বাকা ত্যাড়া কথা || কন্যা দানের বেলা...
-------------------------------------------
ইয়েশিম। এটা শীতের সবজি শিম এর নতুন বা হাইব্রিড কোন জাত নয়। আমার পরম আদরের কন্যা ইয়েশিম। দেখতে দেখতে সে বড় হয়ে উঠেছে। যাকে বলে বিবাহযোগ্য। ওর মা ইয়াসমিনের সঙ্গে কথাও বললাম। আমি বোকা সোকা মানুষ। তাই বুদ্ধি পরামর্শের জন্য ওর মা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ আমার কাছে।
কন্যা দানের জন্য পাত্র প্রসঙ্গ উঠতেই সামনে চলে এলো আমার বিখ্যাত সেই ফিল্টার প্রসঙ্গ। চেতনার ফিল্টার আবিস্কার করে একবার আমি সারাদেশে হইচই ফেলে দিয়েছিলাম তা তোমাদের সবারই জানা। মেয়ের জন্য পাত্র দেখতে গিয়ে তাই সাম্ভাব্য পাত্রদের এক এক করে সেই চেতনার ফিল্টারে ফেলতে লাগলাম। যতই ফেলতে লাগলাম ততই আমার চোখ বড় হতে লাগলো। যাকে বলে ছানাবড়া!
৫..১০...২০... এভাবে ১০০ সাম্ভাব্য পাত্র ফিল্টারে ফেলে যা দেখলাম তা বলার মত নয়। প্রত্যেকটা পাত্রই আমার সেই বিখ্যাত চেতনার ফিল্টারে কোন না কোনভাবে আটকে গেল! তার মানে কি! আমি বেঁচে থাকতে কন্যা দান করতে পারবো না! বিয়ে হবে না আমার মেয়ের!! তা কি করে হয়!! আমার এত এত ভক্তের মধ্যেও এমন একটা চেতনাধারী পাত্র খুঁজে পেলাম না, যার কাছে আমি ইয়েশিমকে পাত্রস্থ করতে পারি!
এরই মধ্যে আমার স্ত্রী ইয়াসমিন এসে ওই ফিল্টারে “পুরোশিমা” কে ছেড়ে দিল। অমনি সুরসুর করে সে চেতনার ফিল্টারের অন্যপ্রান্ত থেকে বেরিয়ে এল। আমি বিস্ময়ের সাথে তাকাতে লাগলাম। কিন্তু এ কি!! “পুরোশিমা” তো একটা রোবট। এর কাছে কিভাবে আমি কন্যা দান করি। হতাশ হয়ে ভাবতে লাগলাম আমি কি তাহলে কন্যা দায়গ্রস্ত হয়ে গেলাম! কিভাবে সম্ভব?
এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ কলিংবেলের আওয়াজ আমার ভাবনায় ছেদ ফেললো। দরজা খুলতেই দেখি আমার আদরের কন্যা ইয়েশিম এক ফিরিঙ্গি যুবকের হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে দেখতেই পরিচয় করিয়ে দিল- ‘বাবা ও স্টিভান, আমার বয়ফ্রেন্ড’। স্টিভান! এ তো আমার সায়েন্স ফিকশনে খাটিয়ে দেয়ার মত নাম! যাইহোক বসতে দিয়ে ভাবতে লাগলাম- যে ভানই হোক, আমার মত এমন খাটের তলার গর্তযোদ্ধার মেয়ে এরকম ফিরিঙ্গি একটা যুবকের হাত ধরে আমার সামনে... কি হচ্ছে এসব!
এসব ভাবতেই তাকিয়ে দেখি আমার মেয়ে ইয়েশিম ওই ফিরিঙ্গি স্টিভানকে আমার চেতনার ফিল্টারের ভেতর ছেড়ে দিয়েছে। দৌড়ে গেলাম ওখানে। তখন আমার হাত-পা থর থর করে কাঁপছে। কিন্তু পরক্ষণে যা দেখলাম তাতে আমি অভিভূত। ফিরিঙ্গি হোক আর যাই হোক, আমার চেতনার ফিল্টার গলিয়ে ওই স্টিভান ঠিক ঠিক বেরিয়ে এসেছে। যেভাবে বেরিয়ে এসেছিল আমার পরম বন্ধু আসাদুজ্জামান নূরের ফিরিঙ্গি জামাই।
এভাবেই ইয়েশিমের বিয়ে ঠিক হলো ওই স্টিভানের সাথে। ফিরিঙ্গির সাথে বিয়ে হলেও ইয়েশিমের বিয়েতে বাঙালি সংস্কৃতির খুটি নাটি সবকিছুর আয়োজনই ছিল! টিয়ে পাখি দিয়ে ভাগ্য গণনা থেকে শুরু করে পালকী, পুতুলে বিয়ে, নাগরদোলা, সাপখেলা এমনকি বাঁদরের নাচ দেখানোর ব্যবস্থাও ছিল। একাত্তরের পরাজিত শক্তিরা আমার মেয়ের বিয়ে নিয়ে কি প্রশ্ন তুলবে ওসব ভাবার সময় আমার নেই। আমি ভাবছি আমি নাহয় চেতনার ফিল্টারে পরিক্ষিত একটি জামাই পেয়েই গেলাম। কিন্তু তোমরা যারা আমাকে ভালোবাসো তারা কোথায় পাবে এত পরিক্ষিত জামাই? আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম?
-------------------------------------------
ইয়েশিম। এটা শীতের সবজি শিম এর নতুন বা হাইব্রিড কোন জাত নয়। আমার পরম আদরের কন্যা ইয়েশিম। দেখতে দেখতে সে বড় হয়ে উঠেছে। যাকে বলে বিবাহযোগ্য। ওর মা ইয়াসমিনের সঙ্গে কথাও বললাম। আমি বোকা সোকা মানুষ। তাই বুদ্ধি পরামর্শের জন্য ওর মা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ আমার কাছে।
কন্যা দানের জন্য পাত্র প্রসঙ্গ উঠতেই সামনে চলে এলো আমার বিখ্যাত সেই ফিল্টার প্রসঙ্গ। চেতনার ফিল্টার আবিস্কার করে একবার আমি সারাদেশে হইচই ফেলে দিয়েছিলাম তা তোমাদের সবারই জানা। মেয়ের জন্য পাত্র দেখতে গিয়ে তাই সাম্ভাব্য পাত্রদের এক এক করে সেই চেতনার ফিল্টারে ফেলতে লাগলাম। যতই ফেলতে লাগলাম ততই আমার চোখ বড় হতে লাগলো। যাকে বলে ছানাবড়া!
৫..১০...২০... এভাবে ১০০ সাম্ভাব্য পাত্র ফিল্টারে ফেলে যা দেখলাম তা বলার মত নয়। প্রত্যেকটা পাত্রই আমার সেই বিখ্যাত চেতনার ফিল্টারে কোন না কোনভাবে আটকে গেল! তার মানে কি! আমি বেঁচে থাকতে কন্যা দান করতে পারবো না! বিয়ে হবে না আমার মেয়ের!! তা কি করে হয়!! আমার এত এত ভক্তের মধ্যেও এমন একটা চেতনাধারী পাত্র খুঁজে পেলাম না, যার কাছে আমি ইয়েশিমকে পাত্রস্থ করতে পারি!
এরই মধ্যে আমার স্ত্রী ইয়াসমিন এসে ওই ফিল্টারে “পুরোশিমা” কে ছেড়ে দিল। অমনি সুরসুর করে সে চেতনার ফিল্টারের অন্যপ্রান্ত থেকে বেরিয়ে এল। আমি বিস্ময়ের সাথে তাকাতে লাগলাম। কিন্তু এ কি!! “পুরোশিমা” তো একটা রোবট। এর কাছে কিভাবে আমি কন্যা দান করি। হতাশ হয়ে ভাবতে লাগলাম আমি কি তাহলে কন্যা দায়গ্রস্ত হয়ে গেলাম! কিভাবে সম্ভব?
এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ কলিংবেলের আওয়াজ আমার ভাবনায় ছেদ ফেললো। দরজা খুলতেই দেখি আমার আদরের কন্যা ইয়েশিম এক ফিরিঙ্গি যুবকের হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে দেখতেই পরিচয় করিয়ে দিল- ‘বাবা ও স্টিভান, আমার বয়ফ্রেন্ড’। স্টিভান! এ তো আমার সায়েন্স ফিকশনে খাটিয়ে দেয়ার মত নাম! যাইহোক বসতে দিয়ে ভাবতে লাগলাম- যে ভানই হোক, আমার মত এমন খাটের তলার গর্তযোদ্ধার মেয়ে এরকম ফিরিঙ্গি একটা যুবকের হাত ধরে আমার সামনে... কি হচ্ছে এসব!
এসব ভাবতেই তাকিয়ে দেখি আমার মেয়ে ইয়েশিম ওই ফিরিঙ্গি স্টিভানকে আমার চেতনার ফিল্টারের ভেতর ছেড়ে দিয়েছে। দৌড়ে গেলাম ওখানে। তখন আমার হাত-পা থর থর করে কাঁপছে। কিন্তু পরক্ষণে যা দেখলাম তাতে আমি অভিভূত। ফিরিঙ্গি হোক আর যাই হোক, আমার চেতনার ফিল্টার গলিয়ে ওই স্টিভান ঠিক ঠিক বেরিয়ে এসেছে। যেভাবে বেরিয়ে এসেছিল আমার পরম বন্ধু আসাদুজ্জামান নূরের ফিরিঙ্গি জামাই।
এভাবেই ইয়েশিমের বিয়ে ঠিক হলো ওই স্টিভানের সাথে। ফিরিঙ্গির সাথে বিয়ে হলেও ইয়েশিমের বিয়েতে বাঙালি সংস্কৃতির খুটি নাটি সবকিছুর আয়োজনই ছিল! টিয়ে পাখি দিয়ে ভাগ্য গণনা থেকে শুরু করে পালকী, পুতুলে বিয়ে, নাগরদোলা, সাপখেলা এমনকি বাঁদরের নাচ দেখানোর ব্যবস্থাও ছিল। একাত্তরের পরাজিত শক্তিরা আমার মেয়ের বিয়ে নিয়ে কি প্রশ্ন তুলবে ওসব ভাবার সময় আমার নেই। আমি ভাবছি আমি নাহয় চেতনার ফিল্টারে পরিক্ষিত একটি জামাই পেয়েই গেলাম। কিন্তু তোমরা যারা আমাকে ভালোবাসো তারা কোথায় পাবে এত পরিক্ষিত জামাই? আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম?
No comments:
Post a Comment