Khan Thoughts
Monday, 10 March 2025
নব্বই দশকের বিয়ে ‘তেলাই থেকে ঘুরানি
নব্বই দশক আমার কৈশোরের সোনালি আলো মাখা স্মৃতিতে ভেসে আছে। ওই সময়ের গ্রাম-গঞ্জের বিয়েতে যে রীতি ছিল তা আজও চোখের সামনে ভেসে ওঠে। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানকে বলা হতো ‘তেলাই’। তখন বর-কনে উভয়কেই ‘তেলাই’ দেওয়া হতো।
কিন্তু এখনকার দিনে বর কনে উভয়কে যেমন সমান গুরুত্ব দিয়ে গায়ে হলুদ দেওয়া হয়, এই আনুষ্ঠানিকতা তখনকার দিনে কম হতো। বরের ক্ষেত্রে বিয়ের দিন গোসলের সময় মা হয়তো একটু হলুদ বেটে ছেলের কপালে লাগিয়ে দিতেন। তারপর গোসল করিয়ে নতুন লুঙ্গি, পাঞ্জাবী পরিয়ে বরকে প্রস্তুত করা হতো। কনের গায়ে হলুদে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হতো। গায়ে হলুদে যেসব উপাদান ব্যবহার করা হতো, সেগুলোর বেশিরভাগই ব্যবহার করা হতো কনের গায়ের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য। কনের গায়ে ও মুখে দেওয়া হতো হলুদ ও গিলা বাটা (এক ধরনের গাছে বীজ)। কনেকে গোসল করিয়ে নতুন শাড়ি পরানো হতো। তবে সেটা হলুদ শাড়ি হতেই হবে তেমন চল ছিল না। সাধারণত তাঁতের শাড়ি পরানো হতো। এই শাড়ি স্থানীয় তাঁতিদের তৈরি শাড়িই হতো। বিয়ের আগের দিন কনেকে এক ধরনের খাবার খাওয়ানো হতো। যাকে আইবুড়ো ভাত বলা হতো।
বিয়েতে গীত গাওয়ার রীতি ছিল। গ্রামের যেসব নারী গীত গাইতে পারতেন তারা স্বতঃস্ফুর্তভাবে বিয়ে বাড়িতে আসতেন, গীত গাইতেন এরপর পান, সুপারি খেয়ে বিদায় নিতেন। হেঁটে, পালকি নিয়ে অথবা গরুর গাড়িতে বা ঘোড়ার গাড়িতে বরযাত্রী যেত কনের বাড়িতে। বর্ষা ঋতুতে নৌকায় বরযাত্রী যাওয়ার দৃশ্য দেখা যেত। দেখা যেত যে বউকে নেওয়ার জন্য পালকি বা ডুলি আনা হতো। ডুলিতে শুধুমাত্র বউ বসতে পারতো। কারণ ডুলি আকারে ছোট। কিন্তু পালকি বড়-ছোট হতো। এমনও পালকি ছিল যে, চারজন বসতে পারতেন। সাধারণত ওই সময় কলা গাছ এবং দেবদারুর পাতা, রঙিন কাগজের ঝালর দিয়ে গেইট তৈরি করা হতো। এ ছাড়া রঙিন কাগজের ঝালর দিয়ে বর বসার জায়গা সাজানো হতো।
যথারীতি বর আসার পরে ‘গেইট ধরা’ হতো। সেখানে দরদাম হতো। ইংরেজিতে বাকোয়াজ হতো। অনেক সময় পরবর্তীতে দেখা যেতো যে দুই পক্ষের মুরুব্বিরা কথা বলে টাকার মাধ্যমে সমঝোতায় আসতেন।। এরপর বর তার জন্য নির্ধারিত জায়গায় বসতো। আরেকটি বিষয় ছিল বরের জুতা চুরি করা। শালা, শালি এমন স্থানীয় লোকেরা বরের জুতা চুরি করার ধান্ধায় থাকতো আর বরপক্ষের এমন এক্সপার্ট লোক থাকতো যার কাজই ছিল বরের জুতা চোখে চোখে রাখা। কিন্তু যেকোন ভাবেই বরের জুতা চুরি হয়েই যেত। এরপরে আবার ধ্যান-দরবার হতো যে, বর এখন কি পরবে? তখন আবার বরের বোন জামাই যে থাকতো দেখা যেত যে টাকা পয়সা দিয়ে বরের জুতা উদ্ধার করতো। কনের ‘আয়ো সিঙ্গারীরা’ কনেকে বিয়ের আগের দিন থেকে সম্পূর্ন দেখভাল করে রাখতো এবং বিয়ের কনে হিসেবে সাজিয়ে দিত। আর কনেকে সাজানোর জন্য বরের বাড়ি থেকে যেসব জিনিসপত্র পাঠাতো তার নাম ছিল খঞ্চা। খঞ্চায় আয়ো সিঙ্গারীদের জন্য আলাদা উপহার থাকতো। আরও থাকতো দাদী, নানীর শাড়ি। দেখা যেত যে যদি আপন দাদী, নানী নাও থাকতো তাহলে পাড়া প্রতিবেশি দাদি, নানিকে ওই শাড়ি দেওয়া হতো।
মুসলিম বিয়েতে বরযাত্রীদের জন্য গরুর মাংস, ভাত, সবজি, ডাল, দই, মিষ্টি দেওয়া হতো। তখন পোলাও তেমন দেওয়া হতো না। বর কনের বিয়ে পড়ানো হতো মুরুব্বিদের উপস্থিতিতে। এরপর একটি গামলা পানিভর্তি করে তার মধ্যে কড়ি, আংটি কিংবা পয়সা দিয়ে দেওয়া হতো। একটা ওড়নায় বর-কনের মাথা ঢেকে তাদেরকে গামলা থেকে কড়ি খুঁজে বের করতে বলা হতো। দেখা যেত কড়ি বা পয়সা এক সময় বর পাচ্ছে, আরেকবার কনে পাচ্ছে।
এই পর্ব শেষে মিষ্টি মুখের পালা—বর কনেকে মিষ্টি খাইয়ে দিত এবং কনে বরকে মিষ্টি খাইয়ে দিত। তারপর হতো মালা বদলের আনুষ্ঠানিকতা হতো। বিয়ে শেষে কনে বিদায়ের সময় কনে কান্নাকাটি করতে করতে অনেক সময় বেহুশ হয়ে যেতো। কনের সঙ্গে ছোট, ভাই বোন বা দাদি, নানি যেতেন। এই যাওয়াকে বলা হতো ‘কোল ধরা’। কনে শ্বশুরবাড়িতে চলে যেতো। এক বা দুইদিন পরে বউ ভাত অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হতো। ওই অনুষ্ঠানে কনেপক্ষের লোকজন মাছ, মিষ্টি, পান, সুপারি নিয়ে দাওয়াত খেতে যেতো। ফেরার সময় বর কনেকে নিয়ে আসা হতো মেয়ের বাবার বাড়িতে। যেটা ‘ফিরানি’ নামে পরিচিত।
পরদিন নতুন জামাইকে বাজার করতে যেতো হতো। জামাই বাজারে গিয়ে ঝাঁকায় করে মাছ, মাংস, দুধ থেকে শুরু করে মসলা পর্যন্ত কিনে আনতো। অর্থাৎ যার যেমন সামর্থ্য। এই নিয়ে লোকজনেরা উৎসুক থাকতো। কার জামাই কত ভালো বাজার করলো এই দেখার জন্য পাড়াপরশিরা আসতো। তারা কিন্তু খেতে আসতেন না নতুন বর কি বাজার এনেছে তাই দেখতে আসতেন এবং এই নিয়ে চর্চা চলতো। নতুন বর শ্বশুরবাড়িতে দুই বা তিনদিন থেকে বউ নিয়ে নিজের বাড়ি ফিরতো। যাকে বলা হয় ‘ঘুরানি’। এই ঘুরানির মাধ্যমে শেষ হতো বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।
Copied
#viralpost2025シ2025 #viralpost2025シ #viralreelsシ #videoviralシ #viralreelsfb #viralvideoシ #viralreelsfacebook #viralreelschallenge #trendingreels #trendingreelsvideo
Tuesday, 25 February 2025
Obtaining French residency under new circular
List of 👉Il-do-france.
✅If you work in any profession, you can deposit 1️⃣2️⃣ fees do pay under 3️⃣ years.
There is also a Cuisiner position which is a good news.
Pretty much confirmed. But have to wait for the decree.
The list of:
E2Z80 Mastering and assimilating agents of process industries
A0Z40 Salaried farmers
T2A60 Home helpers and house helpers
V0Z60 Caregivers
H0Z91 Maintenance and Environmental Technical Framework
G0B40 Automotive Bodyshop
D2Z40 Boilermakers, sheet metal, trackers, locksmiths, blacksmiths
B6Z73 Construction managers, work drivers (non-crew)
B2Z44 Couvreurs
S1Z40 Cookers
C2Z71 Drawers in electrical and electronic
D6Z71 Drawers in mechanics and metalworking
A0Z41 Paid breeders
S2Z60 hotel staff
T1Z60 Housekeepers and cleaning staff
V1Z80 Nurses
H0Z92 Production Methods Quality Control Engineers
B7Z91 Building and Public Works Engineers, Site Supervisors and Drivers
work (frames)
M2Z91 Engineers and administrative executives, computer maintenance
N0Z90 Engineers and Research, Research and Development (Industry)
M2Z90 Engineers and frameworks in computer science, research and development,
computer project managers
A1Z40 Marchers, paid horticulturists
C0Z20 Unskilled electrical and electronic workers
E0Z21 Unskilled workers in the agri-food industries
B3Z20 Unskilled workers of the second building
D0Z20 Unskilled workers working by removing or forming metal
G0A40 Mechanical qualified maintenance workers
B4Z44 Skilled painting and finishing building workers
C1Z40 Electrical and electronic skilled workers
F3Z41 Skilled Woodworking And Furniture Workers
D1Z41 Skilled workers working by removing metal
D1Z40 Regulators
J4Z80 Logistics managers (non-executive)
L4Z81 Accounting and Financial Services Technicians
J5Z80 Transport and Tourism Technicians
C2Z70 Electrical and Electronics Technicians
G1Z70 Maintenance and Environmental Control Technicians and Officers
B6Z71 Construction and public works technicians and officials
G1Z71 Expert technicians
D2Z41 Pipeutters
A1Z42 Wine growers, salaried arborists
Wednesday, 29 January 2025
বাংলাদেশের সাথে পাংগা নিয়ে ভাড়তের মোট অর্থনৈতিক লাভ হইল প্রায় ১২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
জুলাই বিপ্লবের পর বাংলাদেশ থেকে ভাড়তে পর্যটক যাওয়া বন্ধ হওয়াতে শুধু পর্যটন খাতেই ভাড়তের ক্ষতি প্রায় ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ভিসা ফি থেকে আয় হতো বছরে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
চিকিতসা খাতে ভাড়তের মোট আন্তর্জাতিক রোগীর ৮৫ ভাগ আসে বাংলাদেশ থেকে যা থেকে তারা ৮ বিলিয়ন ডলার ইনকাম করতো
বাংলাদেশে কর্মরত ২৬ লক্ষ ভাড়তিয় প্রতিবছর ভাড়তে ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স পাঠায়
প্রতিবছর ভাড়ত হইতে আমদানি বাবদ বাংলাদেশ খরচ করতো ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
প্রতিবছর মাদক চোরাচালানের মাধ্যমে ভাড়তের আয় ছিল প্রায় ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বাংলাদেশের সাথে পাংগা নিয়ে ভাড়তের মোট অর্থনৈতিক লাভ হইল প্রায় ১২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ভাড়ত তাদের বিশ্বস্ত কৃতদাসি হাসিনাকে হারাইয়া কি পরিমানে ক্ষতির সম্মুখিন তা তাদের চলমান পাগলামি-ছাগলামি-যুদ্ধাংদেহি শত্রুতামিই প্রমাণ করছে।
মোরালঃ বাংলাদেশ ব্যতিত ভাড়ত কখনোই অর্থনৈতিক পরাশক্তি হইতে পারে নাই (১৯৭১ পর্যন্ত), এবং দালাল সরকারের আমল (১৯৮২-১৯৯০, ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত) ব্যতিত তাদের অর্থনৈতিক চাকা ছিল অবিশ্বাস্যরকম উর্ধগতির।
দেশকে ভালবাসুন, ভাড়তকে নয়। ভাড়তের দালালদের লিস্ট করে তাদের দমন ও নির্মূল করা সময়ের দাবী।
Sunday, 12 January 2025
বাড়ি বা ডিভাইসের চেয়ে সন্তান বড়
বাড়ি বা ডিভাইসের চেয়ে সন্তান বড়
জসিম মল্লিক
১
বিদেশে যারা থাকেন বিশেষকরে উত্তর আমেরিকায় তাদের প্রায় সবারই ধ্যানজ্ঞান একটা বাড়ির মালিক হওয়া। মনে হয় তারা বিদেশে আসেন একটা বাড়ি কেনার জন্য। ভাবখানা এমন যেনো তারা কোনোদনি বাড়িতে থাকেন নি। তাদের স্বপ্নে, কল্পনায়, ধ্যানে, জ্ঞানে, বৰ্তমানে, ভবিষ্যতে বাড়ি ছাড়া আর কিছু নাই। রাস্তায় হাঁটতে বাড়ি, গাড়ি ড্রাইভ করতে বাড়ি, বাসে ট্রেনে বাড়ি, শপিং মলে বাড়ি, কফি শপে বাড়ি, ওয়াশরুমে বাড়ি, আড্ডায় বাড়ি, দাওয়াতে বাড়ি। দেখেছি কোথাও দাওয়াতে গেলে যাদের বাড়ি আছে তারা আলাদা বসে এবং বাড়ি নিয়ে সুদীৰ্ঘ আলোচনায় লিপ্ত হয়। যার যত সমস্যা আছে বাড়িতে সেই সব নিয়ে কথা চলতে থাকে। তারা খেতে বসেও একই আলোচনা করে। আলোচনার অন্যতম দিক হচ্ছে বেজমেন্ট ভাড়া নিয়ে, ভাড়াটিয়ারা কেমন, ৱিয়েলটাৱ কেমন সেসব নিয়ে। অনেকে আছে বাড়ি কিনে বিরাট দায় দেনায় পড়ে যায়। মৰ্টগেজ শোধ করতে গিয়ে জীবন দিয়ে দেয়। তখন না পারে কোথাও যেতে না পারে জীবনকে উপভোগ করতে। একবার টরন্টোতে এক বাসায় গিয়েছিলাম পাত্র দেখতে, পাত্রের বাবা মায়ের সাথে আলোচনা করতে। ওমা সেই বাড়িতে যতক্ষন ছিলাম শুধু বাড়ির গল্পই করলেন। এমনকি জোর করে প্রতিটা বাথরুম পৰ্যন্ত দেখতে বাধ্য করলেন। শেষ পৰ্যন্ত পাত্র নিয়ে আর কোনো কথাই হলো না। এমন অনেক গল্প আছে। পরে কখনো বলা যাবে।
২
বাড়ি যে কেনা যাবে না তা না। অবশ্যই যাবে। একশবার যাবে, হাজারবার যাবে। একটা না দশটা বাড়ি কিনলেও কোনো সমস্যা নাই। বাড়ি নিয়ে গল্প হোক, আড্ডা হোক, শয়নে স্বপনে বাড়ি থাক তাতেও সমস্যা নাই। বাড়ির স্বপ্ন কে না দেখে। সবাই দেখে। আমিও দেখি। নিজস্ব একটা আশ্রয় থাকা কত দরকার। বাড়ি একটি ভাল ইনভেস্টমেন্টও বটে। নিরাপদ ইনভেস্টেমেন্ট। ভবিষ্যতের আশ্রয়। এজন্যতো বাংলাদেশ সহ অন্যান্য দেশের টাকা পাচারকারীরা বাড়ি কেনে। কালো টাকা সাদা করার অন্যতম উপায়। এটা দেশেও আছে। পঁচিশ কোটি, তিরিশ কোটি টাকা দামের ফ্লাটও আছে। এগুলো নগদে কেনা। কারো কারো পনোরো বিশটা ফ্লাটও আছে ঢাকায়। বিদেশে টাকা পাচারকারীরা ব্যাংকেৱ দ্বারস্থ হয় না। সোজা ক্যাশ টাকা দিয়ে কিনে ফেলে। পাঁচ, দশ, পনেরো, বিশ, পঁচিশ মিলিয়ন ডলার দামের বাড়ি ডাল ভাত ওদেৱ কাছে। মধ্যবিত্ত যেখানে একটা বাড়ির জন্য এক/দেড় মিলিয়ন জোগাড় করতেই হিমসিম খায় সেখানে তাদের কাছে বাড়ি একটা ছেলে খেলা মাত্র। এজন্যই ট্রুডোর এই পরিণতি। ইমিগ্রেশন আর আবাসন নিয়ে যে সংকট তৈরী হয়েছে সেটার জন্য একজন নায়কের পতন। নারীদের ক্রাশের পতন!
৩
বাড়ি কিনুন, গাড়ি কিনুন, সম্পত্তি বাড়ান, গল্প আড্ডা কৱেন, বেড়ান যত পারেন, অনুষ্ঠান করেন, গান করেন, কবিতা পড়েন, গল্প উপন্যাস লেখেন, সমিতি করেন, সেমিনাৱ কৱেন, রাজনীতি করেন, দলাদলি করেন, গ্রুপিং করেন, পকিনিক করেন, পিঠা পাৰ্টি করেন, ফ্যাশন শো করেন, ব্যবসা বাণিজ্য করেন, সেলফি করেন, যতখুশী ছবি পোষ্ট করেন, লাইভ করেন, রীলস করেন, ইউটিউব করেন। কোথাও কোনো সমস্যা নাই। শুধু একটাই অনুরোধ সন্তানদের সময় দিন। তাদের পাশে থাকেন, তাদের মন বোঝার চেষ্টা করেন, তাদের বন্ধু হন। সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে নিয়ে যান। কেমন বন্ধুৱ সাথে মেশে জানার চেষ্টা করেন। জোর করে কিছু চাপিয়ে দিয়েন না। একটা ঘটনা বলে শেষ করছি। বেশ অনেক বছর আগে আমি যে এলাকায় থাকি সেখানে একজন বাঙালি ফ্যামিলির ছোট্ট মেয়েটিকে একদিন পুলিশ নিয়ে যায়। মেয়েটি সম্ভবত কোনো অভিযোগ করেছিল বাবা মায়ের বিরুদ্ধে। বহুবছর সে তাদের জিম্মায় ছিল। আঠারো বছর হলে মেয়েটি মুক্ত হয়। কিন্তু বাবা মায়ের কাছে আর ফেরেনি। একদিন শুনলাম মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে। এই প্রবনতা বাড়ছে। যার যায় সেই জানে কি হারিয়েছে! অতএব সাধু সাবধান! মনে রাইখেন ডিভাইস আৱ বাড়িৱ চেয়েও আপনাৱ সন্তান বড়!
ঢাকা ১২ জানুয়ারী ২০২৫
canada
Friday, 1 November 2024
ভারতীয় হাইকমিশনের জাতীয় পার্টি
ভারতীয় হাইকমিশনের জাতীয় পার্টি
১ ডিসেম্বর ২০১৩। দুপুরে জাপা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রেস সচিব সুনীল শুভরায় ফোনে জানালেন, এরশাদ সাহেব ডেকেছেন।
বিকেলে বারিধারায় গিয়ে দেখি শুধু আমাকে নয় প্রথম আলোর সেলিম জাহিদ ভাই, ইত্তেফাকের শামসুদ্দিন ভাই, বাংলাদেশ প্রতিদিনের শফিকুল ইসলাম সোহাগকে ডেকেছেন। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে 'অফ দ্য রেকর্ড' আলাপে এরশাদ সাহেব বললেন, বিএনপি জামায়াতের অবরোধে চারদিকে আগুন। নির্বাচনের পরিবেশ নেই।
সব সাংবাদিক সব নেমে আসার পর আমি আবার যাই এরশাদ সাহেবের কাছে। জিজ্ঞাসা করলাম, নির্বাচনে যাবেন? তিনি জোরের সঙ্গে বললেন, নির্বাচনই হবে না। ফিরে লিখেছিলাম, নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবার পথ খুঁজছেন এরশাদ।
দু'দিন পর এরশাদ সাহেব সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দিলেন, নির্বাচনে যাচ্ছেন না। এরপর গায়েব হয়ে গেলেন। প্রয়াত সম্পাদক সারওয়ার ভাই আমাকে অস্যাইনমেন্ট দিলেন যেভাবেই হোক এরশাদ সাহেবকে খুঁজে বের করতে হবে। শীতের সন্ধ্যায় গুলশানে গেলাম জাপার এক জ্যেষ্ঠ নেতারা বাসায়। পুলিশ ঢুকতে দেয় না। সেই নেতাকে দুলাভাই পরিচয় দিয়ে ঢুকে গেলাম।
দোতলায় গিয়ে দেখি নেতা বসে আছেন। আমাকে দেখে চমকে বললেন, 'কেনো এসেছিস?' এর মধ্যেই এলেন, আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ, মাহবুব-উল আলম হানিফ এবং আরও দুই অপরিচিত ভদ্রলোক। পরে জানালাম তাঁদের একজন ডিজি ডিজিএফআই জেনারেল আকবর এবং অপরজন ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তা (যতদূর মনে পড়ে নাম তাঁর সুব্রত কুমার রায়)। তিনি আঙ্গুল উঁচিয়ে পরিস্কার বাংলায় জাতীয় পার্টির নেতাকে বললেন, 'উনাকে (এরশাদ) নাটক বন্ধ করতে বলুন। সামনে আসতে বলুন। নয়ত রাজনীতিতে মাটিতে মিশিয়ে দেবো।' আমি দরজায় দাঁড়িয়ে চুপচাপ শুনছিলাম।
এ সময় জাপার নেতা জিয়াউদ্দিন বাবলু প্রবেশ করলেন। তিনি আন্তরিকতার সঙ্গে জিজ্ঞেস করলেন, 'কেমন আছ?' হুট করে তোফায়েল সাহেবকে বললেন, 'এটা আমার ছোট ভাই রাজীব। ভালো সাংবাদিক।' শুনেই তোফায়েল সাহেবে হুঙ্কার , ' সাংবাদিক হয়ে থাকতে পারো রাজনৈতিক বৈঠকে?' শুনে আমার কলিজায় পানি না। বাঁচালেন সেই জাপা নেতা। বললেন, 'লিডার ও আমার আত্মীয়। এমনি এসেছে।' আমি পড়িমড়ি করে বের হয়ে, মোটরসাইকেলে একটানে চলে এলাম অফিসে।
পরের ঘটনা সবার জানা। ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিংহ ৪ ডিসেম্বর ঢাকায় এলেন। এরশাদ সাহেবও অজ্ঞাত স্থান থেকে ২৭ ঘন্টা পর ফিরলেন। সুজাতা সিংহের সঙ্গে বৈঠক করলেন। জানালেন, নিবার্চনে অংশ নিতে ভারতীয় চাপ রয়েছে।
তারপর রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাপার সবাই নির্বাচনে অংশ নিলেন। শুধুমাত্র এরশাদ, জি এম কাদের, লালমনিরহাটারের মুজিবুল হক, মানিকগঞ্জের সৈয়দ মান্নান, রংপুরের আনিসুল ইসলাম মন্ডল নির্বাচন বর্জন করেন। ১৩ কিংবা ১৪ ডিসেম্বর রাতে সোনারগাঁও হোটেলের পাঁচতলায় বসে কীভাবে টিক দিয়ে এমপি বানানো হয়েছে, আমি এর সাক্ষী। সেখানে ছিলেন জাপার সোলায়মান আলম শেঠ। তিনি সে সময়ে সোনারগাঁও হোটেলের পরিচালক ছিলেন। আরও দুইজন ছিলেন। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস তাঁদের তিনজনের কেউ এমপি হতে পারেননি।
৫ জানুয়ারির এক তরফা নির্বাচনে জাপার জন ২২ বিনা ভোটে এমপি হয়েছিলেন। যাদের অনেকে মেম্বার হবার উপযুক্ত ছিলেন না। পরবর্তীতে এরশাদও উল্টে গিয়ে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন মেনে নেন। দলটির আজকের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু প্রতিমন্ত্রী হন। একেই সঙ্গে বিরোধীদল আবার সরকারে! নজিরবিহীন এ কান্ডের অথচ তারা এখন প্রশ্ন করছেন, আমাদের কী অপরাধ?
২০১৮ সালের নির্বাচন আরেক ইতিহাস। জাপাকে ২৬ আসন ছেড়েছিল আওয়ামী লীগ। বগুড়া-৬ ও ৭, সিলেট-২ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ বাদে বাকি সব আসনে 'জয়ী হয়'। বিএনপির ঘাটিঁ ফেনী-৩ আসনে জাপার জেনারেল মাসুদ ৯৩ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হন! সেবার জাপার ২২ এমপির ১৮ জন ৯০ শতাংশের বেশি ভোট পান! যার অধিকাংশ আগের রাতে পাওয়া।
গত ১১ বছরে জাপা শুধুমাত্র ২০১৮ সালে কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার উপনির্বাচনে এবং ২০২৩ সালে ঠাঁকুরগাওয়ের উপনির্বাচনে মোটামুটি স্বচ্ছ ভোটে জয়ী হয়েছে। বাকি সব জালজালিয়াতি কিংবা আওয়ামী লীগের দয়ায় পাওয়া।
২০১৮ সালের নির্বাচনের পর আসলেই সরকারের নানা কাজের সমালোচনায় মুখর ছিলেন জি এম কাদের। ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে জাপা প্রকাশ্যে বলছিল, অংশগ্রহণমূলক না হলে ভোটে যাবে না। তবে তা মুখের কথা ছিল, মনের নয়।
২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর রাতে ব্রিটিশ হাই কমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠক করেন জি এম কাদের। দলটির এক নেতা হালকা নেশার ঘোরে আমাকে বলে দেন, বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে। তিনিই জানান, জি এম কাদের সাহেব হাইকমিশনারকে নিশ্চিয়তা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে যাবে তাঁর দল। এ ছাড়া পথ নেই।
যাই হোক, আমি নিউজ করে দিলাম। পরেরদিন শুরু হলো, জাপার প্রতিবাদ, আইনী ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি। তবে সমকাল অনড় রইল। ১৬ নভেম্বর সূত্র এবং সবপক্ষের বরাতে সমকালে আবার লিখলাম, যতই হম্মিতম্বি করুক নির্বাচনে যাবে জাপা। আর এসব হম্বিতম্বির কারণ, বিএনপিবিহীন নির্বাচনে বাড়তি কিছু আসন আদায় করা এবং বিরোধীদল হওয়া।
২০২৪ সালে জাতীয় পার্টি ছিল আওয়ামী লীগ প্ল্যান বি। প্রথমে চেষ্টা হয়েছিল, বিএনপিকে ভাঙ্গার। বিএনপি থেকে শ দুইয়েক এমপি হওয়ার মতো নেতাকে ভাগিয়ে তৃণমূল বিএনপি, বিএনএমে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। আওয়ামী লীগের টার্গেট ছিল, এই দুই দলের জোটকে পরবর্তী সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসানো। শমসের মবিন চৌধুরীকে বিরোধীদলীয় নেতা বানানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। ডিজিএফআই, এনএসআই বিএনপি নেতাদের তৃণমূল বা বিএনএমে নিতে চাপ লোভ ভয় সবই দেখিয়েছিল, কাজ হয়নি। শাহজাহান ওমরসহ সাত আটজন নির্বাচনে নানা ব্যানারে। বিএনপির সবচেয়ে বড় সফলতা, দল কোনোদিন ক্ষমতায় আসবে কী না এ অনিশ্চয়তার মধ্যেও নেতারা আনুগত্য এবং আদর্শের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
বিএনপিকে ভাঙা যাবে আশায়, সেই সময়ে জাপা, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, জেপি, তরিকতের মতো দলগুলোকে পাত্তা দেওয়া বন্ধ করেছিল আওয়ামী লীগ। সমকালে সে সময়ে এসব ঘটনার খবর বিস্তারিত লিখেছি।
চেষ্টা হয়েছিল, নিবন্ধনহীন জামায়াতের নেতাদের অন্য দলের ব্যানারে নির্বাচনে নিতে। এ জন্যই ২৮ অক্টোবর বিনাবাধায় সমাবেশ করতে দেওয়া হয়েছিল। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই চেষ্টার মূল ব্যক্তি ছিলেন। কিন্তু বিএনপির মতো জামায়াতকেও ভাঙতে ব্যর্থ হয় আওয়ামী লীগ।
উপায়অন্ত না পেয়ে শেষ পর্যন্ত জাপার দিকে হাত বাড়ায় আওয়ামী লীগ সরকার। তবে এর আগেই জাপা ভারতীয় হাইকমিশনকে দিয়ে চেষ্টা করছিল, আওয়ামী লীগের কাছ থেকে বেশি সংখ্যক আসন আদায়ের। নভেম্বরের ২২ অথবা ২৩ তারিখ রাতে রওশনের বাসায় জি এম কাদেরের বৈঠকে দূতাবাসের কর্মকর্তা রাজেশ অগ্নিহোত্রিও ছিলেন। ছিলেন সেই সময়কার ডিজি এনএসআই।
ভারতের মাধ্যমে জি এম কাদের আওয়ামী লীগকে রাজি করান, রওশন নয়, তাঁর সঙ্গে ডিল করতে হবে। তাঁকে বিরোধীদলীয় নেতা বানাতে হবে। নিশ্চয়তার পাওয়ার পর জাপা প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম দেওয়া শুরু করে।
৩০ নভেম্বর ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। সেদিনই নিশ্চিত হয়ে যায়, রওশন এবং তাঁর অনুসারীরা নির্বাচন থেকে ছিটকে গেছেন। কারণ, তাঁরা কেউ দলীয় মনোনয়ন পাননি। তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও রওশনের খেলা শেষ। সে কারণেই ২২ নভেম্বর থেকে বারবার চেষ্টা করেও শেখ হাসিনার দেখা পাননি রওশন। তাঁকে ২০১৪ সালে ব্যবহার করলেও, ভারতের মাধ্যমে সমঝোতার কারণে ২০২৪ সালে টিস্যুর মতো ছুড়ে ফেলেন হাসিনা। রওশন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর দেখা পান ২ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্রের জমা দেওয়ার সময় শেষ হওয়ার পর।
জি এম কাদের বারবার দাবি করছেন, ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচনে জাপাকে জোর করে নেওয়া হয়েছে। তিনি অংশ না নিলে, ২০১৪ সালের মতো রওশনের নেতৃত্বে জাপাকে নির্বাচনে নেওয়া হতো। এ দাবি মিথ্যা। কারণ, ৩০ নভেম্বরেই কনফার্ম হয়ে গিয়েছিল রওশনরা নির্বাচনে নেই। তা জি এম কাদেরের সঙ্গে সমঝোতায় আওয়ামী লীগ করেছিল।
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল ১৭ ডিসেম্বর। জি এম কাদের চাইলে, সেদিন এক স্বাক্ষরে আর এক চিঠিতে সব প্রার্থী প্রত্যাহার করতে পারতেন। তা করেননি। সুতরাং জোর করে নির্বাচনে নেওয়ার দাবি সত্য নয়।
প্রায় এক সপ্তাহ দফায় দফায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন বাটোয়ার বৈঠকের পর, ১৬ ডিসেম্বর রাতে গুলশানে আনিসুল ইসলাম মাহমুদের বাসায় জাপার জ্যেষ্ঠ নেতাদের বৈঠক হয়। সেখানে আমি এবং ইত্তেফাকের শামসুদ্দিন ভাই ছিলাম। রাত ১০টার দিকে খবর আসে, আওয়ামী লীগ ২৬টির বেশি আসন ছাড়বে না। ঢাকায় আসন দেবে না। অর্থাৎ জি এম কাদেরের স্ত্রী ঢাকায় আসন পাচ্ছেন না। সেই রাতে গুলশান থেকে বারিধারায় ভারতীয় দূতাবাসে গিয়েছিলেন জি এম কাদের।
পরের দিনও জাপার বনানী কার্যালয়ে ছিলাম আমি। জি এম কাদেরের এ দাবি সত্য, সেদিন তাঁকে ঘিরে ছিলেন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। তবে তাদের দেনদরবার হচ্ছিল শেরিফা কাদেরের আসনের জন্য। বিকেল তিনটার দিকে হঠাৎ জাপা কার্যালয়ের সামনে স্লোগান উঠে, 'শেরিফা কাদের, ঢাকা-১৮'। এর দুই তিন মিনিট পর ভেতর থেকে ঘোষণা আসে, জাপা নির্বাচনে থাকছে। বাদ পড়ে যান সিলেটের আতিক। সুতরাং জাপাকে ব্ল্যাকমেইল করা হয়েছে, এ দাবি সত্য নয়।
জাপা ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচনে ২৬ আসনে ছাড় পেয়েও ১১ আসন পেয়েছিল। ১৮ ডিসেম্বর থেকে সমকালে লিখেছিলাম জাপাকে ১২ আসন দেওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলো নিজ যোগ্যতায় জিততে হবে। জাপা তা পারেনি। অবশ্য, পারার কারণও নেই। আসলে জাতীয় পার্টির কোনো আসনেই এককভাবে জেতার ক্ষমতা নেই। সংগঠন ভোট কিছুই নেই। রংপুরেও দল এখন পঞ্চম শক্তি।
ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের সময়ে জি এম কাদেরের সঙ্গে একাধিকবার কথা হয়েছে। তিনি আমাকে স্নেহ করেন সন্দেহ নেই। তেমনি সন্দেহ নেই, অভ্যুত্থানের সফলতার জন্য উদগ্রিব ছিলেন তিনি। কথাবার্তায় আমি নিশ্চিত ছিলাম, কাদের ভাই আওয়ামী লীগের পতন চান। ব্যক্তিগত পর্যায়ের অপমানের কারণে তিনি শেখ হাসিনার উপর তিনি ভীষণ ক্ষুব্ধ ছিলেন।
২০১৪ সাল থেকে জাপা রাজনৈতিক দলের পরিবর্তে এমপি বানানোর মেশিনে পরিণত হয়েছিল। আওয়ামী লীগে প্রতিযোগিতা বেশি, আবার টাকাও লাগে বেশি, তাই সুযোগসন্ধানীরা ভর করত জাপাতে। কম টাকায় জাপার কোটায় এমপি হওয়া ছিল মূল ধান্ধা। এ কায়দায় রওশন আরা, সেলিম ওসমান, জেনারেল মাসুদ, ফজলুসহ আওয়ামী লীগের কয়েকজন এমপি বনে যান। ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগের ময়মনসিংহের এক নেতা নৌকা না পেয়ে জাপার কোটায় ভারতীয় দূতবাসের মাধ্যমের এমপি হওয়ার চেষ্টা করেন। ৩০ কোটি টাকা লাগবে শুনে কেটে পড়েন।
জাপা নেতারা নিশ্চিত ছিলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আজীবন থাকবে। তাই জাপার এমপি হয়েও দালালি করত শেখ হাসিনার। তারা ভাবতেও পারত না, কখনো অভ্যুত্থান হতে পারে। তাই জি এম কাদেরের চেয়ে হাসিনার প্রতি বেশি অনুগত ছিল। সংসদে যেতে হলে, আওয়ামী লীগ ছাড়া পথ নেই, এ সমীকরণ থেকে জাপা যখন যেভাবে পেরেছেন দূতাবাসকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের উচ্ছিষ্টে ভাগ বসিয়েছে।একজন তো গত বছরের নভেম্বরে বলেছিলেন, ভোট সংগঠন না থাকার পরও জাপা টিকে আছে কয়েকজন এমপি থাকায়। সংসদে না থাকলে জাপা মরে যাবে।
জাপাই বাংলাদেশে সবচেয়ে বিশুদ্ধ ভারতপন্থি দল।যা ছিল শেখ হাসিনার অস্বস্তির কারণ । তাই যতভাবে সম্ভব জি এম কাদেরকে অপদস্ত নাজেহাল করেছেন। হয়ত এই একটি মাত্র কারণেই জি এম কাদের মনে প্রাণে শেখ হাসিনার পতন চেয়েছিলেন এটা যেমন সত্য, আবার জাপা আওয়ামী লীগের দোসর ছিল এটাও সত্য। তবে এর জন্য দলটির কার্যালয়ে হামলা গ্রহণযোগ্য নয়।
একনজরে জুলাই বিপ্লব'২০২৪
একনজরে জুলাই বিপ্লব'২০২৪
একনজরে জুলাই বিপ্লব ২০২৪: ঘটনার পালাক্রমে সাজানো। সংগ্রহে রাখার মত একটি জিনিস। কোনো বিষয় বাদ পড়লো? মতামত জানাবেন।
𝟓 𝐉𝐔𝐍𝐄
- মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় প্রদান করে হাইকোর্ট।
𝟔 𝐉𝐔𝐍𝐄
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ-এর ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে ঢাবি ছাত্ররা।
𝟗 𝐉𝐔𝐍𝐄
- কোটাব্যবস্থা পুনর্বহালের প্রতিবাদে আবারও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
- দাবি মানতে সরকারকে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন ঢাবি ছাত্ররা।
- বিক্ষোভ শেষে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদল সুপ্রিম কোর্টে অ্যাটর্নি জেনারেল বরাবর স্মারকলিপি দেয়।
- কোটা বাতিল-সংক্রান্ত হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য ৪ জুলাই দিন নির্ধারণ করা হয়।
𝟏 𝐉𝐔𝐋𝐘
- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ঢাবিসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা বাতিলের দাবিতে ছাত্রসমাবেশ ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
- ৪ জুলাইয়ের মধ্যে দাবির বিষয়ে চূড়ান্ত সুরাহার আহ্বান জানানো হয়।
- আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে তিন দিনের কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
𝟐 𝐉𝐔𝐋𝐘
- ঢাবির ছাত্ররা মিছিল নিয়ে এক ঘন্টা শাহবাগ অবরোধ করে।
- জাবির ছাত্ররা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ২০ মিনিটের জন্য অবরোধ করেন।
𝟑 𝐉𝐔𝐋𝐘
- ঢাবির ছাত্ররা শাহবাগ মোড় দেড় ঘণ্টার মতো অবরোধ করে রাখেন।
- ময়মনসিংহে রেললাইনে ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বাঃ কৃঃ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন।
- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক অবরোধ করেন।
- বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার মোড়ে সড়ক অবরোধ করেন।
𝟒 𝐉𝐔𝐋𝐘
- প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ 'নট টুডে' বলে আদেশ দেন।
- পরের সপ্তাহে এ বিষয়ে শুনানি হতে পারে বলে ওই দিন অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় থেকে জানানো হয়।
- ছাত্ররা ঢাকার শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখে ৫ ঘণ্টা
𝟓 𝐉𝐔𝐋𝐘
- এই দিন শুক্রবারেও চট্টগ্রাম, খুলনা ও গোপালগঞ্জে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনকারী ছাত্ররা।
𝟔 𝐉𝐔𝐋𝐘
- দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আগের দিনের মতোই বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়।
- আন্দোলনকারীরা সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন, ছাত্র ধর্মঘট এবং সারা দেশে সড়ক-মহাসড়ক অবরোধের ডাক দেন। এর নাম দেওয়া হয় ‘বাংলা ব্লকেড’।
𝟕 𝐉𝐔𝐋𝐘
- বাংলা ব্লকেডে স্থবির রাজধানী। অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা।
𝟖 𝐉𝐔𝐋𝐘
- ঢাকার ১১টি স্থানে অবরোধ, ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ, ৩টি স্থানে রেলপথ অবরোধ এবং ৬টি মহাসড়ক অবরোধ।
- সারাদেশের ছাত্রদের নিয়ে 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন' নামে ৫৭ সদস্যের সমন্বয়ক টিম গঠন করা হয়।
𝟗 𝐉𝐔𝐋𝐘
- হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে দুই শিক্ষার্থী আবেদন করে।
- ঢাকার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৪ ঘন্টা অবরোধ কর্মসূচি 'বাংলা ব্লকেড' পালন করা হয়।
- পরদিন সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা 'বাংলা ব্লকেড'-এর ঘোষণা দেওয়া হয়।
𝟏𝟎 𝐉𝐔𝐋𝐘
- কোটার বিষয়ে পক্ষগুলোকে চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগের। শুনানির জন্য ৭ আগস্ট দিন রাখা হয়।
- ছাত্ররা ভুল করেছে মর্মে বক্তব্য রাখেন প্রধান বিচারপতি। তিনি আরো বলেন, 'রাস্তায় স্লোগান দিয়ে রায় পরিবর্তন করা যায় না। এটি সঠিক পদক্ষেপ না'।
𝟏𝟏 𝐉𝐔𝐋𝐘
- পুলিশের বাধার মুখেই দেশের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ পালন করেন আন্দোলনকারীরা।
- ওবায়দুল কাদের বলে, কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা সর্বোচ্চ আদালতের বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শন করছে। এটি অনভিপ্রেত ও সম্পূর্ণ বেআইনি।
- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলে, শিক্ষার্থীরা 'লিমিট ক্রস' করে যাচ্ছে।
𝟏𝟐 𝐉𝐔𝐋𝐘
- শুক্রবার ছুটির দিনেও দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ চলে।
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন।
- রেলপথ অবরোধ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
𝟏𝟑 𝐉𝐔𝐋𝐘
- তথ্য মন্ত্রী আরাফাত বলে, বিচারাধীন বিষয়ে সরকারের এখন কিছু করার নেই।
𝟏𝟒 𝐉𝐔𝐋𝐘
- রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি দিয়ে আন্দোলনকারীরা সংসদে জরুরি অধিবেশন ডেকে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে সরকারকে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন ছাত্ররা।
- শেখ হাসিনা চীন সফর শেষে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে আন্দোলনকারী ছাত্রদের ব্যঙ্গ করে "রাজাকারের নাতি-পুতি" বলে বসেন।
- এর প্রতিবাদে রাত নয়টার দিকে ঢাবির বিভিন্ন হলে শ্লোগান ওঠে,
“তুমি কে? আমি কে?
রাজাকার! রাজাকার!
কে বলেছে? কে বলেছে?
স্বৈরাচার! স্বৈরাচার!”
- এই শ্লোগান এতোই জনপ্রিয় হয় যে, মুহূর্তেই দেশের সকল পাবলিক ভার্সিটিতে ছোঁয়া লাগে। সকল ভার্সিটিতেই এই শ্লোগান চলে রাতভর।
- রাতে চবিতে ছাত্রদের মিছিলে ছাত্রলীগ হামলা চালায়।
𝟏𝟓 𝐉𝐔𝐋𝐘
- ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলে, আন্দোলনকারীদের 'রাজাকার' স্লোগানের জবাব ছাত্রলীগই দেবে।
- ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম বলে, যাঁরা ‘আমি রাজাকার’ স্লোগান দিচ্ছেন, তাঁদের শেষ দেখে ছাড়বো।
- কাদের ও সাদ্দামের মন্তব্যের পর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী হানাদার বাহিনী ঢাবির আন্দোলনকারী ছাত্রদের ওপর সশস্ত্র আক্রমণ করে। ছাত্রদের ওপর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা গুলি করে।
- ভয়াবহ আক্রমণে ২৯৭ জন ছাত্র আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নেন।
- হামলার প্রতিবাদে আন্দোলনকারী ও হামলাকারী ছাত্রলীগ উভয়ে সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়।
𝟏𝟔 𝐉𝐔𝐋𝐘
- পুলিশের গুলিতে রংপুরে আবু সাঈদ, চট্টগ্রামে ওয়াসিম, শান্ত, ফারুক ও ঢাকায় সবুজ আলী ও শাহজাহান শাহদাতবরণ করেন।
- সাদ্দাম আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে বলে, "আমরা দেখে নেব, কত ধানে কত চাল"।
𝟏𝟕 𝐉𝐔𝐋𝐘
- ঢাবিসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিতাড়ন করে 'রাজনীতিমুক্ত' ঘোষণা করে সাধারণ ছাত্ররা।
- পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের মুখে ঢাকা বিশ্বঃ শিক্ষার্থীদের কফিন মিছিল পণ্ড হয়ে যায়
- সারা দেশে ছাত্র বিক্ষোভ, সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ, গায়েবানা জানাজা, কফিন মিছিল এবং দফায় দফায় সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা।
- রাত সাড়ে সাতটায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী, ছয়জন নিহত হওয়ার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন ও ছাত্র আন্দোলনকারীদের পরোক্ষ হুমকী দেন।
- বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হল বন্ধের ঘোষণা ও পুলিশের তৎপরতার মুখে অনেক শিক্ষার্থী সন্ধ্যা নাগাদ ক্যাম্পাস ছেড়ে যান। তবে হল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে রাতেও অনেক ছাত্রছাত্রী হল ও ক্যাম্পাসে অবস্থান করছিলেন।
- মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় সরকার।
𝟏𝟖 𝐉𝐔𝐋𝐘
- ছাত্রদের ঘোষণা অনুসারে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি শুরু হয়।
- সারাদেশের প্রায় সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ মিছিলে হানাদার আওয়ামী পুলিশ বাহিনীর হামলা।
- প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা এদিন আন্দোলনের মূল হাল ধরে।
- মুগ্ধ, ফাইয়াজ সহ মোট ৪৮ জন শাহদাতবরণ করেন।
- নরসিংদীতে নবম শ্রেণির তামিমের মৃত লাশকেও পুলিশ গুলি করে।
- সংঘর্ষ বেশি হয় ঢাকায়।
- সারাদেশে বিজিবি মোতায়েন।
- রাত ৯ টা থেকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট অফ করার মাধ্যমে দেশকে সম্পূর্ণ ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন করা হয়।
𝟏𝟗 𝐉𝐔𝐋𝐘
- শিক্ষার্থীদের 'কমপ্লিট শাটডাউন' বা সর্বাত্মক অবরোধের কর্মসূচি ঘিরে রাজধানী ঢাকায় ব্যাপক সংঘর্ষ, হামলা, ভাঙচুর, গুলি, অগ্নিসংযোগ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
- দেশের বিভিন্ন জেলাতেও ব্যাপক বিক্ষোভ, সংঘর্ষ ও সহিংসতা হয়।
- পুলিশ ও বিজিবির নৃশংস গুলিতে ১১৯ জন শাহদাতবরণ করেন। এদিন আন্দোলন গণআন্দোলনে রূপ নেয়। প্রকৃতপক্ষে এইদিন গণহত্যা চালানো হয় তাই প্রকৃত নিহত ধারণা করা হয় ৬ শতাধিক। এদিন রাস্তায় ছাত্রদের চাইতেও বেশি ছিল নানান শ্রেণি পেশার মানুষ।
- ঢাকার যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, রামপুরা-বাড্ডা, সায়েন্স ল্যাব, মিরপুর ১ ও ১০, মহাখালী, মোহাম্মদপুর, সাভার ছিল আন্দোলনের মূল হটস্পট।
- হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুলিতে ৪ বছরের শিশু, ৬ বছরের রিয়া গোপ সহ বাসার মধ্যেও অনেকে শহীদ হয়।
- 𝐌𝐈𝐒𝐓 -র ছাত্র ইয়ামিনের নিথর দেহ নির্মমভাবে পুলিশের এপিসি থেকে টেনে ফেলে দেওয়া হয়।
- রাতে সারা দেশে কারফিউ জারি, সেনা মোতায়েন।
𝟐𝟎 𝐉𝐔𝐋𝐘
- দেশজুড়ে কারফিউ, সেনা মোতায়েন। সাধারণ ছুটি ঘোষণা।
- রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, ধাওয়া ও গুলি। উল্লেখযোগ্য স্থান হচ্ছে, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, বাড্ডা, মিরপুর ও মোহাম্মদপুর।
- পুলিশ ও বিজিবির গুলিতে মোট ৭১ জন শাহদাতবরণ করেন। ছাদে আত্মরক্ষায় ঝুলে থাকা একজনকে পর পর ৬টি গুলি করে পুলিশ।
- প্রধান সমন্বয়ক নাহিদকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ।
- আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক তিন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আট দফা দাবি পেশ।
- সমন্বয়কদের আরেকটি অংশ ৯ দফা দাবি পেশ করে।
𝟐𝟏 𝐉𝐔𝐋𝐘
- শুনানী এগিয়ে কোটা সংস্কার করে ৭% কোটা রেখে রায় প্রদান করে আদালত।
- এদিনও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন অব্যাহত থাকে।
- হানাদার পুলিশ ও বিজিবির নির্মম গুলিতে ৩১ জন শাহদাতবরণ করেন।
- চার দফা দাবি পূরণের জন্য বৈষম্যবারোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা ৪৮ ঘন্টা সময় বেঁধে দেয়। চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, ইন্টারনেট সংযোগ চালু করা, শিক্ষার্থীদের আসার ব্যবস্থা করে দিয়ে হল খুলে দেওয়া, আন্দোলনের সমন্বয়কদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং কারফিউ তুলে দেওয়া। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তাঁরা।
- নাহিদকে ব্যাপক নির্যাতন করে রাস্তায় ফেলে রেখে যায় পুলিশ।
𝟐𝟐 𝐉𝐔𝐋𝐘
- কোটা সংস্কার করে প্রকাশিত রায়ের প্রজ্ঞাপনের প্রস্তুতি চলে।
- প্রতিদিন মানুষ হত্যার প্রতিবাদে সাধারণ ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে। তবে আন্দোলন স্তিমিত হতে থাকে।
- এদিনও ১০ জন শাহদাতবরণ করেন। এর মধ্যে কয়েকজন ছিলেন আগের আহত হওয়া।
𝟐𝟑 𝐉𝐔𝐋𝐘
- কোটাপ্রথা সংস্কার করে প্রজ্ঞাপন জারি।
- সরকার কয়েক হাজার মামলা দিয়ে গণগ্রেপ্তার শুরু করে।
𝟐𝟒 𝐉𝐔𝐋𝐘
- কোটা আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার ও রিফাত রশীদের খোঁজ পাওয়া যায়।
- নিখোঁজ থাকার পাঁচ দিন পর আসিফ ও বাকেরকে চোখ বাঁধা অবস্থায় ফেলে যাওয়া হয়েছে বলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে দুজনই জানান।
- আর রিফাত আত্মগোপনে থাকেন।
- ব্লক রেইড দিয়ে গণগ্রেপ্তার চলতে থাকে।
𝟐𝟓 𝐉𝐔𝐋𝐘
- আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও অন্য অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই কোটা সংস্কারের যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে, সেটিকে তাঁরা চূড়ান্ত সমাধান মনে করছেন না। যথাযথ সংলাপের পরিবেশ তৈরি করে নীতিনির্ধারণী জায়গায় সব পক্ষের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে প্রজ্ঞাপন দেয়ার শর্ত দেন।
- শেখ হাসিনা মেট্রোরেলের ভাঙ্গা অংশ দেখে চোখের পানি ফেলতে শুরু করে।
𝟐𝟔 𝐉𝐔𝐋𝐘
- এলাকা ভাগ করে চলে 'ব্লক রেইড'। সারা দেশে অভিযান। সারা দেশে অন্তত ৫৫৫টি মামলা। গ্রেপ্তারের সংখ্যা ৬ হাজার ২৬৪। ঢাকা শহরে ছাত্রদের ঘুম হারাম হয়ে যায়।
- সাদা পোষাকে ডিবি হারুনের সন্ত্রাসীরা হাসপাতাল থেকে ছাত্রনেতাদের তুলে নিয়ে যায়।
𝟐𝟕 𝐉𝐔𝐋𝐘
- ১১ দিনে গ্রেপ্তার ৯ হাজার ১২১ জন। আতঙ্কে মানুষ ঘরছাড়া।
- ছাত্রনেতাদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করতে থাকে ডিবি হারুন গং।
𝟐𝟖 𝐉𝐔𝐋𝐘
- মোবাইল ইন্টারনেট ১০ দিন পর সচল।
- কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুমকে হেফাজতে নেয় ডিবি হারুন।
- ডিবি হারুন জোর করে গান পয়েন্টে ছাত্রনেতাদের দিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহারের বিবৃতি আদায় করে।
- আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক মাহিন সরকার, আব্দুল কাদের ও আব্দুল হান্নান মাসুদ অজ্ঞাত স্থান থেকে আগের বিবৃতি প্রত্যাহার ও ৯ দফা দাবী নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।
- রংপুরে আবু সাইদ হত্যা মামলায় ১৬ বছরের কিশোরকে আসামী করে গ্রেপ্তার করা হয়।
- সদ্য এসএসসি পাশ করা কিশোরকে কোমরে দড়ি বেধে রিমান্ডে নেওয়া হয়।
𝟐𝟗 𝐉𝐔𝐋𝐘
- ছাত্র আন্দোলনে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালনের জন্য খুনী হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলের মিটিং-এ জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত হয়।
- একইসাথে ছাত্র আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে খুনসহ অন্যান্য মামলা দিয়ে কঠোর শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গণহত্যাকারী ১৪ দল।
- ডিবি হারুন কর্তৃক জোর করে বিবৃতি আদায়ের ঘটনায় ছাত্ররা আবার বিভিন্ন ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
- চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, জাবি ও রাবিতে পুলিশ ছাত্রদের ওপর হামলা করে।
- অনেক ক্যাম্পাসে ছাত্রদের সাথে শিক্ষকরাও বিক্ষোভ করে।
𝟑𝟎 𝐉𝐔𝐋𝐘
- হত্যার বিচার চেয়ে মুখে লাল কাপড় বেঁধে মিছিল করে ছাত্র ও শিক্ষকরা
- জাতিসংঘ মহাসচিবের বিবৃতি, স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান।
- ফেসবুকের প্রোফাইল লাল রঙের ফ্রেমে রাঙায় সারাদেশের মানুষ। গণহত্যাকারী ও তাদের পক্ষীয়রা কালো ফ্রেম দেয়।
- নাটক ও সিনেমা সংশ্লিষ্ট মানুষরা খুনী হাসিনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শণ করেন।
𝟑𝟏 𝐉𝐔𝐋𝐘
- ছাত্ররা 'রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোস' কর্মসূচি পালন করে।
- ৯ দফার পক্ষে জনমত গঠন করতে থাকে ছাত্ররা।
- সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের তোপের মুখে পড়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাউয়া কাদের।
- ঢাবির শিক্ষকরা সমন্বয়কদের ছাড়াতে ডিবি অফিসে গেলে পুলিশ তাদের হেনস্তা করে। পরিবারের সাথেও দেখা করতে দেওয়া হয়নি।
𝟏 𝐀𝐔𝐆𝐔𝐒𝐓
- ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ভূমিকার জন্য জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।
- ছয় সমন্বয়ককে ছেড়ে দেয় ডিবি।
𝟐 𝐀𝐔𝐆𝐔𝐒𝐓
- ৯ দফা আদায়ের দাবিতে সারাদেশে গণমিছিল করে ছাত্র জনতা।
- রাজধানীসহ বিভিন স্থানে পুলিশের সাথে ছাত্র জনতার সংঘর্ষ হয়।
- পুলিশের গুলিতে ৩ জন শাহদাতবরণ করেন। পরিস্থিতি আবারো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
- ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে ১৫ হাজার মানুষ।
- ৯ দফা না মেনে গণগ্রেপ্তার ও গণহত্যা চালু রাখার প্রতিবাদে শহীদ মিনারে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ করে ছাত্র জনতা।
- কয়েক লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে নয় দফা বাদ দিয়ে ১ দফার (খুনী হাসিনার পদত্যাগ) ঘোষণা দেয় ছাত্রনেতারা।
𝟑 𝐀𝐔𝐆𝐔𝐒𝐓
- সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকারুজ্জামান তার অফিসারদের নিয়ে মিটিং করেন। সেখানে তিনি এই বার্তা পান যে, সেনাবাহিনী আর গুলি করতে প্রস্তুত নয়।
- হাসিনা ছাত্রদের আলোচনা করার প্রস্তাব দেয়। প্রয়োজনে মন্ত্রীদের কয়েকজন পদত্যাগ করার ঘোষণাও দেন। ছাত্ররা সব আলোচনা নাকচ করে দেন।
- আবারো মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় সরকার।
- শহীদ আবু সাইদের খুনী দুইজন পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত ও প্রেপ্তার করে পুলিশ।
- ছাত্রজনতাকে রাস্তায় প্রতিহত করতে কড়া নির্দেশ দেয় খুনী হাসিনা।
𝟒 𝐀𝐔𝐆𝐔𝐒𝐓
- রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ছাত্রজনতার বিক্ষোভ মিছিলে হামলা চালায় আওয়ামী সন্ত্রাসী। এদিন পুলিশের সাথে আওয়ামী সন্ত্রাসীরাও ছাত্রদের গুলি করে। কিন্তু হাজার হাজার ছাত্র ইট পাটকেল দিয়ে সন্ত্রাসী পুলিশ-বিজিবিকে প্রতিরোধ করে।
- কয়েকটি স্থানে সেনাবাহিনী ছাত্রদের পক্ষ নেয়।
- সারাদেশে ১৩০ জন খুন হন। এর মধ্যে ছাত্রলীগ, পুলিশ ও যুবলীগেরও কিছু সদস্য রয়েছে। লাখো ছাত্ররা সন্ত্রাসীদের অনেককে ভালোভাবে উত্তম-মাধ্যম দেয়।
- ৬ আগস্টের স্থলে পরদিনই (৫ আগস্ট) ঢাকামুখী লং-মার্চের কর্মসূচি এগিয়ে আনে ছাত্র জনতা।
- অনেক আওয়ামী সন্ত্রাসীদের অফিস ও বাড়িতে আগুন দেয় ছাত্র-জনতা।
𝟓 𝐀𝐔𝐆𝐔𝐒𝐓
- সকাল থেকেই ব্যাপক মারমুখী অবস্থান নেয় পুলিশ-বিজিবি-আনসার।
- সারা ঢাকা শহরে খন্ড খন্ড যুদ্ধ শুরু হয় ছাত্র জনতার সাথে।
- সকাল সাড়ে দশটার পর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট অফ করা হয়, আবারো দেশ ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
- হাসিনার মূলত প্ল্যান ছিল সেনাবাহিনীকে দিয়ে লংমার্চে ছাত্র জনতার উপর গণহত্যা চালানো।
- সেনাবাহিনী গুলি চালানো হতে অপারগতা প্রকাশ করে এবং হাসিনাকে ৪৫ মিনিট সময় বেধে দেয় পালানোর জন্য।
- হাসিনা দুপুর একটায় বঙ্গভবন এসে পদত্যাগ করে। এরপর সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার যোগে (টেইল নাম্বার ৭২১০) এয়ারপোর্টে এসে বিমানবাহিনীর একটি কার্গো বিমানে ভারতে পালিয়ে যায়।
- কর্মরত পুলিশরা এই খবর না জানায় তারা জনতার সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যায়। অনেক মানুষকে তারা খুন করতে থাকে।
- সেনা প্রধান জেনারেল ওয়াকারুজ্জামান দুইটায় ভাষণ দিবেন বলে ঘোষণা দেন।
- ১:৩০ এর পর পুলিশ ও সেনাবাহিনী শাহবাগের রাস্তা ছেড়ে দেয়।
- ২ টার কিছু আগে মানুষ জেনে যায়, হাসিনা পালিয়ে গেছে।
- সারাদেশের বিশেষভাবে ঢাকার মানুষ সব রাস্তায় নেমে উদযাপন করতে থাকে।
- গলিতে গলিতে মিস্টি বিতরণ ও ঈদ মোবারক বলে কোলাকুলি করতে থাকে মানুষ।
- রাস্তায় রাস্তায় মানুষ সিজদা দিয়ে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করতে থাকে।
- বিকাল চারটায় সেনাপ্রধান জেনাঃ ওয়াকারুজ্জামান আনুষ্ঠানিকভাবে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট ফর্মের ঘোষণা দেন।
Collected from Masud Kaium brother
Thursday, 31 October 2024
আপোষ করলে খালেদা জিয়া আজ পর্যন্ত যা যা হারিয়েছেন, কিছুই হারাতে হতো না।
আপোষ করলে খালেদা জিয়া আজ পর্যন্ত যা যা হারিয়েছেন, কিছুই হারাতে হতো না।
কিচ্ছু না।
সেই এরশাদের সময় থেকে শুরু। মাত্র ২০ কোটি টাকার কাছে বিক্রি হয়ে হাসিনা পাতানো ইলেকশনে গেল।
খালেদা গেলেন না।
বাংলাদেশের মানুষ অবাক হয়ে দেখলো, সাধারণ একজন গৃহবধূ কোন ফাঁকে যেন হয়ে উঠেছেন অসাধারণ এক রাজনীতিবিদ। যাকে ভাঙা যায়, মচকানো যায় না।
১/১১ তে হাসিনা দেশ ছাড়লেন।
খালেদা ছাড়েননি। তারেক রহমানের উপর অকথ্য নির্যাতন চললো। মা হিসেবে খালেদা যদি ১/১১ র সরকারের সাথে আপোষ করেও বসতেন, আমি একটুও দোষ দিতাম না।
হাজার হলেও তিনি একজন মা।
নিজের সন্তানকে বাঁচানোর অধিকার তাঁর আছে।
খালেদা সেটাও করলেন না। তারেককে ছাপিয়ে তিনি হয়ে উঠলেন বাংলাদেশের মা। জেদ ধরে বসে থাকলেন, মাইনাস টু ব্যর্থ হয়ে গেল।
এরশাদের মতো ১/১১ র সকল কুশীলব আবারও জানলো এই মহিলার জেদ আছে।
প্রণব মুখার্জির সাথে বৈঠকটা ছিলো ভারতের সাথে খালেদার শেষ রাজনৈতিক সমঝোতার সুযোগ।
সম্ভবত জামায়াতে ইসলামির হরতাল ছিলো ঐ দিন। যেতেই পারতেন। গেলেন না। খালেদা নিজেও জানতেন, প্রণবের বৈঠক প্রত্যাখ্যান করার ফলাফল কী হতে পারে।
তাও করলেন। সাফ জানিয়ে দিলেন, হরতালের প্রোগ্রাম আছে। তিনি বের হবেন না।
শাহবাগের বিরোধিতা খালেদা শুরু থেকেই করেছেন।শাপলার পক্ষে ছিলেন। ৪ মেতে খালেদা চেয়েছিলেন অবস্থান কর্মসূচ দেবেন।
ঢাকার কয়েকজন প্রভাবশালী বিএনপি নেতার কারণে খালেদা ঐদিন কর্মসূচি থেকে সরে আসেন।
অথচ সরকারের পতন ৫ মেতেই হতে পারতো।
২০১৪ ইলেকশনে বিএনপি গেলে খালেদাকে জেলে যেতে হতো না।
হাসিনা নার্ভাস ছিলেন। সালমান এফ রহমানসহ বহু নেতা বিদেশ চলে গেছিলেন। হাসিনা ইভেন খালেদাকে ৫ টা মন্ত্রনালয়ের ভাগ দিতেও চেয়েছিলেন।
অফারটা নিলে বিএনপি সরকারে না আসলেও অন্তত ১০০ টা সিট নিয়ে বিরোধী দলে বসতে পারতো। খালেদার জেলে যেতে হতো না।
বাট মানুষের ভোটে যে নেত্রী আজ পর্যন্ত একবারও হারেননি, তিনি সাজানো ভোটে কেন যাবেন? গেলেন না। বললেন, কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট দাও।
বালুর ট্রাক দিয়ে বন্দি করা হলো খালেদা জিয়াকে।
সেই বালুর ট্রাক সরাতে কেউ আসলো না।
বোঝা গেল, খালেদার এই সিদ্ধান্তে বিএনপির সিনিয়র নেতারা নাখোল ছিলেন। তারা সিট চেয়েছিলেন। খালেদা জিয়া চাননি।
মার্চ ফর ডেমোক্রেসি ব্যর্থ হলো।
নেতাদের কিছুই হলো না। শুধু জনি ১৯ টা গুলি খেয়ে মরে গেলেন, খালেদা জিয়া শুধু জেলে চলে গেলেন।
হাসিনার নোংরামি সমন্ধে খালেদার অজানা ছিলো না। নিজের দলকেও কি খালেদা কম জানতেন? যে দলের বুড়ো নেতারা তাঁর বাসার সামনের বালুর ট্রাক সরাতে পারে নাই, সেই নেতারা তাকে যে জেল থেকেও বের করবে না, খালেদা জিয়া ভালো করেই জানতেন। জানতেন, জেলে তাকে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হবে না, বরং বিষ দিয়ে মেরেও ফেলা হতে পারে।
সবকিছু জেনে বুঝেই খালেদা জেলে গিয়েছিলেন।
কেন?
যাতে নিজের যা হয় হোক, দলের রাজনীতিটা তবুও বাচুক। খালেদা চাইলেই লন্ডন চলে যেতে পারতেন,। তখন নিজে বাঁচতেন, তবে দলের রাজনীতি শেষ হয়ে যাইতো।
হাসিনা বলতো, দেখেছো? বিচারের ভয়ে পালিয়েছে।
খালেদা নিজেকে কুরবানি করে দলটাকে বাঁচানোর ডিসিশন নিলেন।
আওয়ামীলীগ নিয়ে মির্জা ফখরুল, রুমিন ফারহানা বা আমির খসরুরা যখন আওয়ামীলীগের ভাষায় কথা বলে, আমার অবাক লাগে না।
এরাই তো তারা, যারা খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে সরকারের কাছে প্লট চেয়েছে। এরা তো তারা, যাদের পরিবার ছিলো, ব্যবসা ছিলো, মাঝেমধ্যে জেল ছাড়া যাদের আর কোন ক্ষতি হাসিনা করেনি।
ক্ষতি হয়েছিলো খালেদা জিয়ার। স্বামী হারিয়েছেন কম বয়সে, শেষ পর্যন্ত ছেলে নাতি কাউকেই তো পেলেন না। আর ক্ষতি হয়েছে নুর বা জনির মতো তৃণমূলের নেতা কর্মীদের।
আজ যারা আওয়ামীলীগের পক্ষে কথা বলতেছে, ফখরুল বা রুমিন, এরা কৃতজ্ঞতা বশেই বলছে। আওয়ামীলীগ তাদের কম তো দেয় নাই।
আমার দুঃখ একটাই।
সম্ভবত একটুও দেরিই হয়ে গেল।
খালেদা জিয়া যদি একটু সুস্থ থাকতেন। একটাবার যদি রাজনীতি করার একটুখানি সুযোগ এই মানুষটা এখন পেতেন, সংবিধান, রাষ্ট্রপতি বা আওয়ামীলীগ নিয়ে বিএনপির এই মাতলামি আর দেখতে হতো না।
বরং খালেদা জিয়া একেবারে রাইট ডিসিশনটাই নিতেন।
আমরা শুধু জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক দূরদুর্শিতার কথাই বলি। অথচ খালেদা জিয়াও কি দূরদর্শী ছিলেন? আজ থেকে দশ বছর আগেই এই মহিলা বলেছিলেন, আওয়ামীলীগ পচে গেছে। এই আওয়ামীলীগ একদিন দুর্গন্ধ ছড়াবে।
এরচে একুরেট কোন প্রোফেসি গত ১০ বছরে কোন রাজনীতিবিদ করতে পেরেছিলেন?
আওয়ামীলীগ আর বিএনপির মধ্যে পার্থক্য করতে গিয়ে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ওদের হাতে আছে গোলামির জিঞ্জির, আমাদের আছে স্বাধীনতার পতাকা।
সারাটাজীবন লড়াই করে খালেদা জিয়া বুঝিয়ে দিয়ে গেলেন, ঢাকা আর দিল্লির প্রশ্নে হাসিনা যতবার দিল্লির কাছে দাসত্বের দস্তখত দিয়েছেন, খালেদা তত শক্ত করে ঢাকাকে আকড়ে ধরেছেন।
ভারতও জানতো, এই মহিলাকে জেলে ঢোকানো যায়, কিন্তু একে কেনা যায় না।
শেষদিকে খালেদা জিয়ার কিছুই ছিলো না। পদ ছিলো না, দলের অতো সাংগঠনিক শক্তি ছিলো না, সন্তানরা কাছে ছিলো না, সকল ব্যাংক একাউন্ট ফ্রিজ করা ছিলো, এমনকি ঢাকার বাড়িটাও ছিলো না।
খালি ছিলো ঐ পতাকাটা।
এমনকি চরম শত্রুও বলতে পারবে না, খালেদা জিয়া একবারের জন্যও কারো কাছে দেশ বিক্রি করেছেন।
আজকালকার প্রজন্ম যখন বলে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদে কোন মহিলাকে চাই না। তখন কষ্ট হয়।ওদের দোষ দিই না। ওরা মহিলা প্রধানমন্ত্রী বলতে চেনে হাসিনাকে। দেশ বেঁচে খাওয়া ছাড়া যার আর কোন কাজ ছিলো না। মুখের ভাষা ছিলো তৃতীয় শ্রেণীর। নোংরা কথার মানুষ ছিলেন।
এই প্রজন্ম একটাবারের জন্য যদি খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে পেত!! বুঝতো, সমস্যাটা ছেলেতে বা মেয়েতে না। সমস্যাটা শিরদাড়ায়। বহু পুরুষ নেতা, এরশাদের মতো তথাকথিত শক্তাশালী জেনারেল যখন দিল্লির তাবেদারি করেছে, খালেদা জিয়া তখন দিল্লির বিরুদ্ধে চোখে চোখ রেখে কথা বলেছেন।
অল্প কিছুদিনের মধ্যেই খালেদা জিয়াকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে বাইরে নেওয়া হচ্ছে চিকিৎসার জন্য।
মহান আল্লাহ তাআলা তাকে সুস্থতা দান করে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিক।
রাজনীতি থেকে খালেদার আর পাওয়ার কিছু নাই। বাট খালেদা জিয়ার থেকে এখনও আমাদের পাওয়ার অনেক কিছুই আছে।
এখনও যদি চোখ বন্ধ করে কারো উপর ভরসা করা যায়, বিশ্বাস করা যায়, স্বাধীনতার পতাকার জিম্মাদারি দেওয়া যায়, সেটা একমাত্র খালেদা জিয়াকেই করা যায়।
আর কাউকে না।
Subscribe to:
Posts (Atom)