতেও খুব অগ্রণী। এইসব সোজা বাংলায় ছেড়ে দ্যান। আপনের মুক্তিযোদ্ধা জিয়া এইগুলা শিখায়ে দিয়া যায় নাই, জিয়া আওয়ামী ফ্যাসিজমের বাইরে গিয়ে  সবার জন্য শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান চেয়েছিলেন, কিন্তু রাজাকারকে আব্বা ডাকতে বলে যান নাই। বিএনপি জামাতের মিল শুধু দুই জায়গায়, ভারত ইস্যু আর এন্টি সেক্যুলার ইস্যু, এর বাইরে সব অমিল। শাহবাগকে কেন্দ্র করে জামাত নেতাদের উপর যে অবিচার হইছে তার প্রতিবাদ করেন, কিন্তু "৭১এ জামাত সুফীসাধু ছিল, তাদের কোন বিচারের দরকার নাই, এই আলাপ মারায়েন না।"

এইগুলা সম্ভব হইলে মাথায় ঢুকায়ে নেন। নিজের আত্মশক্তিতে বলীয়ান হোন। আর কথা বলুন জোরসে।

©Tashrik Hasan

Sunday 12 August 2018

সরকারকে বিব্রত করবেন না।

সরকারকে বিব্রত করবেন না।
Ashik Azim

ধরুন আপনাকে ডিবি পুলিশ কোন কারণ ছাড়াই তুলে নিয়ে হাড্ডি ভাঙ্গা পিটানি দিয়েছে। এমতাবস্থায় ঘুণাক্ষরেও চিৎকার করে কান্না করে সরকারকে বিব্রত করবেন না। কারণ তাতে জামাত বিএনপি ক্ষমতায় চলে আসবে। চুপ করে ভাল ছেলেটির মত হাসিমুখে পেটানি সহ্য করুন। জামাত বিএনপি আসলে কিন্তু আরো মারতো। সেটা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাতে ভুলবেন না।

ধরুন আপনাকে ছাত্রলীগ রাস্তায় ফেলে হাত ভেঙ্গে দিয়েছে। আপনি চেঁচিয়ে উঠবেন না। মহান মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রলীগের অবদানের কথা ভেবে হাসিমুখে ভাঙ্গা হাতটি নিয়ে দৌঁড়ান। বেঁচে ফিরতে পারলে ছাত্রলীগের সুনাম করে ফেইসবুকে একটি পোস্ট দিতে ভুলবেননা। মনে রাখবেন, বিএনপি জামাত হলে আপনার দুটো হাতই ভেঙ্গে দিতো। ছাত্রলীগ তো অল্পের ওপর একটি হাত ভেঙ্গেছে। ছাত্রলীগকে ধন্যবাদ দেয়া আপনার চেতনাগত দায়িত্ব।

ধরুন আপনার ভাইকে র‍্যাব ধরে নিয়ে দশ লাখ টাকা চেয়েছে। না দিলে তাকে ক্রসফায়ারে মেরে দেবে বলে হুমকিও দিয়েছে। আপনি সেটা আবার সাংবাদিকদের কেন বলবেন? সরকারকে বিব্রত করতে চান? চুপ থাকুন। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকুন। দশ লাখের চেয়ে মুক্তিযুদ্ধ অনেক বড়। ভাইটিকে ফিরে না পেলেও বেশি কথা বলবেন না। মনে রাখবেন, স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি ক্ষমতায়। বিএনপি জামাত আসলে আরো অনেক কিছু হতে পারতো। সেসব ভেবে আওয়ামী লীগকে পরেরবার ভোট দিন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে বেইমানি করবে না।

ধরুন আপনার বোনটিকে কোন আওয়ামী নেতা তুলে নিয়ে গেছে। বেশি বাড়াবাড়ি করবেন না। তাতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অপেক্ষা করুন। বোনটিকে ফেরত দেয় কিনা। ফেরত দিলে ভাববেন, বিএনপি জামাত ক্ষমতায় থাকলে তো বোনটি ফেরতই আসতো না। ভাগ্য ভাল, বোনটিকে আওয়ামী লীগ নেতা নিয়েছিল। তাই ফেরত পেলেন। মুক্তিযুদ্ধের সরকার, স্বাধীনতার সপক্ষ শক্তি আছে বলেই এমনটি হলো। তাই বেশি ট্যাঁ ফুঁ করবেন না। আর বোনটিকে ফেরত না পান, ভাববেন, অন্য বোনগুলো তো অক্ষত আছে। বিএনপি জামাত থাকলে সবাইকেই তুলে নিতো। এই ভেবে দেশনেত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ দিন। উনি আছেন বলেই এক বোনের ওপর দিয়ে গেছে। উনি না থাকলে সবগুলো বোনকেই নিয়ে যেতো। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তি বলে কথা।

সরকারকে বিব্রত করবেন না। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকুন। স্বাধীনতা বিরোধীরা নইলে চলে আসবে। তাই পরেরবার অবশ্যই আওয়ামী লীগকেই ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন। অবশ্য কেউ ভোট না দিলেও তারাই জয়ী হবে। সেসব নিয়ে আপনি টেনশন নিয়েন না। মনীষা চক্রবর্তী বরিশালে ইলেকশন করেছিল, ভোট দিতে গিয়ে দেখেছে সব ব্যালটে নৌকায় সিল দেয়া। আপনি ভোট দিতে না গেলেও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি আপনার ভোটটি দিয়ে দেবে। কী লাভ এত কষ্ট করে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ার? ভোট দিতে গিয়ে সরকারকে বিব্রত করবেন না। সরকার আপনার কষ্টের কথা ভেবে নিজেরাই ভোটটি দিয়ে নেবেন।

সরকারের প্রশংসা করুন এবং জীবিত থাকুন। বলা তো যায় না......