অতঃপর মুরগির খোপে আমার জীবন অতিবাহিত হতে লাগলো। আমি কথিত রোমান্টিক শহর প্যারিসে দিনাতিপাত করিতে লাগিলাম।অবশেষে মুরগির খোপের মধু চন্দ্রিমার দিনগুলো শেষ হইলো।
নির্ধারিত হইলো সপ্তাহে একবার আমাকে রান্না করিতে হইবে। বিলেতে থাকাকালীন ২/৩ জন মানুষের খাবার আমি রান্না করিয়াছি, কিন্তু ৮ জন মানুষের খাবার রান্না করিবার পূর্ব অভিজ্ঞতা আমার নাই। মশলার পরিমাণ বুঝিতে পারিনা , কোনোদিন তেল বেশি, কোনোদিন হলুদ। এ নিয়ে আড়ালে আবডালে কানা-ঘুষা চলিতে লাগিলো। একদিন এক কাগজধারী সবজান্তা শমসের ফোনে বলিতেছিলেন “লন্ডন থেকে আসা সব বাল পাকনা, কাজের কাজ কিছুই জানেনা, শুধু চাপাবাজি”. দরজায় দাঁড়াইয়া আমি শুনিলাম, দুয়ার খুলিতেই একগাল কৃত্রিম হাসি দিয়া কিছু একটা লুকানোর চেষ্টা করিলেন। তারপর রাজ্যের পিনপতন নীরবতা !!!! মনে মনে চিন্তা করিতে লাগিলেন তাহার কথা আমি শুনিয়াছি কিনা।
“বিলেত ফেরত” কিংবা “লন্ডনে ছিলাম“ এ কথা বলিলেই ২৪ হাজার ভোল্টেজের ইলেকট্রিক শক !!! মনে হয় কতিপয় মানুষের পশ্চাৎ দেশে ধুতরার গোটা অথবা চুতরা (বিছুটি) পাতা লাগাইয়া দেয়া হইয়াছে। ফরাসিদের ইংরেজ বিদ্বেষ জানিতাম, বাঙালিদের ইংরেজ বিদ্বেষ প্রথম দেখিলাম !!! যেন বিলেত ফেরত মানুষেরা প্যারিসের বাঙালিদের বাড়া ভাতে ছাই ঢালিয়া দিয়াছে, রিজিকে ভাগ বসাইয়াছে।
ঢাকা শহরের “মালার মা” “মর্জিনার মা“ কিংবা “শাবানা“ বুয়ার রান্না ভক্ষণ আমি অভ্যস্ত। ঢাকা শহরের মেসে বড়জোর ডিমভাজি করিয়াছি। রান্নার হাত আমার ভালো নহে। মজাদার খাবার রান্না করিবার নিমিত্তে আমার চেষ্টার কোনো কমতি রাখিয়াছি বলিয়া মনে করিতে পারিনা। প্রায়ই শুনিতাম “হেই মিয়া কিয়া রান্ধে, আন্ডা খাইতাম হারিনা।হারাদিন পরিশ্রম করি আই এগানদি ভাত খন যায়নি ?” মানে তিনি কি রান্না করে, এগুলো দিয়ে ভাত খাওয়া যায়না। এত পরিশ্রমের পর এ তরকারি দিয়ে কি ভাত খাওয়া যায় ? লজ্জায় আমি কুঁকড়ে যাইতাম, কিছুই বুঝিয়া উঠিতে পারিতামনা। মনে মনে আমি মর্জিনার মা, মালার মা এবং শাবানা বুয়াদের অভাব হাড়ে হাড়ে টের পাইতেছিলাম। গুটি কয়েক বুয়া যদি প্যারিসের মুরগির খোপে আমদানি করা যাইতো, তাহা হইলে আমার মতো হাজারো নব্য মুরগির টেনশন কিছুটা লাঘব হইতো।
রন্দভুঁ এবং খাউজানী
*********************
ফরাসি দেশে আরেক বিডম্বনার নাম “রন্দভু” বা এপয়েন্টমেন্ট। মানুষকে ইচ্ছে করিয়া হয়রানি করিতে ফরাসিদের জুড়ি মেলা ভার। মাঝে মাঝে ইহা আমার কাছে “কান্ডজ্ঞানহীনদের” দেশ বলিয়া মনে হয়, যুক্তি যেখানে অচল, জবাবদিহিতার বালাই নেই। সরকারি দফতরে সবাই মিলে মিশে চুরি করে, কাজে ফাঁকি দেয়। হয়রানির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাইবার সুযোগ নাই বলিলেই চলে। অফিসের বড় কর্তা থেকে সিকিউরিটি গার্ড সকলেই চোর, কাম চোর। মনে হয় বিদেশিদের হয়রানি করিবার নিমিত্তে এইসব “চোরদের“ নিয়োগ করা হইয়াছে। “ রন্দভুঁ “ বা “এপয়েন্টমেন্ট ” শব্দটি শুনিলে আমার জ্বর আসিয়া পড়ে। অফিসিয়াল রন্দভুঁতে সময়মতো যাইতে ব্যর্থ হইলে আর রক্ষা নাই, বিনা কারণে ঘুরিতে হইবে দিনের পর দিন। সময়মতো উপস্থিত হইতে ব্যর্থ হইলে ফরাসি দেশের মানুষ ইহাকে ব্যক্তিগত “রাগ-অনুরাগ“ এবং রেশারেশিতে লইয়া যায়। এনিয়ে আমি কয়েকবার বিবাদে লিপ্ত হইয়াছি ফরাসিদের সাথে। ফরাসিদের অনুকরণ করিয়া এখন “বাঙালিদের” সাথেও রন্দভুঁ লইয়া কথা বলিতে হয়। এবিষয়ে অন্য একদিন আলাপ করা যাইবে।
ফরাসি সরকারি দপ্তর গুলোতে কেন আমি “ফরাসি ভাষা জানা” লোক নিয়ে যাইনা এ নিয়ে মুরগির খোপের মানুষদের মারাত্মক খাউজানী উঠিয়াছে।আমার উপর তাহাদের চরম ক্ষোভ, কেনো আমি তাহাদেরকে অনুরোধ করিনা আমার সাথে অনুবাদক হিসেবে সরকারি দপ্তরে যাইতে। তাঁহারা আমাকে বিশেষায়িত করিতে লাগিলো আমি নাকি “বাল পাকনা“ “পন্ডিত“ “বেশি বুঝে“ !!!
ফরাসি দেশে হিজরত করিবার পূর্বে আমি জানিতামনা যে সরকারি অফিস-আদালতে ফরাসি ভাষা জানা ছাড়া কার্য সম্পাদন করা যাইবেনা। ভাষা না জানিলে অনুবাদক লইয়া যাইতে বলা হইয়া থাকে। প্রথমবার অভিবাসন অফিসে যাইবার স্মৃতি মনে পড়িলে আজো আমি আতংকিত হইয়া পড়ি। কাকডাকা ভোরে হিমশীতল শৈত্য প্রবাহে লাইনে দাড়াইয়া কার্য সম্পাদন করিতে গেলাম। ঘন্টা তিনেক লাইনে দাঁড়াইয়া আছি আফ্রিকান এবং কথিত খেজুর(আলজেরিয়ান, তিউনিসিয়ান এবং মরোক্কান) ভাইদের মধ্যখানে। সকাল নয়টার দিকে ভদ্র মহিলা আসিলেন টিকেট বন্টন করিতে। আমার কাছে জানিতে চাহিলেন কি কর্মে আসিয়াছি। আমি ইংরেজিতে বলিলাম, অমুক কর্মে আসিয়াছি। কঠোর ভাষায় আমাকে নির্দেশ দিলেন এই বলে ” ইফ ইউ আর ফ্রান্স, মাস্ট স্পিক ফ্রেঞ্চ”. সাথে সাথে বলিলাম “ আমি এদেশে আসিয়াছি মাত্র ১০ দিন হইয়াছে, ফ্রেঞ্চ পারিনা এবং ফ্রেঞ্চ বলিতে আমি বাধ্য নই।” ভদ্র মহিলা তেলে-বেগুনে জ্বলিয়া উঠিলেন এবং আমার দিকে টোকেন ছুড়িয়া মারিয়া প্রস্থান করিলেন। আমি পুরা “মাননীয় স্পিকার“ হইয়া গেলাম তাঁহার এমন রোমান্টিক আচরণে। এমন বহুবার ঘটিয়াছে আমার সাথে। রোমান্টিক ফরাসি ভাষা না জানার কারণে আমার ফাইল আটকাইয়াছে মাসের পর মাস। বাসায় আসিয়া একদিন বলিলাম এসব ঘটনার ব্যাপারে।মুরগির খোপে বসবাসকারী ”ফ্রান্সের কাগজধারী” এবং “সবজান্তা“ ভাইয়েরা আমাকে উপদেশ করিলেন ইহা বলিয়া যে ” অফিসে যাই সবসময় মাথা নিচু করি কথা বইলবেন, তাইলে ফরাসিরা খুশি হয় !!!! ফরাসি ভাষা শিখেন, ইংরেজির দাম নাই এটা ভুলি যান। “
কিছু কাল আগে আমার বন্ধু বলিলেন, ফরাসি দেশে মানব শরীরের গুপ্ত কেশ ফেলিবার কিংবা ক্ষৌর কর্ম করিবারও অবকাশ নাই। তাহার এই সত্য কথন আমি এক বাক্যে মানিয়া নিলাম। সরকারি অফিসে দৌড়াইয়া আমার পাদুকা জোড়া ক্ষয় হইয়া চরণ যুগল ক্ষয় হওয়া শুরু হইলো। তাহার পরও আমার কর্ম শেষ হইলোনা। সাদা চামড়া ব্যতীত সকলেই দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক হইয়া থাকিতে হয়। “তথাকথিত কাগজধারী” বাঙালি ভাইদের মতে ইহা মানবাধিকারের স্বর্গরাজ্য। মনে মনে এমন মানবাধিকারকে আমি “বলাৎকার” করিতে লাগিলাম।
মাইকেল মধু চোদন দত্ত এসিটিক খাইছে ফ্রান্সে !!!!!
******************************************
কোনো এক রাতে মুরগির খোপে ডিনার করতে বসিয়াছি। সাথে সব “কাগজধারী” “পন্ডিত“ ব্যক্তিবর্গ। কথা উঠিলো “ফ্রান্সে রাজনৈতিক আশ্রয়” লইয়া। কথার প্রসঙ্গে আসিলো সনেট কবি ”মাইকেল মধু সূদন দত্তের” কথা। আমি বলিলাম মধু সূদন দত্ত ফরাসি দেশে আসিয়াছিলেন ভাষা শিখে সাহিত্য রচনা করিবার জন্য। আচমকা একজন বলিয়া উঠিলেন “ আরে মধু চোদন দত্ত তো এসিটিক খাইছে। কেস না পাইয়া আবার দেশে চলে গেছেন “ আমি জিজ্ঞাসা করিলাম “তাই নাকি ?”
তিনি জবাবে বলিলেন “হ্যা“
আমি বলিলাম “নতুন কিছু শিখিলাম আপনার কাছ থেকে। ধন্যবাদ “
আহা মুরগির খোপে এমন “শিক্ষিত” “পন্ডিত“ ব্যক্তি !!! আমার জন্য বড় পাওয়া। ..!!!
এস আলম /কেস মারছেন ?
****************************
ফরাসি দেশে হিজরত করিবার কিছুকাল পরেই বাঙালি পাড়া খ্যাত গার দে নর্ডে আমার সাথে সাক্ষাৎ হইলো জনৈক “কাগজধারী“র। প্রথম সাক্ষাতের কথোপকথন নিম্নরূপ :
কাগজধারী : ভাই এস আলম মারছেন ? 📷😁
আমি : এস আলম কি ?
কাগজধারী: কেস মারছেন ? 📷😁
আমি : কেস কি ?
কাগজধারী: আরে ভাই কেস বুঝেননি(বিরক্ত হয়ে)
আমি : না বুঝিনি
কাগজধারী: এদেশে থাকার জন্য আবেদন
আমি : ও আচ্ছা, এসাইলাম
কাগজধারী: হা এসাইল
আমি : হা আবেদন করেছি। মৌখিক সাক্ষাৎকারের জন্য অপেক্ষা করছি।
কাগজধারী : দেখেন কি হয়। (তাচ্ছিল্যের সুরে)
আমার অনুধাবন: কেস মারা/ এস আলম মারার কথা আমি বুঝিনি বলে তাহার মতে আমি বোকা, বলদ এবং আমাকে দিয়ে কিছু হবেনা। তিনি ফ্রান্সের কাগজধারী, তিনি সব বুঝেন, সবজান্তা।
লাইকা কার্ড নাহলে ধইন্যা পাতা বিক্রি করেন।
***************************************
ফরাসি দেশে আসিয়া অফুরন্ত অবসর পাইলাম। খাদ্য ভক্ষণ, নিদ্রা যাওয়া এবং সপ্তাহে কয়েকবার অফিসে আদালতে যাওয়া ছাড়া আর কোনো কর্ম নাই। বাঙালি পাড়া খ্যাত গার দে নর্ডে বসিয়া বন্ধুর সাথে আলোচনা করিতেছিলাম বিভিন্ন বিষয় লইয়া। বন্ধু তাহার এক দুঃখের কথা বলিলেন। আমার মতো তাহারও অবসর। এই অফুরন্ত অবসর দেখিয়া জনৈক মেস মেম্বার কহিলেন “ ভাই বসি থাকি কি করবেন “ লাইকা কার্ড (লাইকা মোবাইল কার্ড) নাহলে ধইন্যা পাতা বিক্রি করেন।” এইকথা শুনিয়া সত্যিই আমি চো******না হইয়া গেলাম। কোনো কর্মই পৃথিবীতে ছোট নহে ইহা আমি জানি। কিন্তু এমন অনধিকার চর্চায় আমি অভ্যস্ত নই।
বৌয়ের চিঠি, মায়ের চিঠি আনতে হবে।
*********************************
প্রিয় মফিজ
কেমন আছো বাবা ? আশা করি ভালো আছো। পর সমাচার এই যে তোমার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত হত্যা মামলার রায় দিয়েছে।রায়ে তোমার ফাঁসি হয়েছে। তোমার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অস্র মামলায় ১২ বছর জেল এবং নারী নির্যাতন মামলায় অভিযোগ পত্র দিয়েছে পুলিশ। বাবা তুমি যে দেশে আছো সে দেশে থাকো। তুমি মানবতার দেশ ফ্রান্সে থাকো। দেশে আসলে আবুল বেপারী এবং তার ভাই কাবিল বেপারী তোমাকে মেরে ফেলবে। আমরা তোমাকে হারাতে চাইনা। আমাদের কথা চিন্তা করোনা।
ইতি
তোমার দুঃখিনী মা
প্রিয়তম আবুল
আশা করি ভালো আছো। আমি ভালো নেই তোমাকে ছাড়া। তুমি আজ কত দূরে। পর সমাচার, তোমাকে না পেয়ে জয়নাল শিকদারের লোকজন আমাদের ঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে। আমি টুনটুনিকে নিয়ে কোনোরকমে পালিয়ে জান বাচাই। তোমার বিরুদ্ধে হত্যা মামলার চার্জশিট হয়েছে। অস্র মামলায় ১৪ বছর জেল হয়েছে তোমার। পুলিশ-র্যাব তোমাকে খুঁজছে ক্রস ফায়ারে দেয়ার জন্য। ওগো প্রাণের স্বামী তুমি দেশে এসোনা। তোমাকে হারালে আমি আর টুনটুনি কাকে নিয়ে বাঁচবো। তুমি বিশ্ব মানবাধিকারের দেশ ফ্রান্সে থাকো।
আমাদের জন্য দোয়া করো।
ইতি
তোমার জরিনা বিবি
প্রথম চিঠিটি মা তার পুত্রকে লিখিয়াছেন এবং দ্বিতীয় চিঠিটি স্ত্রী তাহার স্বামীকে।
রাজনৈতিক আশ্রয় প্রাপ্তির ক্ষেত্রে এই চিঠি দিলে নাকি অভিবাসন কর্তৃপক্ষ দয়া করে। এমন একটি মিথ চালু রহিয়াছে প্যারিসে এবং পুরাতন কাগজধারীরা “অবশ্যই চিঠি দিতে হবে” বলে মনে করে। ইহার কারণে বাঙালিরা ফ্রান্সে বসে নিজে চিঠি লেখিয়া ইমেইলের মাধ্যমে দেশে পাঠাইয়া দেয়, সেই চিঠি আবার পোস্ট অফিসের/ কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ফ্রান্সে লইয়া আসে। অতঃপর চিঠিখানা অভিবাসন কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে মায়ের অথবা বৌয়ের চিঠি হিসেবে।
মুরগির খোপে আসিয়া মুরগি হইবার কিছুকাল পরে এই চিঠির শানে নূযুল আমি বুঝিলাম। জনৈক “কাগজধারী” আরেকজনকে কঠিন উপদেশ প্রদান করিলেন মায়ের চিঠি আনিতে। আমাকে একজন অনুরোধ করিলেন একটি মায়ের চিঠি লেখিয়া দিতে। আমি বলিলাম এই ইন্টারনেট, ফোনের যুগে এমন চিঠির কি ভূমিকা কি !!!! তিনি আমাকে বলিলেন, “কাগজধারী চিঠি আনতে বলিয়াছেন, অতএব দিতে হবে “
”চিঠি লিখে দিতে কোনো সমস্যা নাই, কিন্তু এ চিঠি অর্থহীন” আমি বললাম।
পরে শুনিতে পারিলাম, কাগজধারী ওই লোককে বলিলো “ উনার কথা শুনবেননা, উনি(আমি) কি বা*****ল বুঝে ” অবশেষে বুঝিলাম “ মহান বুঝদার কাগজধারী ” ভাইয়ের জ্ঞানের গভীরতা মাপা সম্ভব নয়। তাঁহার জ্ঞানের কাছে পরাজয় বরণ করিলাম। মনে মনে প্রণাম ঠুকিলাম তাঁহার চরণে।
“হে মহা জ্ঞানী বুঝদার ভাই, মানিয়া লইয়াছি আপনার হেডম, মুরগি পালিবেন আমরাও সেটা চাই, বিনিময়ে হবে কি একটু ঠাঁই “
ধুর মিয়া সৌদি আরব রোজার দিনে ইফতার খাবায়
******************************************
মুরগির খোপ সত্যিই বৈচিত্রময়। বহুঘাটের পানি খাইয়া, বহুদেশ ঘুরিয়া মুরগীগণ এ রোমান্টিক শহর প্যারিসে তশরিফ আনিয়াছেন। তাহারও পূর্বে কেউ কেউ আরব দেশে গমন করিয়াছেন। ২/১ জন মালয়েশিয়া গমন করে লাল ঘরে যাওয়ার অভিজ্ঞতার কথাও জানাইলেন।
একদিন কথা উঠিলো মধ্যপ্রাচ্য লইয়া। সৌদি আরবের রাজনীতি, মুসলিম উম্মাহর প্রতি দায়িত্ববোধ লইয়া আলোচনা চলিতেছিল। আমি বলিলাম “সৌদি আরবের রাজতন্ত্র অবসান হওয়া উচিৎ, আমেরিকার গোলামী থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। “
আরেকজন বলিলো “ সৌদি আরব মুসলমানদের সাথে মুনাফেকি করিতেছে, ইসরায়েলের সাথে গোপন সম্পর্ক করে। “
হটাৎ সিনা টান টান করিয়া “সৌদি ফেরত” জয়নাল হাজারীর উম্মত বলিয়া উঠিলো ”ধুর মিয়া, সৌদি আরব রোজার দিনে অন্যদেশের শ্রমিকদের ইফতার খাবায়, বাংলাদেশে এত বড় বড় বিল্ডিং হইছে, কে কইচ্চে জানেন ? সব সৌদি আরব কইচ্চে।”
আমি আবারো “মাননীয় স্পিকার”হইয়া গেলাম, “সৌদি রাজতন্ত্র বনাম ইফতার” এবং “সৌদির ইসরায়েল কানেকশন বনাম বাংলাদেশে বড় বড় বিল্ডিং”য়ের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজিতে লাগিলাম।📷😁 ইহার পর হইতে জ্ঞান গর্বে গর্ভবতী ভাইদের সাথে বিতর্ক করিবার সাহস পাইনি। তাহাদের চরণে ভক্তি করিবার মনস্থির করিলাম। (চলবে)
পুনশ্চ : বিনোদিত হউন কিন্তু নিজ দায়িত্বে পড়িবেন। কোনো ঘটনা নিজের উপর টানিয়া লেখককে দায়ী করা যাইবেনা।