মানবাধিকার লংঙ্গনের উপর নির্মিত চলচ্চিত্র প্রদর্শনীতে পুলিশের বাধা
আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্গনের উপর নির্মিত চলচ্চিত্র প্রদর্শনীতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। প্রদর্শনীতে ব্যাবহারের জন্য আনা সাউন্ড সিস্টেম, প্রজেক্টর এবং ব্যানার কেড়ে নিয়েছে পুলিশ। ''ডেথ স্কোয়াড'' চলচ্চিত্রটি নির্মান করেছেন বিশিষ্ট চলচিত্রকার, ব্লগার এবং মানবাধিকার কর্মী আজিমুল হক খান। বাংলাদেশে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্গনের উপরে তিনি প্রামান্য চিত্রটি নির্মান করেছেন। পুলিশী বাধায় বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রদর্শনীর বিষয়ে তিনি বলেন ''আমরা কি সভ্য সমাজে বসবাস করছি ? নির্যাতিত মানুষেরা কি প্রতিবাদ ও করতে পারবেনা ? পুলিশ ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে প্রদর্শনী বন্ধ করে দিয়ে।'' বাংলাদেশ কি পুলিশ স্টেটে পরিনত হয়েছে, তিনি প্রশ্ন রাখেন। গতকাল পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে বাংলাদেশ মানবাধিকার ফোরাম। হত্যা গুম, খুন, অপহরণ এবং বিচারবিহীন হত্যাকান্ড নিয়ে নির্মিত প্রামান্য চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়েছে। প্রামান্যচিত্রটি নির্মানের শুরু থেকেই পরিচালক আজিমুল হক খানকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে বলে জানান বাংলাদেশ মানবাধিকার ফোরাম এর সভাপতি জাহিদ হোসাইন। তিনি পুলিশ মহা পরিদর্শকের কাছে এর ব্যাখ্যা দাবি করেন। প্রদর্শনীতে আসা টিআইবির চেয়ারপারসন এবং আইন ও শালিস কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল বলেন, ‘সারা দেশে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক গুম, অপহরণ হত্যা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন শঙ্কিত। আমাদের এই শঙ্কা জানাতে এবং নির্যাতিতদের পক্ষে দাড়াতে আমরা এইখনে এসেছি। এতেও যে পুলিশ বাধা দিয়েছে, তার প্রতি আমরা ধিক্কার জানাই। আমাদের শেষ মৌলিক অধিকারটুকু সঙ্কুচিত হতে চলেছে। এটা হতে পারে না। আমরা আশা করি সরকার তা বুঝতে পারবে। নির্মাতা আজিমুল হক খানকে হয়রানি না করার জন্য তিনি আহবান জানান।’ আইনজীবী শাহদিন মালিক বলেন, ‘এ দেশে যেন গুম ও অপহরণ না হয় সে দাবি জানাতেই আমরা একত্রিত হয়েছি। এ সমস্ত অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’ তিনি প্রামান্য চিত্রটি প্রদর্শনীর দাবি জানান।’ সুজনের কেন্দ্রীয় সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার সমাবেশে বলেন, ‘যেকোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ জানানো নাগরিকের মৌলিক অধিকার। সেই অধিকারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাধা সৃষ্টির ক্ষমতা রাখে না। পুলিশ অন্যায়ভাবে এই চলচ্চিত্রটির প্রদর্শনী বন্ধ করেছে।’ অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, গুম, অপহরণ ও হত্যাকারীদের বিচার সরকারও চায়। তাহলে এই প্রামান্য চিত্র প্রদর্শনীতে বাধা দেওয়া হচ্ছে কেন? আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খুনি দানবে পরিনত হয়েছে। বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে সকলকে সোচ্চার হতে হবে। রাত আটটার দিকে আগত অতিথিদের বের করে দিয়ে পুলিশ মিলনায়তনে তালা বন্ধ করে দেয়।