Friday, 23 August 2024
বাংলাদেশে বন্যায় ঘরে ঘরে একটি করে রাবারের তৈরি ইনফ্লেটেবল বোট/ নৌকা রাখতে।
সম্ভবতঃ গত বছর বাংলাদেশে বন্যা চলাকালে আমি এক ফেইসবুক পোস্টে বলেছিলাম, ঘরে ঘরে একটি করে রাবারের তৈরি ইনফ্লেটেবল বোট (বাতাস দিয়ে ফোলানো যায় এমন নৌকা) রাখতে। উদ্ধার তৎপরতায় বিলম্ব হলে বেশী সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়, খাদ্যের ওভাবে নয়। চলমান বন্যায় এই নৌকার গুরুত্ব সবচেয়ে বেশী অনুভূত হচ্ছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সারা বিশ্বে আকস্মিক বন্যা সহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়ে গেছে। লন্ডনের মতো আধুনিক ও প্রাচুর্যময় নগরীকেও আকস্মিক বন্যা সহ নতুন নতুন প্রাকৃতিক দুর্যোগের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম বড় আক্রান্ত দেশ বাংলাদেশের জন্য এই চ্যালেঞ্জ আরও অনেক বড়।
ইনফ্লেটেবল বোট ঘরের স্টোর রুমে রেখে দেয়া যায়; এজন্য বড় জায়গার প্রয়োজন হয়না।
সরকারি খরচে কিংবা বিশ্ব জলবায়ু তহবিল থেকে পাওয়া অর্থ দিয়ে এ ধরনের নৌকা বাংলাদেশে ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কেইলে উৎপাদন করে বাড়ি বাড়ি বিতরণ করা যেতে পারে। পাশাপাশি লাইফ জ্যাকেট উৎপাদন করে ত্রাণ হিসেবে বিতরণের চিন্তা করতে পারে সরকার।
না খেয়ে কয়েক দিন বেঁচে থাকা যায় কিন্তু বন্যার পানিতে ডুবে গেলে মৃত্যু অনেকটা নিশ্চিত। তাই আমাদেরকে আগে প্রাণ বাঁচানোর বাস্তব পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে।
এই বন্যাই শেষ বন্যা নয়। এখনই পরবর্তী সম্ভাব্য বন্যার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
আব্দুল হাই সঞ্জু
২৩ অগাস্ট ২০২৪
লন্ডন
Monday, 19 August 2024
কাজগুলা না করে, তাইলে এই অভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়ে যাওয়ার সমূহ আশঙ্কা আছে
১. অন গভমেন্ট
এই গভমেন্ট কোনো ‘বিপ্লবী’ গভমেন্ট হয় নাই। সংবিধান মাইনা রাষ্ট্রপতির আন্ডারে শপথ নিছে এই গভমেন্ট। ১/১১-র কুশীলবরা আবার সেইখানে মেজরিটিপ্রায়। কোন প্রক্রিয়ায়, কার চাওয়া বা না চাওয়ার ভিত্তিতে উপদেষ্টারা নিয়োগ পাচ্ছেন, তাও ক্লিয়ার না। তবু জাতির সামগ্রিক স্বার্থ বিবেচনায় ছাত্রজনতা এই গভমেন্টের বিরুদ্ধে কিছু বলতেছে না। কিন্তু অতি দ্রুত এই গভমেন্ট যদি নিচের কাজগুলা না করে, তাইলে এই অভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়ে যাওয়ার সমূহ আশঙ্কা আছে:
১. রাষ্ট্রপতি ও আর্মি চিফের অপসারণ
২. সংবিধান পুনর্গঠন
৩. জুলাই অভ্যুত্থানের ইতিহাস, দলিলপত্র ও স্মৃতি সংরক্ষণ
৪. শহিদদের তালিকা তৈরি ও শহিদ পরিবারকে প্রয়োজনমাফিক সহায়তা। আহতদের তালিকা তৈরি করে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা।
৫. জুলাই হত্যাকাণ্ডসহ ফ্যাশিস্ট রেজিমের সকল অপরাধের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বিচারের সূচনা করা। এক্ষেত্রে বিতর্কিত আইসিটিকে পুনর্গঠন করতে হবে। প্রয়োজনে নতুন ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে। নতুবা এই বিচারপ্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
৬. নির্দলীয় ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের মাধ্যমে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনর্গঠন এবং প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে ফ্যাশিস্ট ব্যবস্থার মূলোৎপাটন।
৭. বাজারব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের জন্য যথাযথ কর্মকৌশল গ্রহণ।
৮. ছাত্রজনতার কাছে জবাবদিহিতার কালচার তৈরি করা।
৯. বিচার বিভাগ ও ইসিকে সম্পূর্ণ স্বাধীন ও নির্দলীয়করণ।
১০. আ. লীগকে দল হিশেবে নিষিদ্ধ করাটা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে। বরং আপাতত তাদের নিবন্ধন বাতিল করা যেতে পারে।
১১. একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা।
২. অন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’
ছাত্রজনতার আন্দোলনের এই ব্যানারটা কোনো একক দল, মত বা গোষ্ঠীর সমন্বয়ে করা হয় নাই। বরং নানা দল ও মতের মানুশ এখানে ছিল। অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে নানা কারণে এই ব্যানারটি বিতর্কিত হয়ে উঠছে। অনেকেই নিজ নিজ রাজনৈতিক বা অন্য কোনো স্বার্থসিদ্ধির জন্য এই ব্যানার ব্যবহার করতেছেন। ক্যাম্পাসগুলোতে এই ব্যানারের ছত্রছায়ায় এক ধরনের ছায়া অথরিটিও গড়ে উঠছে। এই ছায়া অথরিটির কর্মকাণ্ড কিংবা মোটিভ নিয়াও জনমনে এক ধরনের অস্বস্তি বা আশঙ্কা তৈরি হইছে।
ব্যানারটির সকল সিদ্ধান্ত কোত্থেকে আসতেছে বা কারা দিতেছে— এ ব্যাপারেও অস্পষ্টতা প্রকট। সমন্বয়কদের নিজেদের মধ্যেই এ ব্যাপারে নানারকম ক্ষোভ ও উষ্মা দেখা যাইতেছে। সমন্বয়কদের নিজস্ব কোনো এজেন্সি আছে কি নাই— তা বোঝা যাচ্ছে না। তারা কেবল টকশোর শোভা বাড়াইতেছেন। বাস্তব কার্যক্ষেত্রে তাদের অধিকাংশেরই সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ার সাথে কোনো সংযোগ নাই। ফলত, তারা এক ধরনের মিডিয়া সেলিব্রেটি ও ছোটোখাটো ভাবমূর্তিতে পরিণত হওয়ার অধিক কিছু করতে পারতেছেন না। দেশের নানা মানুশ নানা প্রান্ত থেকে নানা আইডিয়া নিয়া তাদের কাছে আসতেছেন বটে, কিন্তু সেগুলা নিয়া ছাত্রদের বৃহত্তর ফোরামে কোনো ইনক্লুসিভ আলোচনা-পর্যালোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না।
ফলত, ব্যানারটি ক্রমশ বিতর্কিত হয়ে পড়তেছে। আন্দোলনকারী ছাত্রদের সমন্বিত শক্তিকে অটুট রাখার জন্য দ্রুত একটা বৃহত্তর ছাত্র কাউন্সিল কিংবা প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদের উদ্যোগ নেয়া হোক। এবং এই ব্যানার যত দ্রুত সম্ভব বিলুপ্ত করা হোক। এতেই মঙ্গল।
৩. অন পার্টি ফর্মেশন
আজ হোক বা কাল, অভ্যুত্থানকারী ছাত্রদের অন্তত নেতৃস্থানীয় লোকেরা একটা পার্টি খুলবেন— এটা নিশ্চিত। এমনকি একাধিক পার্টিও হইতে পারে। এ ব্যাপারে আপাতত বিশদ মন্তব্য করতে চাই না। জনতার খেয়াল রাখা লাগবে, এই পার্টি যেন অন্য কোনো পলিটিকাল পার্টির পুনর্বাসনকেন্দ্রে পরিণত না হয়। সেটা ঘটনা হিশাবে খুব বিপদজনক ও ডিজাপয়েন্টিং হবে।
৪. অন ইন্টেলেকচুয়াল অ্যান্ড কালচারাল ফাইট
আমাদের এখন ইন্টেলেকচুয়াল ও কালচারাল ফাইটগুলারে নতুনভাবে শুরু করা লাগবে। যেসব ভুয়া ও ফাঁপা ন্যারেটিভের উপর এই ফ্যাশিবাদের ভিত্তি দাঁড়ায়ে ছিল, সেগুলারে কাউন্টার করা লাগবে। ইতিহাস, সংস্কৃতি, শিল্প— সবক্ষেত্রেই ফ্যাশিবাদের ভিত নির্মাণকারী বয়ানগুলারে প্রশ্ন করা লাগবে। কবি, সাহিত্যিক, অ্যাকাডেমিশিয়ান ও ইন্টেলেকচুয়ালদের কান্ধে এখন গুরুদায়িত্ব।
তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখা জরুরি যে, এসব ক্ষেত্রে আমাদের চর্চা হইতে হবে অব্জেক্টিভ ও নির্মোহ। আমরা যেমন নতুন রাজনৈতিক পরিসর নির্মাণের আলাপ করতেছি, তেমনি নতুন সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক পরিসরও নির্মাণ করা লাগবে। যেখানে জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে অবজেক্টিভিটি হবে মানদণ্ড। সৃজনশীলতাই হবে সাহিত্য, প্রোপাগাণ্ডা না। সংস্কৃতির ক্ষেত্রে হইতে হবে সর্বোচ্চ ইনক্লুসিভ। ফ্যাশিস্টের কাউন্টার দেওয়ার জন্য যদি আমরা একপেশে ইতিহাসচর্চা, সাহিত্যিক প্রোপাগাণ্ডা কিংবা অপরায়নের সংস্কৃতির চর্চা করি, তাইলে আমাদের অভ্যুত্থান বৃথা যাবে।
৫. অন মিলিটারি অ্যান্ড সিভিল ব্যুরোক্রেসি
মিলিটারি ও সিভিল ব্যুরোক্রেসি নিয়া জনমনে নানা অসন্তোষ, শঙ্কা, সন্দেহ ও অস্বস্তি এখনও বিদ্যমান। এই মিলিটারি ও সিভিল ব্যুরোক্রেসিই কার্যত দেশ চালাইতেছে কিনা, কিংবা গভমেন্টের অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণ করতেছে কিনা— এ নিয়া নানা ধরনের প্রশ্ন আছে। গভমেন্টরে এইটা দেখতে হবে। সিভিল ও মিলিটারি ব্যুরোক্রেসির মধ্যে ঘাপটি মাইরা থাকা ফ্যাশিস্ট ব্যক্তি ও ব্যবস্থাগুলারে উৎখাত করা লাগবে। আরেকটা ১/১১ হওয়ার সমস্ত পথ রোধ করা লাগবে।
৬. অন বিএনপি
বিএনপির বোঝা লাগবে যে, খালি দখলের রাজনীতি দিয়া সে বেশিদূর আগাইতে পারবে না। আওয়ামি ফ্যাশিস্টরে কাউন্টার করার জন্য তার শক্তিশালী বয়ান ও ন্যারেটিভ লাগবে। এবং জুলাই রেভ্যুলুশনের স্পিরিটের সাথে মিল রাইখা নিজেদের রাজনীতি সংস্কার করা লাগবে। বুদ্ধিবৃত্তিক ও কালচারাল অঙ্গনের সাথে নতুন ধরনের বন্দোবস্ত তার তৈরি করা লাগবে। এক্ষেত্রে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ‘সমন্বিত জাতিবাদ’ বা ‘কল্যাণ রাষ্ট্রবাদ’ হইতে পারে তাদের আদর্শ। পাশাপাশি অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়া গইড়া ওঠা নতুন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বাসনাগুলারে ধারণ করতে হবে। দল হিশাবে তারা ফেইল করলে কিংবা ফ্যাশিস্ট হয়া উঠলে বাঙলাদেশ একটা নতুন ক্রাইসিসের মধ্যে পড়বে।
৭. অন জামায়াত-শিবির
আ. লীগ ও তার কালচারাল ফোর্সগুলা জামায়াত-শিবিররে আনঅফিশিয়ালি নিষিদ্ধ কইরা রাখার মাধ্যমে, ট্যাবু কইরা রাখার মাধ্যমে, এক ধরনের ভাবাদর্শে পরিণত করছিল। এতে দুইটা ক্ষতি হইছে বাঙলাদেশের:
১. ইসলামি চিহ্নধারী যেকোনো কিছুরেই ‘জামায়াত-শিবির’ ট্যাগ দিয়া ডিহিউম্যানাইজ করার রাস্তা খুইলা গেছে। ওয়র অন টেররের রাজনীতি শক্তিশালী হইছে।
২. জামায়াত-শিবিররে রাজনৈতিকভাবে গ্রহণ বা বর্জনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। রাজনৈতিক দলের বাইরে সে একটা ভাবাদর্শ হয়ে উঠছে।
নতুন বাঙলাদেশে এই অস্বস্তিকর অবস্থাটির অবসান ঘটা দরকার। জামায়াত-শিবির না কইরাও মুসলিম চিহ্ন ধারণ করে দেশের কোটি কোটি মানুশ। তাদের সেইটা স্বচ্ছন্দে করতে পারা প্রয়োজন। পাশাপাশি ভাবাদর্শ না, জামায়াত-শিবিররে পলিটিকাল পার্টি হিশাবে গ্রহণ, বর্জন বা পর্যালোচনার রাস্তা খোলা থাকা উচিত। পাশাপাশি দেশের রাজনীতিতে তাদের পুনর্বাসনপ্রক্রিয়াটি ঠিক কেমন হবে, সেইটাও এই সরকারের ভাবা উচিত।
জামায়াত-শিবিরের উদ্দেশ্যে আমার বেশিকিছু বলার নাই। কারণ উনাদের এত শক্তি যে, আমার মত দুর্বল লোকের কথা উনারা আদৌ শুনবেন কিনা সন্দেহ। কিন্তু তবু ঝুঁকি নিয়া কিছু কথা বলতে চাই। নয়া বাঙলাদেশে রাজনীতি করতে হইলে উনাদের অবশ্যই জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিটরে ধারণ করতে হবে। পার্টিসিপেটরি ডেমোক্রেসি ও ইনক্লুসিভ বাঙলাদেশে বিশ্বাসী হইতে হবে। একাত্তর প্রশ্নে উনাদের যে বুদ্ধিবৃত্তিক অবস্থান, তা বিগত বছরগুলাতে কতটুকু চেঞ্জ হইছে আমি জানি না। কিন্তু একাত্তর একটা ইস্যু তো বটেই। সেইটা ওনাদের সলভ করা লাগবে।
ওনাদের বোঝা লাগবে যে, ষাট ও সত্তর দশকের ক্লাসিকাল ইসলামিজমের জামানা শেষ। আরব বসন্তের পর এখন পোস্ট-ইসলামিজমের জামানা শুরু হয়ে গেছে। ফলে সেই মোতাবেক দলের নীতি ও আদর্শরে রিভিজিট করা লাগবে। পশ্চিমের চাপায়ে দেওয়া সেক্যুলারিজম না, বাঙলাদেশের মাটিজলে সিঞ্চিত যে অর্গানিক ইনক্লুসিভিটি, তারে ধারণ করতে পারতে হবে। সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে ঢাকার মিডল ক্লাশরে শত্রু বানানো উচিত হবে না। দলীয় সাংস্কৃতিক বা বুদ্ধিবৃত্তিক বলয়ের বাইরে বৃহত্তর বাঙলাদেশের সাথে একাত্ম হইতে শেখা লাগবে। সেক্যুলার কবি-সাহিত্যিক বা বুদ্ধিজীবীদের ‘নাস্তিক’ হিশাবে মোকাবেলার যে পলিটিকাল থিওলজি, তা পরিত্যাগ করতে হবে। বোঝা লাগবে যে, ওনাদের কেন্দ্র কইরাই আ. লীগের বাজে রাজনীতিটা বারবার ব্যাক করে এই দেশে। সেই পথটা কীভাবে বন্ধ করা যায়, কীভাবে একটা সম্প্রীতির বাঙলাদেশ নির্মাণ করা যায়, তা উনাদেরই ভাবতে হবে।
৮. অন লেফট উইং
লেফটরা রাজনীতির নামে এখনও কেবল কালচার করতেছেন। আর কতদিন করবেন জানি না। শক্ত জনসমর্থন না থাকলে অবশ্য এছাড়া উপায়ও নাই। কেন বাম রাজনীতি এদেশে ব্যর্থ হইল? এর পর্যালোচনা শুরু করার এইটাই বোধহয় শ্রেষ্ঠ সময়।
জুলাই রেভ্যুলুশনের স্পিরিটরে ধারণ কইরা নতুন বাঙলাদেশে নতুন ধরনের রাজনৈতিক চিন্তা নিয়া আগাইতে হবে বামদের। উনিশ শতকের বাঙালি জাতিবাদ, নাইন-ইলেভেনজাত ইসলামফোবিক পরিভাষা ও দৃষ্টিভঙ্গি, অতিমাত্রায় কালচারাল পলিটিক্স ও এনজিওবাদ, জড় ও পুরানা আমলের নেতৃত্ব ইত্যাদি বাদ দেওয়া লাগবে। নিও মার্ক্সিস্ট ধারায় নয়া লিটারেচার, নতুন পরিভাষা, নতুন আইকন ও প্রগতিশীল পলিটিকাল বন্দোবস্ত গড়ে তোলা লাগবে। রাজনীতিটাই করা লাগবে, কালচার না। দেশের বৃহত্তর মুসলিম জনগোষ্ঠীর সাথে একাত্ম হইতে পারার মত ভাষা ও পরিভাষা তৈরি করা লাগবে। ন্যায়, ইনসাফ ও ইনক্লুসিভিটিরে মনেপ্রাণে ধারণ করা লাগবে। ধর্মভিত্তিক রাজনীতিরে ট্যাবু বানায়ে রাখলে তাদের কোনো লাভ নাই, বরং লসই বেশি— এটা মাথায় ভালোভাবে নেওয়া লাগবে। ইডিওলজিরে রাজনীতিতে পরিণত করলে হবে না, বরং বাস্তব রাজনীতির আলোকে ইডিওলজিরে নির্মাণ করা লাগবে। তা না হইলে বাম রাজনীতি চিরকাল ক্যাম্পাসগুলাতেই সীমিত হইয়া থাকবে কেবল; গণমানুশের রাজনীতি হইতে পারবে না।
একটা সুন্দর, সমৃদ্ধ, ইনক্লুসিভ ও ইনসাফপূর্ণ বাঙলাদেশের স্বপ্ন আমরা এখনও দেখি। আমাদের এই স্বপ্ন ব্যর্থ হইতে দেওয়া যাবে না। ইনকেলাব জিন্দাবাদ।
Subscribe to:
Posts (Atom)