কেউ কেউ বলেন, ধর্ম নিয়ে অবিশ্বাসীরা কেনো এতো হৈচৈ করছে? ওটাকে নাড়াচাড়া না করলেই তো হয়! কথা সত্য, চিরদিন তো তাই হয়ে এসেছে, সামান্য কিছু অবিশ্বাসী এর প্রতিবাদ করেছে বটে কিন্তু এতে ধর্মের কোনো পরিবর্তন হয়নি। ধর্মগুলো নিরাপদে থেকে শুধু পরস্পর পরষ্পরের সাথেই নয়, একই ধর্মালম্বীদের মধ্যেও চিরদিনই অরাজকতা চালিয়ে আসছে। কেউ কারো মতামতকে সামান্য ছাড় দেয়ার মনমানসিকাত ধর্মে আছে বলে মনে হচ্ছে না। ফলে আজো, যখন কোনো অবিশ্বাসী ধর্মের কুসংস্কারসহ নারকীয় হত্যাযজ্ঞ দেখে প্রতিবাদ করে, তখনই প্রায় সব ধার্মিকরা ফাল দিয়ে ওঠেন, এবং সঙ্গে সঙ্গে বুদ্ধিজীবিসহ রাষ্ট্রনায়কেরা মিউ মিউ শুরু করেন। এই করতে করতেই তো একটার পর একটা আইএস দানব গোষ্ঠিসহ আলকায়দা, আলশাবাব, আনসারুল্লাহ, জেএমবি… সৃষ্টির ফ্যাক্টরির অভাব নেই। যা দমন করতে পৃথিবীর সব রাষ্ট্রেরই কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে (একটা দমন করা গেলে আরেকটার উৎপাত শুরু হয়…)। আর উভয়পক্ষের গোলাগুলি ও দানবীয় কর্মকাণ্ডে মরছে সাধারণ মানুষ (অনুমান ৯০%ই)। আশ্চর্য যে, বুদ্ধিজীবিসহ রাষ্ট্রনায়কগণ নিরাপদে থেকে, বক্তৃতা ও বিবৃতি দিয়েই চলেছেন, অথচ সমস্যার গভীরে হাত দিতে চাইছেন না। এই যদি হয় সভ্য পৃথিবীর ধর্মের অবস্থা। যখন ধর্মদানবদের তাণ্ডবে মানবতা ভুলুণ্ঠিত, তখন এর মূল উৎসগুলো যারা উন্মোচন করে, তাদের দোষারোপ করে, থামিয়ে দিয়ে আপনারা ভুল করছেন। কেননা, একসময় বুমেরাং হয়ে যে আপনাদের ঘাড়ে ওসব ফিরে আসবে না এর নিশ্চয়তা কোথায়! অতএব অনুরোধ, ধর্মসন্ত্রাস বন্ধের জন্য যেখানে সংশোধন অতীব জরুরি, সেখানে অতিসত্ত্বর হাত দিন।
অনেকেই আবার বলেন ও ভাবেন, ওরা কেনো ধর্মের সমালোচনা করছে! বিষয়টি অবশ্যই ধার্মিকদের কাছে শুধু অগ্রহণযোগ্য নয়, কষ্টের বিষয়ও বটে! স্বীকার করছি, যা ভালো তা নিয়ে সমালোচনা বা মন্দ বলা উচিত নয়। যেমন বিজ্ঞান, এ নিয়ে কেউ সমালোচনা করে না, মন্দ বলে না (সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হলেও)। অথচ ধর্ম নিজেই যে সমালোচনার দরজা-জানলাগুলো খুলে রেখেছে, সেসব কেউ কী ভেবে দেখেছেন? না দেখলে, আজ থেকেই ভাবুন। তবে ভাবলেই চলবে না, মনোসংযোগ ও প্রশ্নসহকারে পড়তে ও ভাবতে হবে; অর্থাৎ এর জন্য দায়ী কে বা কারা? এ মূর্খ মনে করে, এর জন্য সম্পূর্ণরূপে দায়ী ঈশ্বর, ধর্ম এবং বিশেষ করে ধর্মপ্রবর্তক, পরবর্তীতে গ্রন্থলেখক/বাণী সংরক্ষকরা। কারণ তারা যখন তথাকথিত ঐশ্বীবাণী লিপিবদ্ধ করেছেন, তখন বোধহয় ভাবেননি, কতিপয় আনাড়ি মানুষ (অবিশ্বাসী) তাদের ভুল ধরবে এবং সমালোচনা করবে। ভাবলে বোধকরি ধর্মপুস্তকগুলোর ভাষা, কাহিনী, বাক্য, ব্যাকরণ… ইত্যাদি আরো বাস্তবধর্মী, গ্রহণযোগ্য, সুন্দর, সঠিক, মজবুত ও শুদ্ধ হতো। বিশেষ করে, অবৈজ্ঞানিক ও কুসংস্কারসহ নানারকম ভয়-ভীতি, নরকের জ্বালা-যন্ত্রণার হুমকি-ধামিকগুলোর ব্যাপারে আরো সর্তক থাকতেন। যাহোক, গ্রন্থলেখক বা ধর্মপ্রবর্তকদের তো আর পাওয়া যাবে না, তাই ধর্মজীবিসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিগণকে অনুরোধ, একবার ঠাণ্ডা মাথায় ধর্মপুস্তকগুলো নিয়ে বসুন এবং ভাবুন অবিশ্বাসীরা কেনো, কী কারণে… এর সমালোচনা করছে? দয়া করে, হুট করে ফাল দিয়ে উঠবেন না যেন! মাথা গরম করলে সমাধান তো হবেই না, বরং বাড়বেই (যেমনটা আদিকাল হতেই চলে আসছে)।
অতএব ধর্মকে নিরাপদে রাখার জন্য যারা মরিয়া এবং যেসব বিদ্বান এবং ধর্মজীবিরা অবিশ্বাসীদের সাবধান করছেন, তাদের সকলের প্রতি আহ্বান, ধর্মকে সংস্কার করে, দানব সৃষ্টির পথ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করুন। ধর্মকে যতোটা সম্ভব নমনীয় এবং মানবীয় করে, বিশেষ করে রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণ দূরে রেখে… যতোখুশি পালন করুন, কোনো সমালোচনার প্রয়োজন হবে না। বহু ধর্মই এখন কঠিন সমালোচনায়ও ফাল দিয়ে ওঠে না (যা নিয়ে অবিশ্বাসীদের মাথাব্যথা নেই বললেই চলে)। কারণ ওইসব ধর্মের ধর্মজীবিরা মুখে স্বীকার না করলেও, প্রকৃত সত্যটা বুঝতে পেরে সমালোচনাগুলো নিরবে হজম করে যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, কিছুদিন যাবৎ পোপের বক্তব্যগুলো লক্ষ্য করুন (আশা করি পরবর্তিতে আলোচনা করবো)। ধর্ম চিরজীবি হোক কিংবা নিপাত যাক, এতে অবিশ্বাসীদের কোনো দুঃখ নেই। দুঃখ, ধর্ম যখন মানবতার শত্রু হয়ে দেখা দেয়; ধর্মে যখন দানব তৈরির মশলা থাকে। সেকারণেই যতোদিন পর্যন্ত ধর্ম একটিও মানবতাবিরোধি কর্মকাণ্ড ঘটাবে, নম্র, ভদ্র, শালীন হতে না শিখবে, অন্য ধর্মকে সহ্য করার শিক্ষা না দিয়ে বরং সমালোচনার ঝড় তুলবে, নিজেকে শ্রেষ্ঠ বানানোর জন্য মরিয়া থাকবে, যতোদিন ধর্ম-ফ্যাক্টরির মধ্যে একটা দানব সৃষ্টিরও মশলা থাকবে… ততোদিন পর্যন্ত ধর্মেকে ছাড় দেয়ার প্রশ্নই উঠে না। এছাড়াও, অবিশ্বাসী/সমালোচকদের শাস্তি দিতে রাষ্ট্রের আইন আছে কিন্তু এক ধর্ম যখন অন্য ধর্মের সমালোচনা করে তখন তা আইনের আওতায় আসে না কেনো, কেনোই বা রাষ্ট্র তখন চুপ থাকে? প্রমাণ দিতে পারবেন কী, ধর্ম নিজে রাষ্ট্রের আইন মেনে চলছে? চললে, এখনো (হলি আর্টিজমের নৃশংস্য হতাযজ্ঞের পরেও) কীভাবে এক ধর্ম অন্য ধর্মকে প্রকাশ্যে সমালোচনা করছে? এসব শুনেও যখন রাষ্ট্র কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না, তখন অবিশ্বাসীরা কেনো চুপ থাকবে?
পূর্বেও বলেছি, মানুষ যেহেতু না পড়ে, না বুঝে, ভালো-মন্দ বিচার না করেই ধার্মিক হয় (যেন প্রাকৃতিকভাবে বা অভ্যেসবশত), সেহেতু ধার্মিকতায় বহু বিভ্রান্তি থাকে। অতএব ধর্মগ্রন্থ নিজে যেমন পড়তে হবে, অন্যকেও পড়াতে হবে। অথচ প্রায় শতভাগ সাধারণ মানুষসহ বেশিরভাগ উচ্চশিক্ষিতরাই মনে করে, ধর্মগ্রন্থ পড়ার প্রয়োজন নেই। ওসব তো জানি। কিন্তু না! ওসব ‘ঠিকভাবে’ পড়ি না বলেই, ওর মধ্যেকার ভুল, কুসংস্কার, কুকথা, মানবতাবিরোধী নানা হুমকি-ধামকি, লোভ-লালসা… জানতে ও বুঝতে পারি না। বারবার বলেছি, পড়ার (প্রশ্নসহ) কোনোই বিকল্প নেই। পড়ে পণ্ডিত হওয়ারও প্রয়োজন নেই, সত্য জানার মতো করে পড়লেই হলো। কারণ ধর্ম সম্পর্কে আমরা যে দিকটা জানি (ভালো), সেটা ছাড়াও ধর্মপুস্তকেই আরেকটা দিক (খারাপ) আছে, পড়ি না বলে জানি না। যদিও অনেকেই বলছেন, তারা পড়েছেন, কেউ কেউ নাকি বারবার পড়েছেন, তথাপিও খারাপ কিছু পাননি। এ মূর্খের মতে, তারা মনোযোগ দিয়ে এবং প্রশ্নসহ পড়েননি অথবা বিশ্বাসে অন্ধ বলেই খারাপ কিছুই পাননি অথবা ভয়ে লুকিয়ে যাচ্ছেন। কারণ বেশিরভাগ মানুষই বিশ্বাস করেন, এসব ভুল-ভ্রান্তি, কুংস্কার নিয়ে আলোচনা বা প্রকাশ করা মানেই ধর্মে আঘাত এবং স্বর্গের দ্বার বন্ধ হয়ে যাওয়া। হয়তো তারা ধর্মের নানারূপ অকথ্য শাস্তির হুমকিতে সদা কম্পমান। ভাবছেন, ধর্মের ভুল ধরলে পাপ হবে, ঈশ্বর অভিশাপ দেবে ইত্যাদি এবং এসব জেনেও তারা নিরব থাকেন।
এছাড়াও, কথিত ঐশ্ব বাণীর ভুল-ভ্রান্তি ধর্মপুস্তক থেকে উদ্ধৃতিসহকারে উল্লেখ্য করার পরও ধার্মিকসহ অনেক উচ্চশিক্ষিতরাও বলেন, এর আগে-পিছে পড়তে হবে, দেখতে হবে, কেনো ও কী কারণে এসব বলা/লেখা হয়েছে ইত্যাদি। প্রশ্ন, একটি সম্পূর্ণ বাক্যের আগের ও পরের বাক্য পড়লে কী, ওই বাক্যের ভিন্ন অর্থ হবে? যা মহাপবিত্র(!) তাতে একই বাক্যের ভিন্ন ভিন্ন অর্থ থাকা কী বাঞ্ছনীয়? যদি থাকে, তাহলে তা কীভাবে মহাসত্য হয়? উদাহরণস্বরূপ পত্রিকার খবর- “আইএস, ইয়াজিদি পুরুষদের হত্যা করে নারীদের যৌনদাসী বানিয়েছে।” এর আগে ও পরের বাক্যগুলো পড়ে মানুষ বিস্তারিত জানতে পারে কিন্তু এ ‘সম্পূর্ণ বাক্য’টির অর্থ কীভাবে পরিবর্তন হবে, এ মূর্খ বুঝে না, আপনারা বোঝেন কী? অনুরূপভাবে, ধর্মপ্রবর্তক বা ঈশ্বর কিংবা ধর্মগ্রন্থ যখন বলে- স্বর্গে এই আছে, ওই আছে কিংবা মহানন্দে-মহাসুখে, পরিশ্রমহীনভাবে অনন্ত জীবন উপভোগ করার জন্য যা যা প্রয়োজন সব আছে। এই করলে বিনাবিচারে অতিসহজে স্বর্গে যাবে, সেখানে বহু লোভনীয় পুরুষ্কার রয়েছে, নরকে গেলে কুখাদ্য ও চরম শাস্তি এবং স্বর্গে গেলে সুখাদ্য, সুন্দরী… ইত্যাদি মিলবে (বিস্তারিত ব্যাখ্যায় তথাকথিত ধর্মানুভূতি নষ্ট হবে)। যাহোক, প্রশ্ন হলো- ধর্মগ্রন্থের এরকম বাক্য/বাণীর আগে বা পরে পড়লে কী বুঝবেন? এতে কী এসব লোভ ও হুমকিমূলক বাক্যগুলোর অর্থের কোনো পরিবর্তন হবে? এ মূর্খ মনে করে, একবিন্দুও পরিবর্তন হবে না। এসবই ধর্মের কথিত মর্যাদা রক্ষার জন্য ভন্ডামী ও ডাহা মিথ্যা। মূলত, ধর্ম সত্য স্বীকার করে নেয়ার মতো মহৎ নয়। জন্মলগ্ন থেকেই ধর্ম, তার মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তিগুলোকে বিভিন্ন কৌশলে ঢেকে রাখাতে গিয়ে আরো বেশি মিথ্যাচার করেই যাচ্ছে। তাছাড়া, প্রায় সব ধর্মই বিশ্বাস করে ও বিভ্রান্তি ছড়ায় যে, তাদের ধর্মের বহু শত্রু আছে এবং শত্রুর মোকাবেলায় অবশ্যই সদা প্রস্থত থাকতে হবে। এটি ধর্মের এক মারাত্মক ও জঘন্য শিক্ষা। প্রশ্ন- ধর্মের কেনো শত্রু থাকবে? নাকি ধর্ম নিজে ইচ্ছা করেই (বিধর্মীসহ স্বধর্মী বিভিন্ন গোত্রকেও) নিজের শত্রু বানাচ্ছে? তবে কী ধর্ম নিজেই শত্রু তৈরির ফ্যাক্টরি? কারণ যা মহাসত্য, যা সর্বশ্রেষ্ঠ… তার কেনো এতো শত্রু থাকবে?
সেহেতু মনে হয়, ধর্ম নিজেই আশংকা/আতঙ্ক-রোগে রোগাক্রান্ত। কারণ ধর্ম প্রচারে কমন কিছু বক্তব্য হলো- ওমুকে (ধর্ম) শত্রু, তমুকে এই সর্বনাশ করতে চাচ্ছে, ওদের ব্যাপারে সতর্ক থাকো, ধর্মযুদ্ধের জন্য প্রস্থত থাকো, এই সর্বনাশ-সেই সর্বনাশ করতে পারে, ওমুক (ধর্ম) খুব খারাপ, বিধর্মীরা এই করে-সেই করে, আমাদের ধর্মে এসব নেই, আমরাই সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মালম্বী… ইত্যাদি। সত্যি করে বলুন তো, এরূপ বক্তব্য কী মানুষের মনে আশংকার/আতঙ্কের সৃষ্টি করছে না? এর ফলে বিপর্যয়ের সামান্যতম আশংকা দেখলেই কী প্রায় সকল শ্রেণিপেশার মানুষ একত্রে প্রতিবাদ করে উঠছে না? এমন আশংকা থেকেই মাঝেমাঝে কী মহাবিস্ফোরণ ঘটছে না? এমন ধর্মশিক্ষা কী কখনো সামাজিক বা জাতিগত সমপ্রীতি বজায় রাখতে পারে? এরূপ শিক্ষা বহালতবিয়তে আছে বলেই (প্রায় বিনা খরচে) দানব সৃষ্টি সম্ভব, অন্য কোনোকিছু দিয়ে যা সম্ভব নয়।
কথিত আছে, জঙ্গি দমনে সরকার “জিরো টলারেন্স” নীতিতে বিশ্বাসী। কিন্তু বুঝতে পারছি না, ধর্মানুভূতির পারদ ১০০ ডিগ্রির উপরে রেখে “জিরো টলারেন্স”-এ লাভটা কী? কথিত এ অনুভূতি এক’শ ডিগ্রির উপরে রেখে, আর যা-ই হোক জঙ্গি দমন কিংবা টার্গেট কিলিং বন্ধ কোনোভাবেই সম্ভব না। অবশ্যই এটা শূন্য ডিগ্রিতে নামিয়ে আনতে হবে। আর এজন্য সর্বপ্রথমেই ধর্মশিক্ষার উপর কড়াকড়ি ও কার্যকরি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে হবে। যদিও এদেশের পরিবেশ ও পরিস্থিতির আলোকে প্রায় অসম্ভব। কারণ কথিত এ ধ্বংসাত্মক অনুভূতির পারদ নিচে নামানোর কোনো চেষ্টাই দেখছি না বরং আরো উপরে ওঠানোর জন্য নানা ফন্দি (যেমন মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে লুটপাট, জ্বালাওপোড়াও ছাড়াও নিরব অত্যাচার…) দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে শিক্ষিত, অতিচালাক, ফটকাবাজ এবং চালাক রাজনীতিবিদের হাতে ধর্ম মারণাস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যা মানব সভ্যতাকে প্রচণ্ডরকমের হুমকির মধ্যে ফেলেছে। ধর্ম যদি রাজনীতিবিদের মরণখেলা না হতো, শুধুমাত্র ধর্মীজীবিদের হাতেই থাকতো, তাহলেও বোধকরি ধর্ম এতোটা নৃশংস্য হতো না। এখানেও অবিশ্বাসীদের মাথাব্যথা। কারণ এটা ভিন্নভিন্ন ধর্মালম্বীদের জন্যই কেবল হুকমি নয়, নিজ ধর্মালম্বীদের বিভিন্ন গোষ্ঠির জন্যও হুমকি। অতএব এ হুমকি শূন্য ডিগ্রিতে নামিয়ে এনে ধর্ম পালন করুন, একটা সমালোচনাও হবে না। মতলবাজ, ধূর্ত রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবিদেরও মিথ্যাচার করে ধর্মের সাফাই গাইতে হবে না, মানবতাবাদিদেরও (আপনাদের ভাষায় নাস্তিকদের) ভয় দেখাতে হবে না…। কিন্তু যে পর্যন্ত শূন্য ডিগ্রির উপরে থাকবে, অবিশ্বাসীরা চুপ থাকবে না।
সবশেষে, দেশি-বিদেশী ক্ষমতাধর রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ এবং জ্ঞানীগুণি পণ্ডিতদের বলছি- আপনারা যা বলছেন ও করছেন, পক্ষান্তরে তা জঙ্গি তথা ধর্মসন্ত্রাসীদের পক্ষেই যাচ্ছে। আপনার ওদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছেন ঠিকই আবার এও বলছেন, সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্ম নেই, ধর্মের দোষ কী? ধর্ম এশিক্ষা দেয় না, ওশিক্ষা দেয় না… ইত্যাদি। যার ফলে আজীবন এ যুদ্ধ চালিয়ে গেলেও ওদের নির্মূল করতে পারবেন না। কারণ শেকড় এবং বীজ দুটোই রয়ে যাচ্ছে, হয়তো কিছুদিন শুকিয়ে থাকবে কিন্তু আবার গজাবেই। অতএব অনুরোধ, দানব দমনে প্রকৃত সত্য অর্থাৎ জঙ্গিবাদের ফ্যাক্টরিগুলো বন্ধে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ এবং বিশ্বকে জঙ্গিমুক্ত করে ইতিহাসের পাতায় চির অমর হয়ে থাকুন।
No comments:
Post a Comment