Sunday, 28 December 2025

হাদীকে বাঁচতে দেওয়া হলো না ?

"হাদী সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ্জা-মান" কে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেছিল:— সাহস থাকলে কু করে দেখান। জনগণ গিয়ে ইট খুলে আনবে ক্যান্টনমেন্ট থেকে। এটা কোনো হুমকি ছিল না—এটা ছিল জনতার শক্তির ঘোষণা। "হাদী প্রধান উপদেষ্টার"চোখে চোখ রেখে বলেছিল:— আমি বিশ্বাস করি, আপনি পালাতে আসেননি। তাই ভয় পাবেন না। নামগুলো বলেন— কারা আপনাকে কাজ করতে দিচ্ছে না। এই কথার ভেতর ছিল না ভদ্রতার মুখোশ, ছিল সত্য বলার সাহস। "ইন্টেরিমের উপদেষ্টাদের" উদ্দেশে হাদী বলেছিল:— একজন রিকশাওয়ালাও জানে—আপনাদের কেউ ভালো না। আপনারা জুলাইকে বেচে দিয়েছেন। এক পা বিদেশে, আরেক পা ক্ষমতার টেবিলে। শহীদদের রক্তের সঙ্গে আপনারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। এই অভিযোগ কোনো গুজব না—এটা রাজপথের রায়। "হাদী বিএনপি"-কে বলেছিল:— শহীদ জিয়ার দলকে ভারতের দাস বানাতে দেবো না। কারণ স্বাধীনতার নামে দাসত্ব মানে শহীদদের অপমান। "হাদী জামায়াতে ইসলামী"-কে বলেছিল:— নিজামী, সাঈদীর জামাতকেও ভারতের দাস হতে দেবো না। কারণ আদর্শের কথা বলে পরাধীনতা মেনে নেওয়া সবচেয়ে বড় ভণ্ডামি। "হাদী এনসিপি"-কে সোজাসাপটা বলেছিল:— তোমরা জুলাইকে নিজেদের সম্পত্তি বানিয়েছ। মনে রেখো—জুলাই কোনো দলের না, জুলাই পুরো দেশের। এই কথায় কেঁপে উঠেছিল অনেকের সাজানো বয়ান। "হাদী এমনকি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী-লীগের" ক্ষেত্রেও বলেছিল:— যারা গণহত্যায় জড়িত না, তাদের সাথেও ইনসাফ করতে চাই। কারণ হাদীর রাজনীতি ছিল প্রতিশোধের না। ন্যায়ের। ঢাকা–৮ আসনে হাদী নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী মির্জা আব্বাস আর হেলাল উদ্দীনকে "ভাই" বলে দোয়া চেয়েছিল:— কারণ সে শিখিয়েছিল, রাজনীতি মানেই শত্রুতা না, রাজনীতি মানেই মানবতা। হাদী “হেভিওয়েট রাজনীতি”র মিথ ভাঙতে চেয়েছিল:— ক্ষমতা আর টাকার কাছে মাথা নত না করে সবার জন্য সমান মাঠ গড়তে চেয়েছিল। হাদী প্রমাণ করতে চেয়েছিল— সততা, ভালোবাসা, ত্যাগ আর জনগণের ভাষা বুঝতে পারলে, কোটি টাকার প্রার্থীকেও হারানো যায়। "হাদী চেয়েছিল" হিন্দুদের জন্য আলাদা রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম:— যাতে কোনো দল আর কোনো সময় তাদের ভোটব্যাংক বানিয়ে ব্যবহার করতে না পারে। হাদী স্বপ্ন দেখেছিল:— ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে এই দেশের মানুষকে এক কাতারে দাঁড় করানোর। হাদী কালচারাল ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে যোগ্য, দক্ষ সাহসী মানুষ তৈরি করতে চেয়েছিল। হাদী চেয়েছিল:— জুলাইয়ের শহীদদের খু/নীদের বিচার। "৫৭ বিডিআর" হ/ত্যার বিচার। শাপলা গণহত্যার বিচার। গুম–খুনে জড়িত ডিজিএফআইয়ের নরপশুদের বিচার। হাদী দেখাতে চেয়েছিল:— বিক্রি না হয়েও রাজনীতি করা যায়। মুড়ি আর বাতাসা দিয়েও জনসংযোগ হয়। কোটি টাকা ছাড়াও নির্বাচন করা যায়— যদি জনগণ পাশে থাকে। আমি একজন সাধারন নাগরিক হিসেবে ইন্টেরিম সরকার ও বাংলাদেশের জনগণের কাছে জানতে চাই ? এই চাওয়াগুলো কি এতটাই অপরাধ ছিল? তাই কি হাদীকে বাঁচতে দেওয়া হলো না? তাহলে আজ প্রশ্ন একটাই—? *এই দেশে কি সততা নিয়ে রাজনীতি করা নিষিদ্ধ? *ইনসাফের কথা বললেই কি মৃত্যু অনিবার্য? *জনগণের পক্ষে দাঁড়ালেই কি গুলি বরাদ্দ? যদি, হাদীর স্বপ্ন অপরাধ হয়:- তাহলে এই রাষ্ট্র নিজেই অপরাধী। আর যদি হাদীর চাওয়াগুলো সত্য হয়:— তাহলে হাদী মরেনি, হাদী আজও প্রশ্ন হয়ে এই জাতির বুকের ভেতর আগুন জ্বালিয়ে যাচ্ছে।

No comments:

Post a Comment